আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-১০
                         -লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


(পূর্ব-প্রকাশিতের পর)


সৎসঙ্গ রসৈষণা মন্দির
যখনই কেউ জটিল রোগগ্রস্ত হয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে উপস্থিত হতো শ্রীশ্রীঠাকুর সেগুলোর ফরমূলা দিতেন। এভাবে তিনি বহু জটিল রোগের ফরমূলা দিয়ে গেছেন। আর তাই নিয়ে গড়ে ওঠে সৎসঙ্গ রসৈষণা মন্দির। অত্যাধুনিক প্রক্রিয়া দ্বারা ভেষজ ঔষধাদি প্রস্তুত ও ঔষধের গুণমান বজায় রাখার জন্য এবং নিত্যনতুন ঔষধের অনুসন্ধানের জন্য অত্যাধুনিক সাজসজ্জাযুক্ত গবেষণাগারও নির্ম্মাণ করা হয়েছে। এখানে মধুমেয় (ডায়াবেটিস), ব্লাড কোলেস্টেরল ইত্যাদি ব্যাধিগুলির থেকে মুক্তির জন্যে ফলপ্রসু গবেষণা সম্পাদিত হয়েছে। শ্রীশ্রীবড়দা (শ্রীশ্রীঅমরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী) বিভিন্ন রোগের নিদানহেতু বহু ফর্মূলা দিয়েছেনÑ সেগুলির সাহায্যেও ঔষধ বানানো হয়। বর্তমানে আশ্রমে আগত নিত্য অসংখ্য যাত্রীদের মধ্যে রোগক্লিষ্ট মানুষের কষ্ট নিবারণের জন্যে শ্রীশ্রীদাদাও (শ্রীশ্রীঅশোক চক্রবর্তী) স্বয়ং বহুবিধ জটিল রোগের অব্যর্থ জীবনদায়ী ঔষধ উদ্ভাবন করেছেন।


সৎসঙ্গ ভেষজ উদ্যান[
বহু দুর্লভ গাছ-গাছড়া এক বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে লাগিয়েছিলেন শ্রীশ্রীবড়দা। কঠিন, পাথুরে এবং শুষ্ক মরুপ্রায় এই ভূমিতে তৃণখন্ডের জন্মনোই এক আশ্চর্য ব্যাপার। সেই জমিতে তিনি বহু দূর-দূরান্ত থেকে এনে লাগিয়েছেন মহামূল্যবান বনৌষধি এবং আবিষ্কারও করেছেন বহু বনৌষধি। এছাড়াও এখানে রয়েছে বহু ফলের গাছ এবং সারা বছর ধরেই হয় বিভিন্ন শাক-সবজির চাষ। “উদ্যানটি দেখে এর পূর্ব অবস্থা কল্পনা করাও দুষ্কর হবে” এমনটাই বলেন প্রবীণ আশ্রমিকগণ।


সৎসঙ্গ দ্যূতদীপ্তি হাসপাতাল
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরির কথা বলেছিলেন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ৪৫টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বেশি বেডের ব্যবস্থা করার মতো সামগ্রীও মজুদ আছে। বিশেষ প্রয়োজনে দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসকগণ এসে তাদের সেবা দান করে থাকেন। এই হাসপাতাল শ্রীশ্রীবড়দা ও শ্রীশ্রীদাদার অনুপ্রেরণা ও নির্দেশনায় এবং শ্রীশ্রীবড়দার মধ্যম পুত্র ডাঃ অলোক কুমার চক্রবর্তী (মেজদা), এম.বি.বি.এস-এর পরিচালনায় আজ এক বিশিষ্ট হাসপাতাল রূপে খ্যাতি লাভ করেছে। হাসপাতালের উন্নতির জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এখানে দেওঘরের ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চিকিৎসকগণ বৎসরে ২বার সমবেত হয়ে দুইটি সেমিনারের আয়োজন করে থাকেন। হাসপাতালের একটি নিজস্ব লাইব্রেরিও রয়েছে। প্রতি বৎসর একটি মেডিকেল বুলেটিন প্রকাশিত হয়। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট চিকিৎসাবিদদের আধুনিক গবেষণা বিষয়ক প্রবন্ধ ও রচনায় বুলেটিনটি সমৃদ্ধ থাকে। বর্তমানে সৎসঙ্গ দ্যূতদীপ্তি হাসপাতালে উল্লিখিত বিভাগগুলি খোলা হয়েছে এবং সেখানে নিয়মিত কাজ চলছেÑ(১)আউটডোর (২)চ্যারিটেবল ডিস্পেনসারি (৩)একস্-রে বিভাগ (৪)চক্ষু,কর্ণ ও নাসিকা বিভাগ (৫)দন্ত চিকিৎসা বিভাগ (৬)প্যাথোলজি বিভাগ (৭)আকস্মিক চিকিৎসা বিভাগ (৮ হোমিওপ্যাথি বিভাগ।


সৎসঙ্গ পাবলিশিং হাউজ
শ্রীশ্রীঠাকুরের বিশ^সমস্যা সমাধানী বাণীগুলি প্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে সৎসঙ্গ পাবলিশিং হাউজ থেকে। বাংলা ও ইংরেজিতে প্রদত্ত মূল বাণীগ্রন্থ ছাড়াও শ্রীশ্রীঠকুরের সাথে কথোপকথন ও প্রশ্নেত্তরমূলক মৌলিক গ্রন্থও বাংলা ও বিভিন্ন ভাষায় মুদ্রিত হয়েছে। মাসিক বিভিন্ন পত্রিকাও এই পাবলিশিং হাউজ থেকেই প্রকাশিত হয়। ইংরেজি, হিন্দি, ওড়িয়া, অসমীয়া, মারাঠী, নেপালী, তামিল, তেলেগু, সাঁওতালী ইত্যাদি বিভিন্ন ভাষাতেও মূল গ্রন্থ থেকে অনুবাদ করা হচ্ছে সৎসঙ্গ পাবলিশিং হাউজের পক্ষ থেকে। প্রধান আচার্য্যদেব শ্রীশ্রীদাদা স্বয়ং বেশ কয়েকটি গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন এবং তাঁর নির্দেশে আরও কয়েকজন ব্যক্তি এই কাজে ব্যাপৃত রয়েছেন।


অমরদ্যুতি বিদিমন্দির(সৎসঙ্গ লাইব্রেরি)
এই পাঠাগারে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্ত্যের বহু দুর্লভ প্রাচীন ও আধুনিক পুস্তকের বিপুল সম্ভার আছে। এখানে পাঠকদের একান্ত অধ্যয়নের জন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে। এর সাথে একটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে আশ্রমিক, ছাত্রছাত্রী ও সাধারণের মনোরঞ্জনের জন্য সম্বৎসর বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।


বেদভবন
শ্রীশ্রীঠাকুরের অত্যন্ত আগ্রহ ছিল বেদ, উপনিষদ্, শাস্ত্রীয় গ্রন্থাদির প্রতি। এসবের চর্চার জন্য বেদভবন নির্মাণের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল ইচ্ছা। শ্রীশ্রীঠাকুরের এই ইচ্ছাকে সাকার রূপ দিয়েছিলেন শ্রীশ্রীবড়দা ‘বেদভবন’ নির্মাণ করে। এখানে উপযুক্ত আচার্য্যরে তত্ত্বাবধানে চারিবেদের পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা আছে। এছাড়া, বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানাদির সময় স্বস্ত্যয়ন-হোমযজ্ঞাদিও এখানে অনুষ্ঠিত হয়।
সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়
এখানে প্রচলিত পাঠ্যক্রম অনুসারে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি চরিত্র গঠন, স্বনির্ভরতা ও ব্যবহারিক শিক্ষাদিও সুযোগ্য শিক্ষকদের দ্বারা দেয়া হয়। কুটির শিল্প, টাইপিং, কম্পিউটার ও অনান্য ব্যবহারিক শিক্ষার সঙ্গে-সঙ্গে শারীরিক গঠন ও আত্মরক্ষা হেতু ড্রিল ও মার্শাল আর্ট শেখানোরও ব্যবস্থা আছে। সুষ্ঠু ও একান্ত বিদ্যাভ্যাসের জন্য বিদ্যালয়ে বিরাট ছাত্রবাসের ব্যবস্থা রয়েছে।


সৎসঙ্গ অমরদ্যুতি
শ্রীশ্রীঠাকুর ইপ্সিত শান্ডিল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক পদক্ষেপরূপে ‘সৎসঙ্গ অমরদ্যুতি মহাবিদ্যালয়’ বর্তমানে দুমকার সিধু-কানুহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক স্তরে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান এবং স্নাতকোত্তর স্তরে বাণিজ্য শাখায় পঠন-পাঠনের যথেষ্ট মর্যাদা লাভ করেছে। আইন ও অনান্য শিক্ষাক্রমও চালু করার চেষ্টা চলছে।


সৎসঙ্গ বীণাপাণি বিদ্যামন্দির
এখানে বালিকাদের আদর্শানুগ উপযুক্ত শিক্ষা ও শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা আছে।


কলা বিভাগ
আশ্রমস্থ ‘কৃষ্টিবান্ধব নাট্য-শিল্পম্’-এর প্রযোজনায় যাত্রা-থিয়েটার ও অনান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে, যার ফলে মনোরঞ্জনের সাথে-সাথে লোকশিক্ষারও সুযোগ পাওয়া যায়।‘সঙ্গীত-বিভাগ’-এ উচ্চাঙ্গ ও লঘু সঙ্গীত, ভজন-কীর্তানাদির শিক্ষা ও চর্চা হয়ে থাকে। এছাড়া, চিত্রকলা, ভাস্কর্য ও অনান্য শিল্পকলা চর্চাও আশ্রমে হয়ে থাকে। নিয়মিতরূপে চিত্র ও বিভিন্ন শিল্পকলার প্রদর্শনীর আয়োজনও আশ্রমে হয়ে থাকে।


অতিথি ভবন
আশ্রম-আগত ভক্তশিষ্যদের নিশ্চিন্তবাসের জন্য বেশ কয়েকটি অতিথিশালা নির্মাণ করা হয়েছে। স্থান-সংকুলানের জন্যে কয়েকটি বহুতল ভবন ও বেশ কয়েকটি স্থানে হলঘরের (ডর্মিটরী) সংখ্যাবৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান অতিথি-আবাস নির্মাণ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা সক্রিয়ভাবে কর্মরত থাকে।


মেমোরিয়া
এখানে শ্রীশ্রীঠাকুর ও শ্রীশ্রীবড়মার ব্যবহৃত জিনিসপত্রাদি অবিকৃত অবস্থায় ও উপযুক্ত তত্ত্বাবধানে রক্ষিত। শ্রীশ্রীঠাকুর-সন্দর্শনে আগত দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট মানুষের উপস্থিতি, আলোচনা, বিবৃতি ও সাক্ষাৎকারের দুর্লভ মুহূর্ত্তগুলি সাল-তারিখ সন্নিবেশে ছবির মধ্যে বাঁধানো রয়েছে। এছাড়া ‘ষোড়শী- ভবন’ (শ্রীশ্রীবড়দার বাসগৃহ)-এর একটি পৃথক ভবনে ‘স্মারণ-সৌধ’ নামে শ্রীশ্রীবড়দার ব্যবহৃত জিনিসপত্রাদি পরিচ্ছন্ন ও উপযুক্ত তত্ত্বাবধানে রক্ষিত। পরিবার-পরিজনের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিশিষ্ট মানুষদের সাথে সাক্ষাৎকার ও দেশের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের দুর্লভ মুহূর্ত্তগুলির আলোকচিত্র এখানে প্রদর্শনের জন্য সুসন্নিবেশিত করা হয়েছে।


যতি-আশ্রম
শ্রীশ্রীঠাকুর চেয়েছিলেন এমন কতকগুলো মানুষ, যাদের মধ্যে ধর্ম ও কৃষ্টি রূপ-পরিগ্রহ করবে। যাদের চরিত্র ও চলন অমৃত জালুস বিকিরণ করে মানুষকে শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভাবে ইষ্টে কেন্দ্রায়িত করে তুলবে। এই উদ্দেশ্যেই শ্রীশ্রীঠাকুর ২৬শে আশি^ন, ১৩৩৫, মঙ্গলবার (ইং ১২-১০-১৯৪৮) শুভ বিজয়ার দিন থেকে কতিপয় প্রবীণ কর্মীকে নিয়ে ‘যতি-আশ্রম’-এর সূত্রপাত ঘটান। ঠাকুর-বাংলার মধ্যেই তাদের থাকার পৃথক ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে বসে যতিদের নিয়ে বহুদিন বহু আলোচনা ও বাণী প্রদানের মাধ্যমে চলার পথের অমৃত-সঙ্কেতগুলি লিপিবদ্ধ করে দেন। যতি-জীবনে পালনীয় সে-সব বাণী সঙ্কলিত করে পরে ‘যতি-অভিধর্ম্ম’ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে যতি-আশ্রমে শ্রীশ্রীঠাকুরের ব্যবহৃত শয্যাসহ অনান্য পবিত্র নিদর্শনগুলি সযত্নে রক্ষিত আছে। সংলগ্ন দীক্ষাগৃহগুলি যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সাথে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আশ্রমে আগত দীক্ষা প্রার্থী ব্যক্তিগণকে ঐ গৃহগুলিতে বসেই দীক্ষাদান করা হয়।


সৎসঙ্গ প্রেস
সৎসঙ্গের নিজস্ব প্রেস এটি। শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী-সংকলন শত শত গ্রন্থরূপে মুদ্রিত হয়েছে এখানে। এই প্রেসের তত্ত্বাবধানে শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবধারা-সম্বলিত নি¤œলিখিত মাসিক পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হয়Ñআলোচনা (বাংলা), সাত্বতী (হিন্দি), খরমধঃব (ইংরেজি), আগমবাণী (অসমীয়া), ঊর্জ্জনা (ওড়িয়া), আরশাল (সাঁওতালি) ও স্বস্তিসেবক (বাংলা)।


অনেক সময় দেশ-বিদেশের ভক্তবৃন্দ শ্রীশ্রীঠাকুরকে বিরল প্রজাতির পশুপক্ষী উপহার দিলে তিনি খুশির সঙ্গে সেগুলো গ্রহণ করে সযতেœ রক্ষাবেক্ষণের নির্দেশ দিতেন। ফলে আশ্রমে স্বাভাবিকভাবে গড়ে উঠে এক নাতিবৃহৎ চিড়িয়াখানা। শ্রীশ্রীঠাকুর প্রায়ই দেখতে যেতেন সেসব পশুপক্ষীদের। পশুপক্ষী সম্বন্ধে শ্রীশ্রীবড়দারও ছিল বিশেষ আগ্রহ ও অভিজ্ঞতা। তাঁরই অভীপ্সায় এক বিশাল খাঁচা নির্মিত হয়, যেখানে একই সাথে বিভিন্ন প্রজাতির পক্ষীদের রাখা হয়। মূলতঃ তাঁরই তত্ত্বাবধানে পশুপক্ষীগুলো পালিত ও রক্ষিত হতে থাকে এবং এক সময় ভারত সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত চিড়িয়াখানার মর্যাদা লাভ করে। নাম হয় ‘পশু-পালিনী’ (সৎসঙ্গ জু ফর চিল্ড্রেন এডুকেশান)। বর্তমানে পশুপক্ষী সংক্রান্ত আইনী জটিলতার দরুণ চিড়িয়াখানাটির সঙ্কোচন ঘটেছে। তথাপি এখনও বহু বিরল-প্রজাতির পক্ষীর সমবায়ে সেটি দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জন করে থাকে। আশ্রমের মধ্যে একটি বৃহৎ গোশালাও রয়েছে। সেখানে উপযুক্ত তত্ত্বাবধানে গো-পালন এবং আশ্রমিকদের দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়।


প্রাত্যহিক সাংসারিক কাজ শেষ করে আশ্রমিক মায়েরা এখানে একত্রিত হয়ে ইষ্টদেবতার গুণর্কীতন করে থাকে। এখানে মায়েরা প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবারে মাতৃ-সম্মেলনের আয়োজন করেন। ‘উপাসনা’-র উদ্বোধনের দিনটির স্মরণে বার্ষিক অনুষ্ঠান ছাড়াও বছরের বিশেষ কয়েকটি দিনে মায়েরা ‘সৎসঙ্গ’, ভজন-কীর্তনাদির আয়োজন করে থাকেন। তাছাড়া, এখানে আশ্রমিক বালিকা ও কিশোরীদের নৃত্য-গীতাদি অনুশীলন করার সুযোগ দেয়া হয়।
শ্রী শ্রী ঠাকুর বলেছেন- ধর্ম কখনও বহু হয় না-ধর্ম এক। সপারিপার্শ্বিক জীবন-বৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলাই ধর্মের প্রধান লক্ষ্য। ধর্ম মূর্ত্ত হয় আদর্শে এবং শ্রীশ্রীঠাকুর হলেন ধর্মের মূর্ত্ত আদর্শ। তিনি কোন সম্প্রদায়-বিশেষের নন, বরং সব সম্প্রদায়ই তার। শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-“একজন মানুষের বিনিময়ে আমি একটি সাম্রাজ্য ত্যাগ করতে পারি, কিন্তু একজন মানুষকে ছাড়তে পারি না।” তাই তিনি বললেন- মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর।


আসুন, আমরা সকলেই শ্রী শ্রী ঠাকুরের নির্দেশিত চলার পথে অগ্রসর হই আর তাঁর আদর্শকে অনুসরণ করে জীবনকে ধন্য করে তুলি। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!


আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-১০
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


নাম নিয়ে ভাসালাম তরী জীবন নদীর স্রোতে,
শপথ নিলাম চলবো আমি তোমার চলা পথে।
ওগো ঠাকুর…..


তোমার চলা তোমার বলা তোমার জীবনধারা,
তুমি আমার পরমগুরু মোর জীবনে ধ্রুবতারা।
ওগো ঠাকুর…..


জীবন মানে মরণ জেনো এ পৃথিবীর বুকে,
মৃত্যুকে অবলুপ্ত করো কাটবে জীবন সুখে।
ওগো ঠাকুর…..


মানুষ আপন টাকা পর, এই ভবে দুনিয়ায়,
তোমার নামে দীক্ষা নিলে শান্তি পাওয়া যায়।
ওগো ঠাকুর…..


হে প্রিয়পরম যুগাবতার তোমাকে প্রণাম করি,
চরণ পূজা করবো তোমার, সারা জীবন ধরি।
ওগো ঠাকুর…..


জীবন পথে চলতে গিয়ে পেলাম প্রভু তোমায়,
ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর বন্দনা সবে গায়।
ওগো ঠাকুর…..


তুমি আমার প্রাণের ঠাকুর তুমি আমার প্রাণ,
সকাল সাঁঝে তাই তো প্রভু, জপি তব নাম।
ওগো ঠাকুর…..