আজ বিশ্ব মাতৃ দিবস। তারিখ যাই হোক সারা বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালিত হয়। সে হিসাবে আজ মা দিবস। সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়।


মাকে যথাযথ সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়াই এই দিবসটির মূল উদ্দেশ্য। যদিও মায়েদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিন হয় নাকি? বা বিশেষ একটা দিনই শুধু মায়েদের জন্য? এ নিয়ে বিশেষ তর্কবিতর্ক রয়েছে।


বিশেষ করে বাঙালিদের কাছে প্রতিটি দিনই মা দিবস।
তবে বিশ্ব মা দিবসে মায়ের জন্য নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে, যা ব্যস্ততার জন্য অন্য কোনো দিনে হয়ে ওঠে না।


আজ সকাল থেকেই অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী যার যার মাকে ভালোবাসা জানাচ্ছেন। মায়ের ছবি দিয়ে নিজের ভালোবাসা ও অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন।


কিন্তু দেশের অনেকেই হয়তো জানেন না যে, কীভাবে এলো এই বিশ্ব মা দিবস! জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের আনা জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জার্ভিসের উদ্যোগে প্রথম মা দিবস পালিত হয়।


আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন অনাথদের সেবায় জীবন ব্যয় করেছেন। ১৯০৫ সালে মারা যান মেরি।


অনাথদের জন্য মেরির এই নিঃস্বার্থ উৎসর্গিত জীবনের কথা অজানাই থেকে যায়। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। তাই নতুন এক উদ্যোগ নেন তিনি।


অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন।


তার সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় মা দিবস। ১৯১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা করা হয়।


১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।


তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে আসছিলেন তিনি।


তিনি বলেছিলেন, ‘মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর মানে নিজ হাতে তার জন্য দুই কলম লেখার সময় না হওয়া। চকলেট উপহার দেয়ার অর্থ হলো- তা নিজেই খেয়ে ফেলা।’ এসব না করে এই দিনটিতে মায়ের জন্য এমন কিছু করতে অনুরোধ করুন যাতে মা যেন সন্তুষ্ট হন। কিছু না পারলে অন্তত মায়ের চরণপূজা করলেই আসবে বিশ্ব মা দিবসের সার্থকতা।


আসুন, আজ বিশ্ব মাতৃ-দিবসে আমরা সকলেই সমবেত ভাবে শপথ গ্রহণ করি, আর সবাই সমস্বরে বলে উঠি সারা বিশ্বের নারীজাতি আমাদের মা। তাদের মাতৃজ্ঞানে সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের প্রথম ও প্রধান পবিত্রতম কর্তব্য। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু!


বিশ্ব মা দিবসের কবিতা
             -লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


আজি বিশ্ব মা দিবসে বিশ্ববাসীগণ,
ভক্তিভরে করো পূজা মায়ের চরণ।
বিশ্বমাঝে নারী জাতি মায়ের সমান,
মাতৃজ্ঞানে করো পূজা করহ সম্মান।


মা ভক্ত বিদ্যাসাগর দামোদর জলে,
ঝাঁপ দিয়ে পার হন মাতৃ কৃপাবলে।
ভক্তি ভরে মাতৃ পূজা করে যেইজন,
রণে বনে জলে স্থলে জয়ী সেইজন।


শোন শোন বিশ্ববাসী আমার বচন,
জননীরে করো পূজা জননী-নন্দন।
মাতৃপূজা কর সবে কহিলাম সার,
অনন্ত অসীম মাতৃ স্নেহ পারাবার।


করো সবে মাতৃপূজা মায়ের সন্তান,
কবিতায় গাহে কবি মাতৃ জয়গান।