কালী কালী মহাকালী দেবী আগমনী…..শুভ দীপাবলীর
আগমনী স্তবগাথা- চতুর্থ পর্ব
তথ্য সংগ্রহ, সম্পাদনা ও স্তোত্রপাঠ-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


পুরাণে কথিত আছে দুর্গা-চণ্ডী-কালী-একই সত্তায় মহাশক্তি রূপে পরিণত হয়েছেন। ‘দেবঃ তেজঃ সম্ভবা’ রূপে তিনিই কালী কাত্যায়নী, চণ্ডী রূপে তিনি বধ করেন চণ্ড-মুণ্ড অসুরদ্বয়কে। দুর্গা রূপে বধ করেন দুর্গমাসুরকে, আবার তিনিই কালী রূপে পান করেন রক্তবীজ অসুর-রক্ত। বহু নামেই তিনি বিরাজিতা। কালী, মাতঙ্গী কালী, ছিন্নমস্তা কালী, শ্মশানকালী, কালা কালী, ভৈরব বা ভদ্রকালী, ষোড়শী কালী, কমলা কালী, ধুমাবতী কালী। এই সব নাম ও রূপের বাইরেও মহাশক্তি সর্বত্র বিরাজ করছেন। জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে, বৃক্ষে, লতায়, ঔষধিতে, মানবের দেহে, মনে, প্রাণে, বুদ্ধিতে, অহঙ্কারে। সবেতেই আছেন। তিনি আছেন মানব চেতনায়, স্মৃতিতে, শ্রদ্ধায়, নিদ্রায়, ক্ষুধায়, তৃষ্ণায়, ক্ষমায়, লজ্জায়, শান্তিতে, ভ্রান্তিতে, শক্তিতে। মাতৃ রূপে, তিনি সর্বত্রই সংস্থিতা।


তিনি আদ্যাশক্তি মহামায়া। কোথাও তিনি দুর্গা ও কালীর যৌথ রূপ। দেবীর অর্ধাংশে দুর্গা ও অধিকাংশ কালী। দুর্গার অংশটি পঞ্চভুজা ও কালী অংশটি দ্বি-ভুজা। তিনি কালিকা, তিনি শ্যামা, তিনি ভবতারিণী। তান্ত্রিক মতে আবার তিনি ‘অষ্টধা’ বা ‘অষ্টবিধ’। এই ‘অষ্টধা’ হলেন চামুণ্ডাকালী, দক্ষিণী কালী, ভদ্রকালী, রক্ষাকালী, শ্মশান কালী, মহাকালী, শ্রীকালী।


কালিকাপুরাণে আমরা দেখি আদি শক্তি রূপে তিনি যোগীদের মন্ত্র ও তন্ত্র উদঘাটনে তত্‌পর। তিনি চতুর্ভুজা, খড়গধারিণী, বরাভয়দায়িনী, নরমুণ্ডধারিণী। তিনি লোলজিহ্বা ও মুণ্ডমালা বিভূষিতা। তিনি মুক্তকে, কৃষ্ণবর্ণা, শিববক্ষে দণ্ডায়মানা মাতৃমূর্তি। তিনি মূলত শাক্তদের দ্বারা পূজিতা হন এবং একাধারে দশমহাবিদ্যার প্রথমা দেবী ও বিশ্বসৃষ্টির আদি কারণ। অন্ধকারবিনাশিনী তিনিই।


কালীর স্তবগাথা


করালবদনাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাম্।
কালিকাং দক্ষিণাং দিব্যাং মুন্ণ্ডমালা বিভূষিতাম্
সদ্যন্নিশিরঃ খড়গ বামাধোর্দ্ধ করাম্বুজাম।
অভয়ং বরদঞ্চৈব দক্ষিণোর্দ্ধাধপানিকাম
মহামেঘ প্রভাং শ্যামাং তথা চৈব দিগম্বরীম্।
কন্ঠাবসক্ত মুন্ডালী গলদ্ রুধির চর্চ্চিতাম্


আসুন, আমরা সকলেই তারা মায়ের শক্তির আরাধনায় সকল বিরোধ ভুলে পূজোর আনন্দে মেতে উঠি। মাত্র আর কটা দিন বাকি। তাই দিকে দিকে চলছে পূজার প্রস্তুতি। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!


কালী কালী মহাকালী দেবী আগমনী…..দীপাবলী সংকলন-১৪২৬
দীপাবলীর আগমনী কবিতা-৪
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।


তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে ওঠো মায়ের সন্তান,
তারা তারা মহাকালী মহামন্ত্র জপ সে নাম অবিরাম।
তুমি তারা মহাকালী
তুমি মাগো মুণ্ডমালী,
কখনো বা তুমি ত্রিশূলধারী, হাতে মাগো খড়্গ কৃপান।
তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে ওঠো মায়ের সন্তান।


তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান,
তারা তারা মহাকালী মহামন্ত্র জপ সে নাম অবিরাম।
শ্মশানকালী ত্রিনয়না
নৃমুণ্ডমালী দিগবসনা,
মায়ের নামে ভুবন কাঁপে মাতৃমন্ত্রে বাড়ে জাতির মান,
তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান।


তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান,
তারা তারা মহাকালী মহামন্ত্র জপ সে নাম অবিরাম।
আদ্যাশক্তি মহামায়া
তুমি কালরূপী ছায়া,
সংহারী মূর্তি ধরি তুমি জগতের কাল রূপে অবস্থান।
তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান।


তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান,
তারা তারা মহাকালী মহামন্ত্র জপ সে নাম অবিরাম।
একবার তারা তারা বল,
তারা নামে ধরে কত বল
একান্ন পীঠের তারা কালী সে তারাপীঠ মহা তীর্থস্থান।
তারা মায়ের অভয় মন্ত্রে জেগে উঠুক মায়ের সন্তান।