বসন্তে রং লাগে মনে….. পুলক জাগে হৃদয়ে
বসন্ত আসিল আজি ষষ্ঠ পর্ব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


”রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে
তোমার আপন রাগে, তোমার গোপন রাগে,
তোমার তরুণ হাসির অরুণ রাগে,
অশ্রুজলের করুণ রাগে …
মেঘের বুকে যেমন মেঘের মন্দ্র জাগে,
তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও”


রঙ খেলার উৎসব দোলযাত্রা। রঙ, আবির, গুলালে জীবনকে রঙিন করে তোলার নতুন এক আহ্বান দেয় দোল। বৈষ্ণব বিশ্বাসীদের মতানুসারে, ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে বৃন্দাবনের নন্দকাননে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাধিকা দেবী এবং তার সখী ও অন্যান্য গোপীর সাথে রঙ খেলায় মেতেছিলেন। এই দিনকে স্মরণ করতেই দোলযাত্রার সূচনা হয়েছিলো। তাই প্রত্যেক বছর ফাগুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে, প্রচলিত পঞ্জিকা অনুসারে, ১৪তম রাতের পরবর্তী দিনে উদযাপিত হয় দোল। পণ্ডিতদের মতে, রাধাকৃষ্ণের দোলনায় দোল বা দোলায় গমন করা থেকেই ‘দোল’ কথাটির উৎপত্তি। এই দিন রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ গুলালে স্নান করিয়ে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে সকালেই বেরিয়ে পড়েন ভক্তরা। এরপর শুরু হয় রঙ ছুঁড়াছুঁড়ির পালা। একে অন্যকে কতখানি রাঙিয়ে তুললো, সেই প্রতিযোগিতায় মাতা হয়।


কিন্তু কীভাবে এলো এই উৎসব? অনেকেরই জানা নেই হয়তো সঠিক ইতিহাসটি। দোলযাত্রা বা হোলির সাথে মিশে আছে ধর্মের সব পৌরাণিক কাহিনী এবং লোকবিশ্বাস। আছে বিষ্ণু, দৈত্য, রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের নানা পুরাকথা। দোলযাত্রা এবং হোলিকে আমরা একই উৎসব বলে জেনে থাকি। তবে আক্ষরিক অর্থে তাদের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। স্থানভেদে একেক বিশ্বাসে এবং নানা উপায়ে পালন করা হয় দোল এবং হোলি, কিন্তু মূল সুরটি একই। সামান্য তফাৎটা কোথায়, তাহলে জেনে নেওয়া যাক।


ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলের প্রাচীন আর্য জাতি সূচনা করেছে রঙ খেলার। আবার এমনটাও জানা যায় যে, খ্রিস্টের জন্মেরও কয়েকশো বছর আগে থেকেই হোলি উদযাপিত হয়ে আসছে এই ধরায়। প্রাচীনকালের পাথরে খোদাই করা ভাস্কর্যে নাকি এই উৎসবের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছিল। দোলের কথা লেখা আছে পবিত্র গ্রন্থ বেদ এবং পুরাণেও। ৭০০ শতকের দিকে রাজা হর্ষবর্ধনের সময়ে সংস্কৃত ভাষায় লেখা একটি প্রেমের নাটিকাতে হোলি উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায়। পরে বিভিন্ন মন্দিরের গায়ে খোদাই করা চিত্রকর্মে হোলি খেলার নমুনা বিভিন্নভাবে ফুটে উঠেছে বলে দাবি করেন বিশ্বাসীরা। তাহলে বলতে হয়, হোলি বেশ প্রাচীন একটি উৎসব।


ইংরেজদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল দোল উৎসব। প্রথমদিকে এই উৎসবকে তারা রোমান উৎসব ‘ল্যুপেরক্যালিয়া’ হিসেবেই মনে করেছিল। অনেকে অবশ্য একে গ্রিকদের উৎসব ‘ব্যাকানালিয়া’র সঙ্গেও তুলনা করেছিল।


বিষ্ণু কথন ও হোলি


এ গেলো বহুদিন আগের কথা। এবার দেখা যাক, পুরাণে কী বলে? স্কন্ধ পুরাণের ফাল্গুনমাহাত্ম্য গ্রন্থাংশে হোলিকা ও প্রহ্লাদের উপাখ্যান বর্ণিত আছে। দৈত্যরাজা হিরণ্যকশিপুর অমরত্ব লাভ করার ইচ্ছা জাগলো। অমরত্ব বরপ্রাপ্তির জন্য তিনি কঠোর ধ্যানে মগ্ন হলেন। কিন্তু অমরত্ব লাভ কি অত সোজা? তিনি অমর হলেন বটে, তবে পরোক্ষভাবে। যে বর তিনি ধ্যানের মাধ্যমে লাভ করলেন, তা তাকে পাঁচটি বিশেষ ক্ষমতা দান করলো। তাকে কোনো মানুষ হত্যা করতে পারবে না, আবার কোনো প্রাণীও হত্যা করতে পারবে না; তাকে ঘরে হত্যা করা যাবে না, আবার বাইরেও হত্যা করা যাবে না; তাকে দিনে হত্যা করা যাবে না, আবার রাতেও হত্যা করা যাবে না এবং তাকে স্থল, জল বা বায়ু কোথাও হত্যা করা যাবে না। এই বর লাভ করে রাজা হিরণ্যকশিপু অহংকারী ও স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠলেন। তার অহংকার এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকলো যে তিনি নিজেকে দেবতাসম মনে করা শুরু করলেন।


তিনি চাইলেন, মানুষ এখন থেকে তাকে পূজা করবে এবং কেউ যদি তার আদেশ অমান্য করে তবে তাকে তিনি শাস্তি দেবেন, এমনকি হত্যাও করবেন। কেউ সানন্দে, কেউ ভয়ে তাকে পূজা করলো দেবতাতুল্য ভেবে, কিন্তু তার পুত্রই তার সাথে সম্মত হননি। পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন একজন পরম বিষ্ণুভক্ত। তাই তিনি তার পিতার দেবতা হওয়ার অমূলক ভাবনাকে অস্বীকার করে বিষ্ণু পূজা জারি রাখলেন।


পুত্রের এত বড় স্পর্ধা কিছুতেই মেনে নিতে পারলেন না রাজা। অনেকভাবে চেষ্টা করলেন পুত্রের বিষ্ণুভক্তি দূর করার। কোনোভাবেই যখন পুত্রকে পূজা দিতে রাজি করাতে পারলেন না, তখন রাগে ক্ষোভে পুত্রহত্যার কথা চিন্তা করলেন তিনি। পুত্রকে তো আর নিজ হাতে খুন করা পারেন না, তাই ষড়যন্ত্র শুরু করলেন। হিরণ্যকশিপু শরণাপন্ন হলেন বোন হোলিকার কাছে। হোলিকা বরপ্রাপ্তা ছিলেন। তিনি বর পেয়েছিলেন যে, অগ্নি তাকে বধ করতে পারবে না। হোলিকা তার ভাইপোর কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে দাদার সাথে সহমত পোষণ করলো। দুই ভাইবোনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, হিরণ্যকশিপু হোলিকার কোলে বালক প্রহ্লাদকে বসিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলেন গায়ে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠল। এতে মৃত্যু একজনের হলো বটে, তবে প্রহ্লা্দের নয়, হোলিকার। ভগবান বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অগ্নিকুণ্ডে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে হরিনাম করতে করতে অক্ষত অবস্থায় বের হয়ে এলেন কিন্তু হোলিকা প্রাপ্ত বরের অপব্যবহার করায় আগুনে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে গেল। এই কাণ্ড দেখে তো দৈত্যরাজ অবাক!


বোন হারানোর শোক ভুলে হিরণ্যকশিপু আরও ক্রোধান্বিত হয়ে উঠলেন। পুত্রকে এবার নিজেই আক্রমণ করতে উদ্যত হলেন। কিন্তু এবারও বিফলে গেলো তার চাল। কেননা ভগবান বিষ্ণু ফের রক্ষা করলেন তার ভক্তকে। এরপর নৃসিংহ রূপে, অর্থাৎ অর্ধমানব-অর্ধসিংহ রূপে; গোধূলি বেলায় যখন না রাত-না দিন; হিরণ্যকশিপুকে বাড়ির দোরগোড়ায়- যা না ঘরের বাইরে, না ভেতরে; নিজের কোলের ওপর নিয়ে, যা জলে-স্থলে-বায়ুতে কোনোখানেই নয়; হিরণ্যকশিপুর নাড়িভুঁড়ি বের করে, থাবা দিয়ে তাকে হত্যা করেন। এর ফলে হিরণ্যকশিপুর লাভ করা বর তাকে বাঁচাতে পারেনি। নিমেষেই তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। আর এ সবকিছুই ঘটলো ফাল্গুনী পূর্ণিমার ঠিক পূর্ব দিন।


এর মধ্য দিয়েই অশুভ শক্তির হার হলো এবং শুভশক্তির জয় এলো। এই দিনটিকে স্মরণ করতে ‘হোলিকা দহন’ বা ‘ন্যাড়াপোড়া’ উৎসব পালন করা হয় হোলির ঠিক আগের দিন। হোলিকার এই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার কাহিনীই দোলের পূর্বদিনে হোলিকাদহন নামে খ্যাত, যেটাকে বর্তমানে আমরা হোলি বলি।


কৃষ্ণ কথন ও দোল উৎসব


ভারতের ব্রজ অঞ্চলে শ্রীকৃষ্ণের বেড়ে ওঠা। কোনো এক বসন্তের পঞ্চম দিনে সেখানেই রাধা ও শ্রী কৃষ্ণের স্বর্গীয় ভালোবাসা রচিত হয়। তাই স্মৃতি হিসেবে দিনটি রঙ পঞ্চমী এবং প্রেমের উৎসব হিসেবে দিনটি উদযাপিত হয়।


আবার আরও একটি পুরাণ আছে রাধা-কৃষ্ণকে নিয়ে। ব্রজ অঞ্চলে হোলি কে ‘ফাগ্বাহ’ বলা হয় এবং এক্ষেত্রে হোলিকাদহনের হোলিকাকে বলা হয় ‘পুতনা’। কৃষ্ণের মামা, রাজা কংস তার শিশু ভাগ্নে কৃষ্ণকে নিজের জীবনের জন্য বিপদ বলে মনে করতেন। তাই কংস রাক্ষসী পুতনাকে নারীর বেশে কৃষ্ণকে হত্যা করতে নিয়োজিত করেন। তারা পরিকল্পনা করেন যে পুতনা রাক্ষসী কৃষ্ণকে স্তন্যপান করাতে গিয়ে বিষ প্রয়োগ করে কৃষ্ণকে মেরে ফেলবে। কিন্তু শিশু কৃষ্ণ রাক্ষসী পুতনার বিষাক্ত দুধ পান করে ফেললেও তার মৃত্যু হয় না, বরং বিষপানে তার গায়ের বর্ণ ঘন নীল হয়ে যায়, আর ওদিকে কাজ সম্পন্ন করেই পুতনা দ্রুত পালিয়ে যায় (মতান্তরে, পুতনার মৃত্যু ঘটে)।


হোলি বা ফাগ্বাহ উদযাপনের আগের রাতে পুতনার দহন উদযাপিত হয় ঠিক হোলিকাদহনের মতোই।


হিন্দু পুরাণ অনুসারে, কৃষ্ণ তার যৌবনে হতাশ ছিলেন নিজের শ্যাম বর্ণের কারণে। তিনি চিন্তিত ছিলেন যে উজ্জ্বল বর্ণের রাধা ও অন্যান্য গোপীরা তার এই বর্ণের কারণে তাকে অপছন্দ করবে এবং তার কাছে ঘেঁষবে না। পুত্রকে হতাশার হাত থেকে উদ্ধার করতে মা যশোদা পুত্রের গায়ে আবির ছুঁয়ে দিলেন। তারপর বললেন, এবার এই আবির রাধার মুখে-গায়ে ছোঁয়াতে। এর ফলে কৃষ্ণ আর রাধাতে কোনো তফাত থাকবে না। কৃষ্ণও মায়ের আজ্ঞা পালন করেন, রাধার গায়ে আবির ছোঁয়ান এবং এরপরই তাদের মধ্যে প্রেম হয়। রাধা-কৃষ্ণের এই রঙ নিয়ে খেলাই হোলি বা দোলযাত্রা হিসেবে পালিত হয়।


তবে রাধা-কৃষ্ণকে নিয়ে হোলির যে বর্ণনাটি বেশি প্রচলিত, তা ভিন্ন। একদিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ, রাধা এবং তার সখীদের সাথে খেলা করছিলেন। এমন সময় রাধা এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। শ্রীকৃষ্ণ এ অবস্থা বুঝে রাধাকে সখীদের সামনে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আবির খেলা শুরু করেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি। বৈষ্ণব বিশ্বাসীদের কাছে এটাই দোল উৎসবের প্রধান কারণ। এ কারণে দোলযাত্রার দিন এ মতের বিশ্বাসীরা রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ আবিরে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় পরস্পর তারা রং খেলে আনন্দে মেতে ওঠেন।


কথিত আছে, বসন্তের প্রথম পূর্ণিমায় ‘কেশি’ নামে এক অত্যাচারী অসুরকে বধ করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। বসন্ত পূর্ণিমায় আসুরিক শক্তির বিনাশের আনন্দে শ্রীকৃষ্ণ দানবের রক্ত ছিটিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন। সেই আনন্দে সামিল হন ব্রজবাসীও। তার হাত ধরেই সূচনা হয় হোলি উৎসবের।


আবার আর এক মতে, ‘অরিষ্টাসুর’ নামের এক অসুর বধের আনন্দেই নাকি শ্রীকৃষ্ণের সাথে মৃত দৈত্যের রক্ত নিয়ে উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিলেন ব্রজধামের বাসিন্দারা। সেই রক্তরাঙ্গা রঙের উৎসব থেকেই প্রবর্তন হয় দোল বা হোলি মহোৎসবের।


দোল বা হোলি, যে নামেই তাকে ডাকা হোক, ফাগের মিষ্টি সুবাসে তা চিরন্তন প্রেমের দোলা দিয়ে যায় মনে। সেই প্রেম কখনও মননের, কখনও বা শরীরী। সেই প্রেম আদি অনন্ত। গোপিনী শ্রেষ্ঠা রাই ও গোপ শ্রেষ্ঠ কৃষ্ণের অনুরাগের রঙে সেই প্রেম দ্বাপরে ধারণ করেছিল মনোহর কায়া। রাধা ও কৃষ্ণের যুগললীলায় দোল আজ পেয়েছে এক বিশ্বজনীন রূপ।


নব বসন্ত বাঙালির প্রাণে নতুনত্বে প্রাণ সঞ্চার করুক এটাই হোক বসন্ত বরণের অভিপ্রায়। আসুন, আমরা সবাই নব বসন্তে পলাশের আবীর মাখা রঙে রাঙিয়ে তুলি নিজেদের। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!


নব বসন্তের কবিতা – ৬ হোলির গান
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


আজকে হোলি খেলবো হোলি
আজকে সবার সাথে,
আবীর রঙে মন রাঙিয়ে
নাচবো আঙিনাতে।


পলাশ বনে ফুল ফুটেছে
কোকিল গাহে গান,
আজকে হোলি পুলক জাগে
উঠুক মেতে প্রাণ।


আজকে জানি দোল পূর্ণিমা
হোলি খেলার দিন,
ফাগুন রঙে প্রভাত বেলা
হলো আজ রঙিন।


মেতেছে আজ হোলি খেলায়
ছোটো বড়ো সবাই,
খেলছে হোলি সবাই মিলে
রং লাগিয়ে গায়।


হোলির দিনে কাঁদছে কেন
ছোট্ট খোকন সোনা,
দেয়নি কিনে পিচকারি রং
খেলতে হোলি মানা।


বিশেষ দ্রষ্টব্য- দোল পূর্ণিমা প্রধানত বাংলা এবং উড়িষ্যার একটি অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশে দোল পূর্ণিমা ‘হোলি’ নামে পরিচিত। এই উৎসবের অন্য নাম বসন্তোৎসব। দোল পূর্ণিমা রঙের উৎসব যা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় উদযাপন করা হয়। এই দিন সকলে রং, আবির দিয়ে খেলা করে একে অপরকে রং লাগিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। এই দিন রাধা কৃষ্ণের পূজা অর্চনা করা হয়। এই উৎসবে সকলে মিলে মিশে আনন্দ করেন। বাংলার মানুষদের জন্য এই উৎসব পালনের আর একটি কারণ হল, এই দিন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মদিবস হিসাবে উদ্‌যাপন করা হয়। হিন্দু বৈষ্ণব ধার্মিকদের জন্য এই দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


(শ্রীশ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভূর (৫৩৫তম) আবির্ভাব তিথি (আবির্ভাব ইংরেজি ১৪৮৬, ১৮ ফেব্রুয়ারি, শকাব্দ ১৪০৭, বঙ্গাব্দ ২৩ ফাল্গুন, ৮৯২, শনিবার ফাল্গুনী পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণকালে।)
আসুন জেনে নেওয়া যাক, ১৪২৬ সনের দোল পূর্ণিমার নির্ঘণ্ট:
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
পূর্ণিমা আরম্ভ: বাংলা তারিখ: ২৪ ফাল্গুন ১৪২৬, রবিবার। ইংরেজি তারিখ: ০৮/০৩/২০২০ সময়: রাত্রি ০৩টে ০৪ মিনিট থেকে। পূর্ণিমা শেষ: বাংলা তারিখ: ২৫ ফাল্গুন ১৪২৬, সোমবার। ইংরেজি তারিখ: ০৯/০৩/২০২০। সময়: রাত্রি ১১টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত।
পূর্ণিমার উপবাস, নিশিপালন ও দোল উৎসব:
বাংলা তারিখ: ২৫ ফাল্গুন ১৪২৬, সোমবার। ইংরেজি তারিখ: ০৯/০৩/২০২০। সময়: রাত্রি ১১টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে: পূর্ণিমা আরম্ভ: বাংলা তারিখ: ২৪ ফাল্গুন ১৪২৬, রবিবার। ইংরেজি তারিখ: ০৮/০৩/২০২০। সময়: রাত্রি ০২টো ০১ মিনিট ১৪ সেকেন্ড থেকে। পূর্ণিমা শেষ: বাংলা তারিখ: ২৫ ফাল্গুন ১৪২৬, সোমবার। ইংরেজি তারিখ: ০৯/০৩/২০২০। সময়: রাত্রি ১১টা ৪৭ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড পর্যন্ত।
পূর্ণিমার উপবাস, নিশিপালন ও দোল উৎসব:
বাংলা তারিখ: ২৫ ফাল্গুন ১৪২৬, সোমবার। ইংরেজি তারিখ: ০৯/০৩/২০২০। সময়: রাত্রি ১১টা ৪৭ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড পর্যন্ত।
বিশেষ দ্রষ্টব্য- উত্তর ভারতে হোলি উৎসবটি বাংলার দোলযাত্রার পরদিন পালিত হয়।