পূজোর সময় এলো কাছে
সময়ের কাঁটা গেছে থেমে,
মৃত্যুগহ্বর চিড়িয়াখানে মাঝে,
এক কিশোর আসে নেমে।
পূজোর খুশিতে মেতেছে ভুবন
ঘরে ঘরে দেবীর আহ্বান,
মৃত্যুদ্বারে বসি গাহিছে তরুণ
জীবনের শেষ দিনের জয়গান।
মৃত্যুকবলিত সেই কিশোর,
সামনে দেখে ক্ষুধিত এক বাঘ।
মৃত্যুভয়ে কাঁপিছে শরীর তার
যূপকাষ্ঠে বাঁধা যেন বলির ছাগ।
বাঘের চোখ দুটো ভয়ংকর!
সামনে তার রয়েছে শিকার,
শিকার পেয়েছে সে বহুদিন পর
কেড়ে নেওয়া সাধ্য আছে কার?
বাঘের সামনে একা ভয়ার্ত কিশোর
মৃত্যুর পদধ্বনি শোনে বারেবার,
গুনিতেছে প্রতি পলে মৃত্যুর প্রহর
পূজো দেখা বুঝি ভাগ্যে নেই তার।
মরণের ফাঁদে দিয়েছে পা
পড়ে আছে সে মৃত্যুকূপে।
বাঘ এসে থমকে দাঁড়ায়,
সামনে তার মৃত্যুদূতরূপে।
বাঘ আছে একদৃষ্টে চেয়ে
পালাবার নাহিক কোন পথ,
জন্মের ঋণ শোধ মৃত্যু দিয়ে
থেমে যাবে এবার জীবনের রথ।
ক্ষুধিত বাঘের মুখে কিশোর একা
বাঁচার লড়াই নিয়ে প্রতিযোগিতা
ভুলের প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু দিয়ে,
জীবনের নতুন এক অভিজ্ঞতা।
ক্ষুধার্ত বাঘের মুখে ভয়ার্ত কিশোর
বাঁচার লাগি শুধু ব্যর্থ প্রতীক্ষা
জন্মের ঋণ শোধ মৃত্যু দিয়ে
জীবন আর মরণের শেষ পরীক্ষা।
জীবনখাতার পাতায় মুছে যায় নাম
শুরু হয় জীবনের শেষ অধ্যায়,
বাঁচার আর এক নাম সংগ্রাম
সামনে এসে বাঘ থমকে দাঁড়ায়।
উদ্যত থাবা দিয়ে টুঁটি চেপে ধরে
প্রাণহীন দেহটা মাটিতে লুটায়,
কান্না থেমে যায় আর্তনাদের ভিড়ে
শিকার লয়ে বাঘ জঙ্গলে পালায়।
সুরক্ষা বিহীন এই মৃত্যুনগরী
অভিশপ্ত এক চিড়িয়াখানা,
নাহিক কোন সতর্ক প্রহরী,
মৃত্যু দেয় বার বার হানা।
পূজার খুশির দিন আনন্দের
আজও শুনি মৃত্যুর কোলাহল,
সন্তানের মৃত্যুতে বাবা-মায়ের
খুশির দিনে দু’চোখে ঝরে জল।