শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
তৃতীয় পর্ব- পূজোর কবিতা-৩
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


শরতের স্নিগ্ধ শোভাকে আরো মোহনীয় করে বিভিন্ন রকম বাহারি ফুলেরা। শরতে ফুলফুটে থাকে চারিপাশে। নদী কিংবা জলার ধারে ফোটে কাশ-কুশ, ঘরের আঙিনায় ফোটে শিউলি- শেফালি, খাল-বিল-পুকুর ডোবায় থাকে অসংখ্য জলজ ফুল। আর শেষ রাতের মৃদু কুয়াশায় ঢেকে থাকা মায়াবী শাপলা ফুলেরা যেন আরো রূপসী করে তোলে গ্রামের হাওর-বাওর,খাল-বিল। শিশিরভেজা শিউলি বাতাসে মৃদু দোল খাওয়া কাশবনের মঞ্জরি, পদ্ম-শাপলা-শালুকে আচ্ছন্ন জলাভূমি শরতের চিরচেনা মূখ। শরতে যেমন ফুলের সমারহ মানুষের মনে এনে দেয় অন্যরকম সাধ।


শরৎকালে দোয়েল পাখির সুমিষ্টি শিস শুনতে কী যে ভালো লাগে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সত্যিই বিচিত্র রূপ নিয়ে শরৎ আমাদের চেতনায় ধরা দেয়। তাইত কাশ ও শিউলির শোভা উপভোগ করতে হলে আমাদের রূপের রানী শরতের কাছে যেতে হবে। কারো মতে রূপসী রূপের পরী, কারো কাছে ঋতুপরী কারো কাছে ঋতুর রানী শরৎ। আসলেই তাই। এ শরৎ এসেছে আমাদের মাঝে ঋতুর রাণী হয়ে।থাকুকও সে ইচ্ছে মত,আসুক বছর ঘুড়ে আবার আমাদের মাঝে। এটা হক আমাদের নিরন্তর চাওয়া।


শরতে বিলের জলে ফুটে থাকে সাদা ও লাল শাপলা। সকালের হালকা কুয়াশায় সেই শাপলা এক স্বপ্নিল দৃশ্যের আভাস আনে প্রকৃতিতে।আলোর ঝলকানিতে বিলের জলে ফুটে থাকা শাপলা, হাওয়ার সাথে করে মধুর আলাপন। তখন প্রকৃতি সাজে অপরূপ মহিমায় ।শরৎকালে মাঠ জুড়ে থাকে সবুজ ধানের সমারোহ। এ যেন রূপসী কন্যার গাঢ় সবুজের আঁচল। ধানগাছে গজানো কচিপাতায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু শিশিরের ওপর সকালের চকচকে সোনালী আলো যেন মুক্ত হয়ে ঝরে পড়ে মিশে যায় খেতের জলে। শরতের আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা মানেই পূজার আগমনী সুচনা। পূজো এসে গেল। মাত্র আর কটা দিনের প্রতীক্ষা। পূজোর আমেজে ভরে উঠুক সবার প্রাণ-ভেসে আসুক শারদ আকাশে পূজোর আগমনী গান।


শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
তৃতীয় পর্ব- পূজোর কবিতা-৩
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী



শরৎ এসেছে হৃদয় জেগেছে
নব আগমনী গানে,
তরুর শাখায় বিহগেরা গায়
পুলক জেগেছে প্রাণে।


শিউলি ফুটেছে টগর হেসেছে
ফুল বনে ফুল শাখে,
মাধবী মালতী বেলি আর যুঁথি
ফুটেছে পথের বাঁকে।


শারদ আকাশে সাদা মেঘ ভাসে
অজয়ের দুই কূলে,
অজয়ের চরে শালিকেরা উড়ে
শোভা দেয় কাশফুলে।


সবুজের খেতে প্রাণ উঠে মেতে
সুশীতল হাওয়া বয়,
সোনা রোদদুরে অজয়ের চরে
স্মৃতি হয়ে কথা কয়।


যেদিকে তাকাই দেখিবারে পাই
শরতের সোনা ছবি,
পূর্বদিকে দেখি লাল রং মাখি
ওঠে শরতের রবি।