শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
ষষ্ঠ পর্ব- পূজোর কবিতা-৬
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


শরৎ মানেই সকাল-সন্ধ্যা ঘাসের ডগায়, ধানের শীষে শিশির বিন্দু জমে ওঠা। বাতাসে হিমেল অনুভূতি। এ ঋতু নিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন- ‘এসেছে শরৎ, হিমের পরশ লেগেছে হাওয়ার পরে।’


শরতকালে হিমেল হাওয়ার অনুভূতি ও শিউলি ফুলের ঘ্রাণ কম পাওয়া গেলেও স্বচ্ছ নীল আকাশে চলছে তুলার মতো সাদা মেঘের আনাগোনা। নদীর তীরে তীরে ফুটে উঠেছে কাশফুল।


এক একজন কবি শরৎকে ভিন্নভাবে দেখবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই কবির কবিতায় বাংলার গ্রামীণ প্রকৃতিতে শরতের রূপের খোঁজ মিলে ভিন্ন ভিন্ন উপস্থাপনায়। শরৎ সকালে সবুজ ধানের কচি পাতার ওপর জমানো শিশিরবিন্দু যেন মুক্তোর মতো দ্যুতি ছড়ায়। আমাদের দেশের কৃষক তখন নবান্ন উৎসবের দিন গুনতে থাকে।


শরৎকালে ঝকঝকে নীল আকাশ। মৃদু বাতাস দোলা দিচ্ছে তাদের নরম পাপড়িতে। এই তো চিরচেনা শরত। কাশফুল শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের বিছানায় রাশি রাশি শিউলি ফুল। যেন খসে পড়েছে রাতের ঝলমলে তারা। মাটিতে মিশে গেছে তার গন্ধ। ছোট ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে নামে শিউলি ফুল কুড়োতে। আর পাল্লা দিয়ে চলে মালা গাঁথার প্রতিযোগিতা, কিন্তু আজকের এই শরতের সকালে সবই স্মৃতি হয়ে থাকে হৃদয়ের আঙিনায়।


কোথায় হারিয়ে গেল সেই সোনালী সকাল………………….?


শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
ষষ্ঠ পর্ব- পূজোর কবিতা-৬
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


শরতের সাদা মেঘ বহে বায়ু মন্দ বেগ
মৃদুমন্দ গতি সমীরণ বয়,
পূবেতে অরুণ উঠে শিউলি টগর ফুটে
সৌরভ ছুটে ভুবন-ময়।


প্রভাতে তৃণের পরে নিশির শিশির ঝরে
সরোবরে ফুটেছে কমল,
পুঞ্জে পুঞ্জে আসে ধেয়ে গুন গুন গান গেয়ে
গুঞ্জরিয়া আসে অলিদল।


সবুজ তরুর শাখে পাখি সব বসে থাকে
প্রভাতের আগমনী গায়,
সোনা ঝরা রোদদুরে বাজে বাঁশি মিঠে সুরে
মাঝি সব মাদল বাজায়।


সবুজ ধানের খেতে প্রভাত হাওয়া মেতে
ঢেউ লাগে দিয়ে যায় দোলা,
অজয়ের নদীজলে বৈঠা বেয়ে মাঝি চলে
নৌকাখানি সাদাপাল তোলা।


দেবীর মন্দির মাঝে ঢাক ঢোল কাঁসি বাজে
পূজোর সময় এল কাছে,
চতুর্দিকে হাঁক ডাক ঢাকীরা বাজায় ঢাক
পুলকে হৃদয় আজি নাচে।