গতকাল ছিল শুভ ভাইফোঁটা উত্সব। এই দিনটি ভ্রাতৃদ্বিতীয়া হিসেবেও পরিচিত। এই দিনটিতে ভাইবোনের মিলনোৎসব পালিত হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ভাই-বোন উভয়েই উভয়ের মঙ্গল কামনা করে থাকে। বাঙালিদের কাছে এই দিনটি ‘ভাইফোঁটা’ হিসেবেই অধিক পরিচিত।


পৌরাণিক কাহিনীতে বলা হয়, নরকাসুরকে বধ করে এইদিন বোন সুভদ্রার কাছে গিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সুভদ্রা দাদাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন ফুল-মিষ্টান্ন দিয়ে। আরতিও করেছিলেন। আর একটি বেশি প্রচলিত কাহিনী হল, যমরাজ গিয়েছিলেন বোন যমুনার কাছে। যমুনা বা যমীও এইভাবে অগ্রজকে বরণ করে নিয়েছিলেন। সেই থেকে সহোদরের মঙ্গলকামনায় প্রবর্তিত ভ্রাতৃদ্বিতীয়া।


আর ভাইফোঁটা এমন এক উৎসব যেখানে ব্রাহ্মণ পুজারীর দরকার হয় না। তবু বিশেষ না হলেও এর জন্যেও আছে কিছু রীতি লৌকিকতা। এইদিন বরণডালা সাজিয়ে ভাইকে আরতি করা হয়। এক এক বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী এক এক রকম জিনিস থাকে সেই ডালায়।তবে প্রদীপ ধূপকাঠি পান সুপারি হরিতকি ইত্যাদি দ্রব্যই সাধারণত থাকে।


আবার যাঁরা কোনও কারণে ভাইফোঁটা দিতে পারছেন না তাঁরা দেওয়ালে তিলক বা ফোঁটা দেন। অনেক জায়গায় আবার আকাশের চাঁদের উদ্দেশেও ফোঁটা উৎসর্গ করার রীতি আছে, ভাইয়ের কল্যাণ প্রার্থনা করে।


বাংলা কবিতা আসরের সকল ভাই-বোনেদের জানাই শুভ ভ্রাতৃ-দ্বিতীয়ার প্রীতি আর শুভেচ্ছা। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু।


শুভ ভাইফোঁটা
               লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


ঘরে ঘরে ভাইফোঁটা বিধিমতে হয়,
শুভদিনে ফোঁটা দিলে কাটে যমভয়।
ভ্রাতৃভালে দেয় ফোঁটা ভগিনীসকল,
বিধাতার কাছে চাহে ভ্রাতার মঙ্গল।


ধান্য দূর্বা ধূপ দীপ, সুগন্ধি চন্দন,
সুমিষ্টান্ন দ্রব্য কত করে আয়োজন।
উপহার বিনিময় ভাই-বোন মিলে,
আয়ুবৃদ্ধি হয় বোন ভাইফোঁটা দিলে।


ধান্য দূর্বা শিরে দেয় কপালে চন্দন,
ভাইবোনে ওঠে গড়ে প্রীতির বন্ধন।
ফল মূল সুমিষ্টান্ন আর গুঁয়াপান,
রীতি অনুসারে হয় করিতে প্রদান।


বর্ষেবর্ষে ভাইফোঁটা ভ্রাতৃ-দ্বিতীয়ায়,
লিখিল লক্ষ্মণ কবি, তাঁর কবিতায়।