ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার দিন বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করে ভাইফোঁটা দেয়। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। ভাইও বোনকে কিছু উপহার বা টাকা দেয়।


অতঃপর, বোন তার ভাইএর মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখে। এই সময় শঙ্খ বাজানো হয় এবং হিন্দু নারীরা উলুধ্বনি করেন। এরপর বোন তার ভাইকে আশীর্বাদ করে থাকে (যদি বোন তার ভাইয়ের তুলনায় বড় হয় অন্যথায় বোন ভাইকে প্রণাম করে আর ভাই বোনকে আশীর্বাদ করে থাকে)। তারপর বোন ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি দ্বারা ভাইকে মিষ্টিমুখ করায় এবং উপহার দিয়ে থাকে। ভাইও তার সাধ্যমত উক্ত বোনকে উপহার দিয়ে থাকে।


পশ্চিমবঙ্গে ভাইফোঁটা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান হলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। পশ্চিম ভারতের ভাইবিজ একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান। সেখানে এই উপলক্ষে পারিবারিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়। মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ পালন অবশ্যকর্তব্য। এমনকি, যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ পালন করতে হয়। এই রাজ্যে বাসুন্দি পুরী বা শ্রীখণ্ড পুরী নামে একটি বিশেষ খাবার ভাইবিজ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করার রেওয়াজ আছে।


ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার কবিতা (ধর্মীয় সামাজিক কবিতা)
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


ভ্রাতৃ-দ্বিতীয়ার দিন ভাই ফোঁটা হয়,
শুভক্ষণে ফোঁটা দিলে কাটে যমভয়।
ঘরেঘরে ভাইফোঁটা ফোঁটা দেয় বোন,
ভ্রাতার ললাটে শোভে সুগন্ধি চন্দন।


সুগন্ধি চন্দন সহ ধূপ দীপ আর,
গুঁয়াপান ধান্যদূর্বা যতেক প্রকার।
সুমিষ্টান্ন ফল-মূল উপহার নানা,
ভাইফোঁটা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা।


বর্ষে বর্ষে ভাইফোঁটা আসে একবার,
ভগিনীকে দেয় ভ্রাতা, নানা উপহার।
সবশেষে গুঁয়াপান দেয় বিধিমতে,
সারাদিন হৃষ্টচিত্ত ভ্রাতার সহিতে।


ভাইফোঁটা উত্সব প্রতি ঘরে ঘরে,
আনন্দের স্রোত বয়ে সারাদিন ধরে।
ভাইবোন সারাদিন করে আলাপন,
ভাইফোঁটা কাব্য লিখে শ্রীমান লক্ষ্মণ।