বাবা শীর্ণ দেহে শয্যায় শুয়ে করছে বেদনার চিৎকার,
মা হয়েছে বদ মেজাজি সর্বক্ষণ রগচটেই থাকে তার।
যদি বলি মা ক্ষুধা লাগছে কি খাবো খাওয়ার কিছু নাই,
মা কথা না বলে লাঠি শোটা দিয়ে আঘাত করে আমায়।
মার খেয়ে আমি বাবার ঘরে দৌড়ে গেলাম কাঁদতে কাঁদতে,
বাবাও আমায় পাশে বসিয়ে বোবা মুখে কাঁদে হাত রেখে হাতে।
মা আসিয়া বাবাকে বলে তুই মরবি কবে আর আমি কবেই শান্তি পাবো?
মেয়েটা ক্ষুধা কাতর ঘরে কিছু নেই আমি কেমনে খেতে দেবো?
শুধু তোর জন্যই ঔষধ লাগে দিন তিনশত টাকারও বেশি,
আর কত জ্বালাবি আজকেই মরবি তুই গলায় দিয়ে ফাঁসি।
আমি কোন কথা না বলে চোখ মুছিয়া ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম স্কুলে,
স্যার আসিয়া কইলো তুমি ড্রেস না পড়ে আর আসবে না স্কুলে।
রাতে মায়ের পাশে বসে বললাম আমি স্যারের এমন কথা,
মা আমাকে হাত পাখা দিয়ে জোড়ে আঘাত করলো পেলাম ভীষণ ব্যথা।
আমি কাঁদতে কাঁদতে ঘর ছেড়ে গিয়ে আঁধারে বসিলাম তেঁতুল গাছে নিচে,
কিছুক্ষণ পর হঠাৎ উচ্চস্বরে কান্নার আওয়াজ আমার কানে এলো ভেসে।
ভাবলাম আমি যাব না ঘরে যা হবার তা হোক,
কারো কিছু হলে আমি আর এতটুকুও পাবো না শোক।
পরে দেখি মা আমার কাছে এসে কান্নায় মাটিতে গেলো পড়ে,
বললাম কি হয়েছে? মা বললো তোর বাবা গিয়েছে মরে।
কথা টা শুনে আমার চোখে জল আর মুখে করুন হাসি,
মাকে বললাম বাবা এমনি মরেছে নেওয়া লাগেনি ফাঁসি।
আহারে বাবা, তুমি এভাবেই চলে গেলে আমার সাথে দেখা করলে না?
চলে যাওয়ার আগে আমার কথা একটুও মনে পড়লো না?
তুমি যে এত বড় নিষ্ঠুর বাবা আমার জানা ছিলো না।
মা! তুমি কাঁদছো কেন? প্রাণ খুলে হাসো এখন তোমার
চোখে তো জল মানাবে না,
বাবা চলে গেলো তুমি তো এখন মুক্ত পাখি, তোমার
সময় এসে গেছে মা তুমি আজ থেকে স্বাধীন যেথায় মন চাবে
সেথায় যেতে পারবে মিলিয়ে দুটি ডানা।
তোমার স্বাধীনতা তে আজ আমার মনে আনন্দের জোয়ার
তোমার বালাই টা আজ দূর হয়ে গেলো আমার চিন্তাও করা লাগবে না আর।
বাবা সত্যিই বলছি আজ থেকে তোমার খুকি বড় এতিম হয়ে যাবে ,
তবে তুমি কষ্ট পেওনা বাবা তোমার সাথে রোজ আমার
ঐ আকাশ টেলিফোনে কথা হবে।