রাধেয় তোমার দু'চোখে হাসিমাখা অশ্রু বয়
কি হয়েছিল সেদিন?
শুধু একটি ভুল অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত এত পীড়া শেষেও দুঃখকে আপন করে নিয়েছি
আমার দোষ ছিল অহংকার, শ্রেষ্ঠতা, কাপুরুষতা
সত্যের  দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল।
এই কুরুক্ষেত্রে আমিই মহান যোদ্ধা,আমি কর্ণ,
সূতপুত্র কর্ণ, অপরাজেয় আমি।
এ আমার দম্ভ ছিল নিজেকে শোধরাতে পারিনি।
সামর্থ্য ছিল কিন্তু কপটতা গ্রাস করেছিল ।
অর্জুনের মৃত্যুর  প্রতিক্ষা করেছিলাম
কুরুক্ষেত্রে এক মহান যোদ্ধার মৃত্যু দেখবে বলে বিশ্ব।
কিন্তু অবশেষে কি হলো? সব ধোঁয়াশা কেটে গেল।
সময়ের চাকা থেমে গেল মৃত্যু সুনিশ্চিত
অমরত্ব লাভ আমার আশা ছিল না।
ও...কে অর্জুন আমার অনুজ আমি তাকে কিভাবে
মারবো। মুক্তি চেয়েছিলাম সেদিন ।
রক্তে ভেজা লাল মাটির কঠোর ভূমিতে
শুয়ে পড়লাম এক দৃঢ় আনন্দের গহ্বরে।
রক্তের বন্যা বয়ে গেল আমার মুক্তির সময়
সবাই আমার দিকে চেয়ে রইল।
তড়িৎ গতিতে যেন সবার চোখে বন্যা নেমে এলো
এক মহান যোদ্ধা, এক মহারথীর মৃত্যু।
চেয়ে রইল রাজমাতা কুন্তি, রাধা মা,ব্রুশালী  আর আমার পাঁচ ভাই।
সবাই মৌন থেকে গেল কেউ কিছু বলছে না সবার চোখে শুধু জল
শুধু মাতা কুন্তীর মুখে  উচ্চারণ হলো কর্ণ তোদের বড় ভাই আমার জ্যেষ্ঠপুত্র।
যেন আকাশে বিদ্যুৎ চমকে উঠল হৃদয় শিহরিত
এক করুণ বিদায় বেলা সূর্য পুত্রের শেষে যাত্রা।
অকস্মাৎ বিশ্বময় ।
রক্তাক্ত মাটিতে পড়ে রইল আমার দেহখানা
তোমাদের ভালোবাসা সেদিন স্বর্গ এনে দিয়েছিল।