পাঁচ ভাই-এক বোন
জাফর পাঠান


শুরুতেই আমি গ্রীষ্ম বলছি।
হে কাল বৈশাখী ঝড়,  এসোনা তুমি বার বার
কৃষ্ণচূড়ার ভালোবাসা দিবার, আছে যে অপার
ধ্বংসে-আম কাঠাল, হয়োনা নাঙ্গা তলোয়ার।
হে খরতাপ, চুষে নির্যাস-মাটির করিসনা নাশ
ঝড়কে বলবো তবে, খরানের করতে সর্বনাশ,
ঝড়-বৃষ্টির মিশ্র বিন্যাস-আমার মিটায় পিয়াস।


আমি বর্ষা, নেই কোন লালসা।
আমি যে ভাসাই ডুবাই-বাজাই বর্ষার যত সানাই
জাতীয় ফুল শাপলা ফুটাই-মহাবীরের তৃপ্তি পাই,
কামিনী-রজনীগন্ধাফুল, ফুটাই জুঁইফুল-কদমফুল,
তবলায় তুলে নৃত্যের তাল, নাচাই ময়ূর-বুলবুল।


আমি শরৎ, ঝড় বৃষ্টির সাথে সহবত।
শুনে রাখো তোমরা-নই  আমি গোমরা মুখো স্তব্ধ
আমি হইনা প্রলুব্ধ, ঝড়-সাইক্লোন-খুনি-বিক্ষুব্ধ,
জীর্ণকে করে ব্যাকুল, থাকি নতুন গড়তে বদ্ধমূল,
এনে কাঁশফুল শিউলিফুল-প্রকৃতিকে করি উৎফুল।


কৃষাণের খুশি অনন্ত, আমি হেমন্ত।
নিয়ে নয়, শুধু দিয়ে করে নেই সবাইকে আপন
কৃষাণীর সাথে আমনের হয় গলাগলি রাত্রিযাপন,
ঘরে ঘরে বহে নবান্ন আনন্দ, চলে উৎসব বন্যা
বিছিয়ে ঘাসে শিশির কণা- ঘুমায় হেমন্ত কন্যা।


আমি শীত, গাই কাঁথা মুড়ে গীত।
ছেড়ে হম্বি -তম্বি, কাঁপে সুন্দরবনের হিংস্র বাঘ
উনুন ঘিরে পিঠা খাওয়ার স্বাদ, পৌষ আর মাঘ,
বাঁধাকপি-ফুলকপি-লাউ-মুলা-টমেটো আর সিম
খেতে খেতে চলে যায় শীত-এ মজা বড্ড অসীম।


সদা সতেজ-সদা জ্যান্ত, আমি বসন্ত।
আমি ফুলকন্যা-বসন্ত রাজকন্যা-সাজি একা নিজে
নতুনত্ব-যৌবনত্ব ফুটিয়ে লাজে-তৃপ্তির বাঁশি বাজে,
স্বর্ণলতার বাহু ডোরে খুঁজে নেই মিত্র, ফাগুন-চৈত্র
কোকিল বলে বসন্তরে, শুদ্ধ চিত্তের আমি যে মিত্র।


সুখে-দুঃখে গলাগলি ধরে-ভালোবাসার গান গাই,
ঋতুতে মোরা একবোন-পাঁচ ভাই, জানুন সবাই।