আমার ফেসবুক বন্ধু
অনেকদিন থেকে বলছে
কলকাতায় আসবে
আমার বাড়িতে কিছুদিন থাকবে।


বর্তমানে থাকে ইংল্যান্ডের নটিংহাম শহরে,
একটি সরকারি হাসপাতালে নার্স।


আসলে ওর ঠাকুরদা কলকাতায় ছিলেন,
ত্রিশের দশকের শেষদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়;


সে তখন এক টালমাটাল অবস্থা,
একদিকে বিশ্বযুদ্ধ আর একদিকে
ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ;


ঠাকুরদা ডাক্তার ছিলেন।


কলকাতার অনেক গল্প শুনেছে ঠাকুরদার মুখে,
তাই কলকাতার প্রতি কিছুটা ভালোবাসা জন্মেছে।


দূরের অতিথি আসছে প্রথম,
অগত‍্যা অফিস থেকে
কয়েকদিন ছুটি নিয়ে নিলাম;
যেন বন্ধু প্রেমে নিভৃতাবাস।


খুব আনন্দে, মজা করে কাটলো ক'টাদিন,
বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা,
ব‍্যক্তিগত জীবনের গল্প -
নির্ভেজাল জমজমাট বাদশাহী আড্ডা।
সঙ্গে রবিঠাকুরের গান, প্রাণায়াম আর ধ‍্যান।


সাথে অল্প অল্প জ্বর, সর্দিকাশি ভয়,
বর্ষায় গরম ঠান্ডায় যেমনটা হয়।
লেবু-মোসাম্বির শরবত আর সাথে গরমজল
দিয়েছিল প্রতিকার ফল।  


আড্ডা, আলোচনার নির্যাস থেকে
কয়েকটা কবিতারও হলো প্রকাশ,
বাংলা-কবিতা ওয়েবসাইটে;
অনেকে বললো সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ।


আমিষ - নিরামিষ মিলে খাওয়াদাওয়াও
হয়েছে বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর;


তাজা ফল সব্জির সাথে ছিল -
সুক্তো, ঝিঙ্গেপোস্ত, রুইকালিয়া, ভাঁপাইলিশ,
মিষ্টি দই, রসগোল্লা আর সন্দেশ।


গিন্নী আর কন‍্যার পরিপাটি করে রন্ধন
আর পরিবেশন, হয়েছিল বন্ধুঅতিথির
বিশেষ পরিতৃপ্তির কারণ।


আজ ভীষণ খারাপ লাগছে,
চৌদ্দদিন থেকে বন্ধু চলে গেল।


যাবার সময় বলে গেল,
বেঁচে থাকলে আসছে বছর
আবার দেখা হবে।


আসলে সে ছিল করোনা,
মিসেস ডরোথী করোনা।


তবে বন্ধুকে কানে কানে বলে দিয়েছি,
ভ‍্যাকসিন আসছে, সাবধানে থাকতে।