আজ বড় দুঃসময়,
মানুষ বড় অসহায়।
চারিদিকে শুধু হিংসা, নির্দয়তা আর লজ্জাহীনতা,
চেতনার আকাশে নিকষ কালো মেঘের আনাগোনা,
লজ্জা যেন পায় নিষ্ঠুর পাশবিক বর্বরতা।
হাওড়ার ইছাপুরে জনাকয়েক হল্লাবাজ,
দিবালোকে এক ব্যাপারীকে গুলি করে পালায়,
মন্দির নির্মাণের জন্য চাঁদা না দেয়ায়।
নিরাপত্তাহীনতার সর্বগ্ৰাসী আঁধার নেমেছে সর্বত্র,
দুষ্কৃতিবাজরা আজ বেজায় বেপরোয়া, নিগূঢ় নির্ভয়।
শিথিল শাসনযন্ত্র, জাগিছে বিস্ময়!
আজ বড় দুঃসময়,
মানুষ বড় অসহায়।
মহাজনের কাছে লক্ষটাকা দেনা,
লকডাউনে ব্যবসায় মন্দা,
কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী
বারুইপুরের এক লিচু ব্যাবসায়ী।
মহাজনের লালসা, লোলুপতার নির্মম অভিসার,
বিপদসকাশে যেন বেড়ে যায় তীব্র বিবেকহীনতায়।
আজ বড় দুঃসময়,
মানুষ বড় অসহায়।
গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পূর্বে
বারাসতের বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী
সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন,
" লকডাউনে সুদের টাকা দিতে না পারায়
আমাকে নিত্যদিন গালিগালাজ করছে সুদখোরেরা।
আমাকে মারধর করছে, প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।
এই যন্ত্রণা আমি আর সহ্য করতে পারছি না।"
মোটরসাইকেল কেনার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ
না পেয়ে, সুদখোরের কাছ থেকে পয়ত্রিশ হাজার
টাকা ধার। প্রতিদিন সুদ চারশত পঞ্চাশ টাকা।
সুদখোর চক্র আজও প্রচণ্ড সক্রিয় গ্ৰামে শহরে,
নিরুপায়, নিঃসম্বল দীনজনে ভরসা জাগাতে,
তবে মরণের ফাঁদ পাতা আছে সেইখানেতে।
ভাবনার আকাশে ভাসে দুঃসময়ের এই দিনলিপি,
আমায় প্রশ্ন করে অগণিত গ্ৰহ, উপগ্ৰহ তারা
কবে হবে সমাপন এই অসহনীয় অসহায়তা।
মম অন্তরাত্মা পুঞ্জীভূত অভিমানে বলে উঠে
জনগণের ভাগ্যবিধাতাকে -
তুমি জাগো, তুমি দূর কর রাজশাসনের নিষ্ক্রিয়তা,
স্বার্থের এই পাশাখেলা।
তুমি রক্ষা কর নিপীড়িত জনকে
আর্থিক সুরক্ষাকবচে ঢেকে দিয়ে
ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে ব্যাপক জনমুখী করে।