জলদাপাড়ার জঙ্গলে প্রভাতের সূর্য হাসে
সুমহান বৃক্ষরা সব দাঁড়িয়ে মাটিতে পা রেখে
ডালপালা সব যেন ছড়িয়ে দিয়ে শূন্যে চারিধারে
আকাশের পানে মুখ, চেয়ে আছে নির্নিমেষ নয়নে।


সবুজ পাতারা সবাই ব্যস্ত খাদ্য অন্বেষণে
রবিকিরণের উষ্ণতা দিনভর গায়ে মেখে
স্নিগ্ধ বাতাসে কার্বন-অম্লজান জুটি সাথে নিয়ে।


নরম ঘাসে পা রেখে রেখে ময়ূর চলে কেকা রবে
কখনও বা পেখম মেলে ধরে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে
উড়ে গিয়ে হঠাৎ বসে অদূরে কোনো এক বৃক্ষশাখে।


গভীর অরণ্যের বুক চিরে নদী চলে ধীরে ধীরে
স্ফটিকস্বচ্ছ জলে বয়ে চলে নরম রুপোলি বোরোলি প্রতিস্রোতে, স্বাদেগন্ধে গরবিনী সে যে।


স্রোতস্বিনীর জলে ঘুমিয়ে আছে একটি মরা গাছ
সেতু বন্ধনে বেঁচে আছে সে যে অজেয় অমর আজ।


দূরে দেখি একটি চপল হরিণ ঘাসে মুখ দিয়ে নিশ্চিন্ত যাপনে, হরিণ শাবকটি দাঁড়িয়ে আছে মায়ের কাছে সচকিত বিভঙ্গে না জানি কিসের ভাবনায় পুলকিত আজ সে শৈশবের এই মুহূর্ত ক্ষণে।


দূরবীক্ষণের ক্যামেরায় চোখ রেখে একটি সরল নির্ভয় মানবশিশু। একশৃঙ্গী গন্ডার আর হাতীর দল দেখে আনন্দে সে নেচে উঠে।


কেকা কুহু কূজন কাকলি কানে কানে, জঙ্গলের বুনো গন্ধ গায়ে মেখে, একরাশ সবুজ বাতাস ফুসফুসে ভরে, মগজ হৃদয়ে কিছু অম্লান অরণ্য স্মৃতি নিয়ে ফিরে আসি আবার কংক্রিটের জঙ্গলে বন্দে ভারতে।


অরণ্য অভিজ্ঞতা, অরণ্য অনুভূতি মিশিয়ে তাই পেয়ে গেলাম অনন্য একটি অরণ্যের কবিতা।