পৃথিবীর সভ‍্যতম দেশ আমেরিকাতে
কৃষ্ণাঙ্গ মানুষেরা এখনও
লাঞ্চিত, অবহেলিত, পদদলিত।


স্লেভ, নিগ্ৰো, নিগারস থেকে এখন
আফ্রিকান আমেরিকান।


আমেরিকার মিনেসেটা শহরের মিনিয়াপোলিসে
এই দুহাজার কুড়ি সালের কুড়ি মে -
বীভৎস নারকীয় ঘটনা,


প্রচন্ডচাপে পুলিশ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ জর্জ ফ্লয়েডের
গলায় হাঁটু চেপে ধরল,
আট মিনিট চেচল্লিশ সেকেন্ড;


যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জর্জ ফ্লয়েড বলল,
"আমি শ্বাস নিতে পারছিনা" -
একবার, দু'বার নয়, ষোলো বার।


শুনল না নির্মম, নিষ্ঠুর পুলিশ,
শেষপর্যন্ত মৃত্যু বরণ করলো,
জর্জ ফ্লয়েড।


নজিরবিহীন পুলিশী বর্বরতায় স্তম্ভিত বিশ্ববাসী,
ধিক্কার ধ্বনিত হল আকাশে বাতাসে।


"ব্ল্যাক লাইভস ম‍্যাটার" বা
"কৃষ্ণাঙ্গরাও মানুষ" বলে
গর্জে উঠল প্রতিবাদী কন্ঠ।


মহাপরাক্রমশালী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে
প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হল
ভূগর্ভস্থিত বাঙ্কারে।


কৃষ্ণাঙ্গদের উপর নিগ্ৰহ, নিপীড়নের
ইতিহাস সুপ্রাচীন - বড় বেদনাদায়ক,
মর্মন্তুদ, মর্মভেদী, মর্মঘাতী।


জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু,
পুঞ্জীভূত অভিমানে
এক অগ্নিস্ফূলিঙ্গ -


কৃষ্ণাঙ্গদের জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে
সামাজিক আন্দোলন -
"ব্ল্যাক লাইভস ম‍্যাটার" বা
"কৃষ্ণাঙ্গরাও মানুষ"
ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বজুড়ে।


কৃষ্ণাঙ্গ সবাই যেন আজ
এক একজন জর্জ ফ্লয়েড -
শতশত বছরের ঘৃণা, বঞ্চনার মূর্তপ্রকাশ।


সাদা-কালো চামড়া, কারণ যে মেলানিন,
মানুষ যে মহৎ হয়, মানবিক আত্মার গুণ।


শ্বেতাঙ্গ মহাব‍্যবসায়ীরা বুঝতে পারছে,
কৃষ্ণাঙ্গকর্মী আর কৃষ্ণাঙ্গ ক্রেতা বিনা,
সোনার সংসার হবে নিমিষে ছারখার;


তাই, "আমরা পাশে আছি,
ফেসবুক পাশে আছে",
বলছেন মার্ক জুকারবার্গ।


এমনকি, সহযোগিতা, উজ্জীবনের মিছিলে
গুটি গুটি পা মিলিয়েছে আরো অনেকেই -
ট‍্যুইটের, নাইকি, নেটফ্লিক্স, ডিজনি.....


"ব্ল্যাক লাইভস ম‍্যাটার" বা
"কৃষ্ণাঙ্গরাও মানুষ" স্লোগানে, আন্দোলনে -
কি ওরা ভয় পেয়েছে, পল রবসন!


মানব প্রজাতির সৃষ্টি থেকে উত্তরণের যাত্রায়
হাজার হাজার মাইল পথ হেঁটেছি আমরা -


তবুও আজও আমরা বিভক্ত, বিভাজিত
নানা কারণে - বর্ণের নামে, জাতির নামে,
আর্থিক বৈষম্যের কারণে, ধর্মের নামে,
ভাষার নামে, আরো কতকিছুর কারণে।


তবুও আশা রাখি, বিভেদ মুছে হবে
মিলন মহান, মানবাত্মার জয়গান।