অনেক দিন আগের অন্য এক শহরের কথা ।
সেখানে মানুষের বয়স হলে শাস্তিস্বরূপ
শহরের মাঝখানে তাকে মাটিতে  
অর্ধেক পুঁতে রাখা হত ।
ক্রমশঃ সে মানুষ গাছ হয়ে যাবে।


এরকমই বয়ঃপ্রাপ্ত এক মানুষের গল্প ।
তার শরীরের অর্ধাঙ্গ মাটিতে পোঁতা ।
প্রতিদিন মানুষেরা তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়
কৌতূহলী জিগেস করে
তুমি কি এখন মানিয়ে নিয়েছ? খুসী তো ?


সে উত্তর দিতে চায় । কিন্তু প্রশ্নকারীর হাতে শোনার সময় নেই ।


এরপর দ্বিতীয়,তৃতীয়,চতুর্থ প্রশ্নকারীরা আসে ।
তাদের কারোরই উত্তর শোনার সময় থাকে না ।
প্রশ্নটুকু করেই তারা আপন আপন কাজে দ্রুতচলে যায় ।


এভাবেই দিন কাটে ।
ক্রমশঃ সে পরিপূর্ণ বৃক্ষ হতে থাকে ।


হঠাৎ একদিন তার পাশের গাছ বলে ওঠে
আর মাসখানেকের মধ্যেই তুমি পুরোপুরি গাছ হয়ে যাবে ।


অবাক হয়ে সে সুধোয়
তুমিও কি আমার মতো
শাস্তি প্রাপ্ত পুরুষ ?


গাছটি বলে,
" না আমি নারী ছিলাম ।
বাকি সব একই তোমারই‌ মতন ।
আমার কথা শোনার ধৈর্যও কারো ছিল না ।  
বয়ঃ প্রা্প্তির আগে আমিও  প্রশ্ন করেই
ওভাবেই দৌড়তাম ।


এখন কিন্তু আমার হাতে অঢেল সময় ।"


লোকটি  দীর্ঘশ্বস ফেলে বলে
আমার তো কোথাও যাওয়ার উপায় নেই ।
আর কারো সাথে কথাও বলতে পারবো না ।
এটা কি চরম শাস্তি নয় ?


পাশের নারী বৃক্ষ একটু দম নিয়ে হাসে ; তারপর বলে
তোমার কি তাই মনে হয় ?
আমার তো নিজেকে এখন পরম সুখী লাগে।
ব্যস্ততার জীবন ছেড়ে  এই যে শান্ত, নিরূপদ্রব, সমাহিত জীবন;
এই তো ব্যপ্তি ।
এছাড়া মাটির তলায় শেকড় দিয়ে আমরা বহুদূর যাতায়াত করি ।
পরস্পরেরর স্পর্শের উষ্ণতা
আমাদের প্রতিদিন নতুন জন্ম দেয় ।


একবার পুরোপুরি বৃক্ষ হলে বুঝবে
এ জীবন ও জীবনের থেকে কোন অংশেই খারাপ নয় ।
অপেক্ষায় থাকো ।।।