বাবা-পৃথিবীর বুকে একটা ছোট্ট শব্দ কিন্তু এই শব্দের ব্যাপ্তি অসীম।
জীবনের প্রতিটা অনুভূতিতে মায়ের মতই বাবার উপস্থিতি।
সন্তানের ভালো থাকা,খারাপ থাকা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিরাপত্তা সবেতেই বাবার ভূমিকা অনস্বীকার্য।


বাবারা অনেকটা গাছের মতো--ছায়া,ফুল,ফল, এমনকি নিজের সমস্ত শরীর সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দেন।


ছোটবেলা থেকে একটি সন্তান বাবাকে বিভিন্নরূপে পায়।


একদম শৈশবে সন্তানের কাছে তার বাবা প্রিয় খেলার সাথী। যার কোলে উঠে একবার কাঁদা মানেই সব আবদার পূরণ হয়ে যায়। বাবা বাজার থেকে কিংবা সারাদিনের পর বাড়ি ফিরে এলে ব্যাগের দিকে উৎসুক দৃষ্টি যায় আজ সন্তানের কোন প্রিয় জিনিসটা এনেছেন দেখার জন্য।


এরপর আসে কৈশোর। বাবা তখন ভয়ের কারণ। রাগী-- যার মুখে হাসি খুব কম দেখা যায়।যে সঠিক পথে চলা শেখায় এবং ভুল করলে শাস্তি দেয়। কোন কিছু দরকার হলে নমনীয়ভাবে তার কাছে অনুরোধ করতে হয়। পাছে সন্তান বিলাসী হয়ে ওঠে তাই বাবারা সেই সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃপণতা অবলম্বন করে।


যৌবনে বাবা আবার ভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ। কখনো বন্ধু কখনো সর্বশ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক। সন্তানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে যিনি সদা চিন্তিত। অনেক সময় সন্তানের হাজার অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য করে নিয়েও তাকে আশীর্বাদ করতে ভোলেন না। একজন কন্যা সন্তানের বাবা তাঁর মেয়ের সুখের জন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেন।নিজের মেয়েকে জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপহার দিতে চান।


মাতৃহারা সন্তানের কাছে বাবার গুরুত্ব আরেকটু বেশি। তিনি যেমন একাধারে তাঁর মায়ের ভূমিকা পালন করেন তেমনই সমানভাবে বাবার লালিত্যও দেন। মায়ের অভাব হয় তো থেকেই যায় কিন্তু তবুও যতটা সম্ভব সেই অভাব পূরণ করেন বাবা। রান্নাবান্না থেকে স্নান করানো শরীর খারাপে যত্ন নেওয়া পড়াশোনার খোঁজ খবর রাখা সবই একাই করেন।


নিজের সন্তানের শখ পূরণ করাটাই একজন বাবার শখ হয়ে ওঠে আর তাঁর নিজের শখগুলো প্রতি মাসের শেষে শখ হয়ে থেকে যেতে যেতে একদিন কপ্পূরের মত উবে যায়।
বাবাদের অসুখ হলে তাঁরা সেটার দিকে ভ্রুক্ষেপও করেন না।হাসি মুখে নিজের দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকেন।


বাবাদের কষ্ট হয় না।বাবাদের চোখ থেকে জল পড়তে নেই। তাঁদের মনকে সদাই পাথরের মত কঠোর রাখতে হয় । সারাজীবন বাড়ির ছাদের মতো সন্তানের মাথায় ছাদ হয়ে থাকতে হয়-- যদিও এতেই তাঁরা জীবনের সুখ খুঁজে পান।