।। একটি মুকুলের অকাল পতন।।
  ---- প্রলয় রায়
ছোট্ট একটি নিষ্পাপ নিষ্কলুষ মুকুল,
প্রকৃতির অনন্ত সৃষ্টির একরত্তি  ফুল।
বিষ্ময়ে দেখেছিল সে প্রকৃতির সৃষ্টি-
নদ নদী, গাছগাছালীর অপরুপ দৃষ্টি।


বন ময় জংলী সবুজবীথি উঁচু নিচু টিলা-
বসতি আদিম, জন জাতি, ছোট নদী নালা ।
সহজ সরল গৃহ কোন নিশ্চিত আশ্রয়!
খেটে খাওয়া জনগণ ঘোরতর  সংশয়!


মুকুলের বাহারী বন্য সুগন্ধির শৈশব-
প্রজাপতি রঙীন হন্য পরাগের সৌরভ।
সাজানো বন্য সুন্দরী পরম রুপ লাবন্য-
সভ্যতার আড়ালে ময়ূরী এ যে অসামান্য।


হঠাৎ এল দমকা  ঝড় নামলো ঘন রাত্রি।
অযত্ন লালিত পুষ্পদল পতন হল যাত্রী।
পরাগ ডিম্ব,পাপড়ি বৃন্ত-ছিন্ন শব বিদায়,
নিশি রাত একাকি চাঁদ দেখে শুধু  অসহায়।

আধো ঘুমে রাতজাগা পাখি স্বাক্ষী  ছিল বনে-
জটায়ু হয়ে উঠতে পারেনি দস্যু ভয় শাসনে।
শিশু শাবক সকলেরে আড়াল করে রাখি
কাঁপছিল কোটর মাঝে আগলে বসে থাকি।

মাতা মহীরুহ ডালপালা বিছায়, মেলিয়া
আড়াল করার আপ্রাণ চেষ্টায়। নিরালা
দস্যু ঝড়ের রুদ্রমুর্তি সম্মুখে সমর প্রান্ত-
অসহায় পরান ক্লান্তি, বিদীর্ণ বিভ্রান্ত।


ঝড়েরা দামামা বাজিয়ে জংগলে জংগলে-
জনপদে জনপদে দাপিয়ে হিংস্র বাহু তুলে।
বাধাহীন চলেছে আগুন-রনংদেহী  মুর্তি
তুফান তুলে আগুয়ান- রোধে কার শক্তি?


ঐ দস্যু দানব ঝড় তাকে সৃষ্টি করেছে কে?
আজ বিনাশই বা তবে করবে তাকে কে?
যে ঘটিয়ে চলছে এত শত নরক যন্ত্রণা-
সে দস্যুকে কে দিয়েছে এত ধ্বংস মন্ত্রনা?


অসহায় মাতৃ হৃদয়ে ঝড়ছে ক্রন্দন-
নিষ্পাপ মুকুলের এ অসময় পতন।
হারিয়েছে চিরতরে যারে কে রেখেছে লুকায়ে?
নির্লজ্জ সে দস্যুঝড় গিয়েছে পালিয়ে।


সৃষ্টিকর্তার কাছে গেছে- প্রশ্ন করেছে চলে
কি ছিল অপরাধ-কেন তারে নিল অকালে?
কামিনীর উজ্জ্বলতায় কোমল রেনুর আধার-
উদাসিন সমাজে ওরা লালসার শিকার।


কেন তারে পাঠিয়েছিল তবে বিধাতা?
উত্তরে হাসিমুখে ঈশারা করে দেবতা-
জীবনের অন্তরেই রয়েছে নিহীত ক্ষমতা -
তাকে বরন করেই লভিবে সে সমতা।