ডোবা পুকুর সব ভরেছে
বইছে খানায় জল
কোথায় রাখা ঘুনী আঁটল
দৌড়ে নিয়ে চল ।
পাততে আঁটল লাগে পাঁটা ঘুনীর মধ্যে চুনো চানা
বড় মাছের তরে ছোট ছোট সব গুলো
পরলে ফাঁদে যতই ঝাপাট মাঝে মধ্যে ঝারতে হবে
বেরোবে কি করে ! নইলে ভাঙা কুলো ।।
ভরা খালে পরছে জাল
পাড়ের উপর থেকে
জাল গুটাতে শেষ হাতে
তুলতে হবে ঝেঁকে ।
ক্ষেপ হতে ক্ষেপ খালি হাতে খুনি জালে ছোট ফাঁস
বড় জাল ফেলে ধানি – মৌরালা – পুঁটি
ক্ষান্ত হবে নেশার নেশা ছাড়িয়ে হাড়িতে রাখতে গিয়ে
মনের মতো পেলে । ধরছে যে তাঁদের টুঁটি ।।
তাল পুকুর ডুবেছে জলে
বৃষ্টির জল ঝরে
ধার ধরে কাঁকড়া গুলো
কিলবিলিয়ে চরে ।
খেজুর পাতায় দড়ি বুনে সুগন্ধি রসে স্বাদ পেতে
বেঁধে শামুক ভাঙায় কামড়ে যেই বসে
পাড় ধরে জলের তলায় কাঁকড়াটাকে চুপিসারে
একটু দূরে টাঙায় । তুলে নিয়ে আসে ।।
সুরসুরিয়ে জলের ধারা
পুকুরের ধার ধরে
কানকো বেয়ে কয়েকটা কই
উপরের দিকে চড়ে ।
চড়তে চড়তে পুকুর পাড় মাথাটাকে মুঠোয় করে
কিংবা আরো দূরে কিংবা কিছুতে চেপে
মনের আনন্দে খেলে বেড়ায় অসাবধানে মারবে কাঁটা
এদিক ওদিক ঘুরে । উঠতে হবে কেঁপে ।।
এদিক ওদিক জল জমেছে
বেড়ায় চড়ে মাছ
যে ভাবেই হোক ওগুলোকে
ধরতে হবে আজ ।
রাস্তার ধারে ঝোপের ঝাড়ে ছাতা মাথায় সারাটা দিন
বড়শিতে কেঁচো গেঁথে বানিয়ে সুগন্ধি চার
নেঙটা পোঁদে দাঁড়িয়ে কচি বড় মেছো রইলেন বসে
ছিপেতে ফাঁদ পেতে । দিন হয়ে গেল পার ।।
ক্ষেতের নতুন জমা জলে
সরু গর্ত পেলে
তেলে কিংবা চিতি কাঁকড়া
ঐ খানেতেই মেলে ।
বিগত দূরে কোণ করে ধরতে গিয়ে কখনওবা
গর্তের দিকে ঠেলে কামড় খেতে হয়
ছোঁলা কঞ্চি গেড়ে নাড়িয়ে আরও আছে সাবধানতা
কাঁকড়াটাকে তোলে । গর্তের সাপের ভয় ।।
কোথাও জল কোমর ওপর
বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি
মাছগুলো বেড়ায় চরে
কিভাবে যে ধরি ।
ঢোলকমলি শান্তি কিংবা চুনোর সাথে কাঠ পাতা
বড় বড় ঘাসে খুঁটে খুঁটে বেছে
ছাঁকনি জালের হাতল ধরে কপাল গুনে উঠলে বড়ো
ঘোরে চতুরপাশে । মনটা ওঠে নেচে ।।
ধানের ক্ষেতে নিচু নালা
মিশছে গিয়ে খালে
জলের সাথে মাছ গুলো যায়
স্রোতের তালে তালে ।
নালার সাথে সর্পিল জাল জাল উচিয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে
ঘের ছোট ক্রমান্বয়ে শেষ প্রান্থে জড়ো করে
শেষে বড়ো , ফাঁসকি গেরো ফাঁসকি খুলে মাছ গুলোকে
লম্বা জালে লয়ে । বালতিতে নেয় পুরে ।।
লুকিয়ে ঝোপে শোল ল্যাঠা
কিংবা পোনার ঝাঁকে
বল্লাম ছুড়ে হুলতে দেহ
আবডালে গাছের ফাঁকে ।
সারাটা দিন বল্লাম হাতে টর্চ নিয়ে আলো জ্বেলে
কোমরে ব্যাগ গুঁজে তিরন্দাজির মতো
এদিক ওদিক সারাটা দিন রাত জেগে এমনি ভাবেই
পার করলো খুঁজে । কাটিয়েছে সে কতো ।।
রাতের বেলা খিলখিলিয়ে
চলে এধার ওধার
টানা জাল দিয়েছে পেতে
যেই ঘনিয়েছে আঁধার ।
টানা জাল লম্বা প্রচুর গলতে গিয়ে মাছ সাপ
কেটে প্রয়োজন মতো আঁটকে গেছে জালে
জলের নিচে টাঙাতে গিয়ে কেউবা বেঁচে কেউবা মরে
গুঁজেছে কাঠি কতো । সকালে যখন তোলে ।।
নদী বক্ষে ধরতে ইলিশ
ধরে নৌকার দাঁড়
দিন পেরিয়ে লণ্ঠন নিয়ে
করে এপার ওপার ।
বক্ষে নদীর ঝপাৎ ঝপ কেউ কেউ বা দেয় টানা
রাখে হাতে রশি দুটো নৌকা থেকে
উঠলে পরে চোখে মুখে তোল তোল বলছে মাঝি
ভেসে ওঠে খুশি । ওদিক থেকে হেঁকে ।।
মাঠের ঘাটের জল নিয়ে
থৈ থৈ বড় খাল
গভীর জলের বড় মাছ
ধরতে মায়াজাল ।
জলের তলায় খাড়ায় টানা চলতে পথে পায় সে বাঁধা
উপরেতে ভাসমান ওদিকে কি আছে
বাঁশ খুঁটির কলকব্জায় ধাঁধা নিয়ে লাফিয়ে উঠে
হয়েছে টানটান । জড়ায় জালের মাঝে ।।
এভাবেই রাত দিন
পুরো বর্ষা বেলা ।
ধরতে মাছ নানা উপায়ে বাঙালি ভাতে রাখতে পাতে
ধরে নানান খেলা । ভাসায় খুশির ভেলা ।।
_________