শালির মেয়ের বিয়েতে এসে ঘনশ্যাম বাবু
স্বঘোষিত বরকর্তা , সবেতেই খায় হাবুডুবু ।
এক ডাকে সবাই চেনে , আছে না ভুঁড়িখানা
কতটা যে খেতে পারে সকলের তা জানা ।
খাওয়ার খোটা ঠিক নয় ! আসি এর পরে -
বিয়ে শেষ হতে হতে রাত পৌঁছে গেছে ভোরে ।
একটু বেশী খেয়েছেন ! শালির মেয়ের বিয়ে ;
মুশকিলে পড়েছেন , কোথায় ঘুমাবেন তা নিয়ে ।
যে ঘরেই যান উনি , সবেতেই লোক ভরা ;
মাথা চুলকান আর ভাবেন –  কি-ই যায় করা  !
পা আর চলে না , ঘুমে চোখ পড়েছে ঢুলে
চিত হয়ে পড়লেন শুয়ে , ভাঁড়ার ঘর খুলে ;
শুতে না শুতেই ঘুমে কাদা , শুরু নাক ডাকা
ঘুমঘোরে দেখতে পেলেন – নিজের ছবি আঁকা !


রাবণের ভাই ঘনশ্যাম , ঘনাই বীর কুম্ভকর্ণ
না না ঠিকই দেখছেন , ভুল হচ্ছে না এক বর্ণ ।
ওরেঃ বাবা ওদিকে কি ? চলছে রাম রাবণের যুদ্ধ
মেঘনাথের শোকে রাবণ হয়ে উঠেছেন ক্রদ্ধ ।
বিভীষণ সঙ্গ , রামানুজ –  করে অন্যায় ভাবে হত্যা  
এক ঘায়ে করতে শেষ কুম্ভের শরণাপন্ন অগত্যা ।
ঘুম ভাঙাতে রাবণ দাদা , লোক পাঠায় দলে দলে
কেমনে জাগবেন ! ঘুমিয়েছেন অনেক কষ্টের ফলে ।  
এত ডাকি এত ডাকি ,  সারা কভু নাহি পায় -
দলে বলে তৈরি হয়ে সব – যুদ্ধ সাজে ধায় ।
পদাতিক সৈন্যের  দল ওঠে লাইন দিয়ে গায়ে
এদিক ওদিক খোঁচা দেয় – কেউ হাতে ,  কেউ পায়ে ।
কেউ বুকে দাপাতে থাকে , কেউ কেউ নাকে মুখে
ফুঁৎকারে ওড়ায় সবগুলোকে  নিঃশ্বাসের এক ফুঁকে ।
কানের কাছে গিয়ে কেউ সানাই জোরে বাজায়
রেওয়াজে ঝালতে গলা কেউ কর্কশ-তীক্ষ্ণে সাজায় ।
উঠে পরে যদি রাগ করেন ! মাথার পাশে গিয়ে
অনবরত বাতাস , কেউ কেউ হাত পাখা দিয়ে ।
বগলে ঢুকে সুড়সুড়ি দেয় , কাতুকুতুতে তুলতে
কোন এক অবোধ সৈন্য টানছে ধুতি খুলতে  ।  
প্রচুর জল ঢেলে দিয়েছে , কাদা কাদা চারিপাশ
রেগে গিয়ে কেউ বল্লাম দিয়ে , এই রে সর্বনাশ !
তাতেও তো জাগছেন না , আর কি করার আছে
সুগন্ধি সব খাবার এনে রাখল নাকের কাছে ।



সুগন্ধিতে ঘুম ভাঙে , খাবার ! মুখে তুলতে যাবে
কি সর্বনাশ কি হয়েছে ! এতক্ষণ ছিল কিভাবে ?
স্বপ্নের কুম্ভকর্ণের চোখে ঘুম ভাঙতেই ঘনা
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নোংরা আবর্জনা  !
পদাতিক যে সৈন্যদল গায়ে দাপিয়ে , খুঁচিয়ে ছিল
খুঁটে খুঁটে সে পিঁপড়ে গুলোকে সরিয়ে ফেলে দিল ।
মাইক নিয়ে গলা খুলে রেওয়াজ করল যারাই
ঘনা – ‘ এত মশা একসাথে কি করে যে তাড়াই ‘ !
মাথার পাশে এত করে যারা পাখার বাতাস দিল
হঠাৎ করে সেই মাছি কটা – হাঁড়ির টান নিল ।
বগলের চুলে  সঃর-সঃর–সঃর , চুঁ – চ্যাঁ – চুঁ – চোঁ
হায় হায় হায় বগলের কাছে একরত্তি ছুঁচো ।
ইস ছিঃ মাথার চুলে কাদা–জলে যেন পুকুর
উঁ উঁ না জল নয় , এটা ঠিকই মুতেছে কুকুর  ।
ঐ দেখ তাঁর ধুতিটা টেনে ছিঁড়ে কি করেছে হাল
এভাবে কাটতে পারে ইদুঁরই , আঁচড়েছে বিড়াল !
লাল লাল ফুলে ঢোল , তবে বল্লামে খুঁচে নয় ;
বোঝাই যাচ্ছে মশার হুলে , বড় জ্বর টর না হয় ।
যার গন্ধে ঘুম ভাঙতে হয়নি একটুও দেরি
হাত দিয়ে দেখলো ঘেঁটে ওটা - আরশোলার নেরি ।


                           --------