' অগ্রায়নের প্রথম লগ্নের দিনটি খুবই শুভ
মা জননী, বলেন যদি আরেকবার দেইখা নিবো '
' দাঁড়ান দাঁড়ান ঠাকুরমশাই আর খানিক সবুর করেন
ছেলেমেয়ে আইসা পড়লেই , ধৈর্য একটু ধরেন ।
ঐ তো আইসা পরেছে , কি বাবা তোমাদের কথা হল? '
ছেলের মুখে হাসির ছাপ , মেয়েও উৎফুল্ল ।
বিয়ের আগের পাকাদেখা , সম্পূর্ণ দেখাশোনা করে
নিজেদের বুঝে নিতে পাত্রপাত্রী গেছিল ছাদের পরে ।
আগেই দুপক্ষের পছন্দ ছিল ছবিতে-  ছবি দেখে
দিনক্ষণ তাই হচ্ছে ঠিক দুজনকে সামনে রেখে ।
ছেলে ভালো চাকরি করে , মেয়েও শিক্ষিতা সুন্দরী
ফিসফিসিয়ে ভাসছিল ,  দুটিতে মানাবে ভালো জুড়ি ।
মেয়ের মা - 'কিরে এতক্ষণ ধরে কি বলছিলি কথা'  
মেয়েটির মিস্টি দৃষ্টি ছিল , পাত্র বসেছিল যথা তথা ।
মেয়ের বাবা - ' কি বাবা বল যদি দিনক্ষণ ঠিক করি '
সব উৎসুক দৃস্টি প্রশমিত হয় দেখে হ্যাঁতে ঘাড় নারি ।
' ঠাকুরমশাই তবে দেখে নিন হোক ওই লগ্নেই বিয়ে
দুই পরিবার এক হয়ে যাই - ওদের মধ্যে দিয়ে । '
পাত্র গেলে করতে প্রণাম , টেনে নিয়ে বুকে
' বড়ো হও ভালো থেকো , মেয়েটাকেও রেখ সুখে । '
' ভয় নেই মা আমি ওকে পূর্ণ স্বধীনতা দেব
নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন ওর পুরো দায়িত্ব নেব ।'
হরষিত হয়ে মায়ের হৃদয় গর্বে উঠল ভরে
উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ সব উঠলো ধন্যি ধন্যি করে ।



সমাজ ! তুমি বানিয়েছ হায় -
পুরুষেরা নাকি স্বধীনতা দিলে স্ত্রী বাধিত হয় !
পুরুষেরা নাকি করলে দয়া নারী হয় পুলকিত ?
পুরুষের দাক্ষিণ্যে নাকি স্ত্রীরা কিতার্থিত !


সমাজ ! একি বানিয়েছ তুমি -
শশুরবাড়ী নাকি হয় মেয়েদের নিজ ভূমি !
স্বাধীনতা  জন্মগত নাকি কেউ করবে দান ?  
'' স্বাধীনতা দেব '' তে হায় জয়ধ্বনির গান !


সমাজ ! তুমি নিজেই বলো -
এ সম্পর্কের মলিনতা কেমনে হয় ভালো !
যে অধিকারকে হর্ষন করে সে কল্যাণকর হয় ?
যে স্বাধীনতাকে বিঘ্ন করে সেকি মঙ্গলময় !



নারী ! তোমায় বলিহারি -
তুমিতো একজন মানুষ , নাকি তারও আগে নারী ।
স্বাধীনতা করছে দান , তুমি আহ্লাদে আটখানা ?
আসলে ওরা করছেটা কি বুঝেও বুঝছো না !


নারী ! আদৌ তুমি মানুষ -
মানটা কোথায় দেখ খুঁজে , ফিরল কি হুঁশ !
মানুষের হাটেবাজারে নিজের ব্যক্তিত্ব বিক্রি কর ?
দুহাত পেতে  স্বাধীনতা ভিক্ষা বৃত্তি করে মর !


নারী ! হও সচেতন -
মানুষ হও মানুষ , আর কতদিন রইবে অচেতন !
স্বাধীনতা ছিনিয়ে নাও , স্বাধীনের বুক চিরে ....
বুঝিয়ে দাও স্বাধীনতা , তুই দিবি কিরে ?