বিশ্বজুড়ে এক চিত্র
দেখবে তো চলো মানুষের শ্রেণি চরিত্র।
ওই দেখো এক শ্রেণির মানুষ
ভোগ বাসনা ও অর্থ-লালসায়
ছুটছে ক্রমাগত ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো।
এদের লালসা এতো তীব্র
অন্যদের কথা ভাবা দুরস্ত
আকাশ তাদের মাথায় ভেঙ্গে পড়লেও
নিজেদের ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববার নেই
কোনও অবকাশ
দেখো,জনগণের বিশ্বাসের আঁতুড়ঘরের দেওয়াল
ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে ওদের লালসার
লকলকে জিভ আর ওরা ছুটছে ক্রমাগত
ক্ষুধার্ত নেকড়েদের মতো।
ফলশ্রুতি?
এ দৃশ্য দেখে সাধারণ জনগণ ভীত-সন্ত্রস্ত।
সমাজে থার্মোমিটারের পারার মতো তরতর করে
বাড়ছে ধনী-দরিদ্রের আর্থিক বৈষম্য।
বোধগম্য হবে নিশ্চয়, দেখো চারদিকে
মরুভূমির ধূসর তপ্ত বালুকার উপর
যেন এ-সমাজ দাঁড়িয়ে আছে
সাধারণ মানুষের টিকে থাকা দায়,
তারা এতোই অসহায় !
এখন সমাজ তো আর বাগিচা নয়
বেড়ে উঠছে বিষবৃক্ষের মতো।
সাক্ষী ধ্রুবতারা,
সমাজে সর্বহারাদের দুর্ভাগ্য বৈকি!
ব্যতিক্রমী ঘটনা থাকলেও মূলত
মানুষের মেধা-সম্পদের পাশাপাশি
শারীরিক সক্ষমতার ভিন্নতার কারণে
দেখো সমাজে আর্থিক বৈষম্য মাথা তুলছে
সুউচ্চ মিনারের মতো।
ভাবো,যদি এই বৃদ্ধির প্রবণতা কমতো
কিবা তাকে প্রতিহত করা যেত
হয়তো সমাজ একটি সুরম্য বাগিচা হতো।
কিন্তু দুর্ভাগ্য! দুরারোগ্য এই ব্যাধি বাড়ছে
ক্রমাগত ক্যানসারের মতো।
এই বৃদ্ধির আছে কি কোনও গাণিতিক সূত্র ?
বলি, ‘দুর্নীতি’ মানে কি কোনও রীতিনীতি?
সেও যদি মেনে চলতো !
দেখো,বৈষম্য মাথা তুলছে সুউচ্চ মিনারের মতো,
এই বৈষম্যের চূড়ায় নীল বাতি-স্তম্ভ,
তলদেশে সাধারণ জনগণের প্রাণবায়ু।
অস্থির এই মিনার কাঁপছে থর থর!
যতই মিনার মাথা তুলছে আকাশের দিকে
দেখো, হেলে পড়ছে পিসার মিনারের মতো,
এর সঙ্গত কোনও কারণ আছে কিনা
ভাবছি যখন দেখছি, চুল উসকো-খুসকো
হাড়-কঙ্কাল সার এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক
বাবুদের পরিত্যক্ত একখণ্ড ছেঁড়া কাপড়ে
কোনক্রমে লজ্জা নিবারণ করে হাতে
অ্যালুমিনিয়ামের এক তোবড়ানো থালা
তার একমাত্র সম্বল নিয়ে স্থির হয়ে পাশেই
এক প্রাচীন বৃক্ষের মতো বসে আছে।
‘এ মিনার বইতে পারবে আর কত ভার?’-
ভাবছি যখন,জানো, বৃদ্ধ বলে উঠলো
‘সমাজে জনগণের আর্থিক বৈষম্যের স্তম্ভটা
পিসার মিনারের মতো হেলে এখন
মুখ থুবড়ে পড়ার অপেক্ষায়’।
এখনি থরথর করে কাঁপছে মাটি,
বলবো কি তোমাকে!
ভাবছি,তার এই উক্তির ভিত্তি আছে কি?