বলছি, ‘বসলেই সময়ের অপচয়
হবে কি’?এ কথা ভাবছো নাকি?
বলি,সন্দেশও জুটতে পারে,বৈকি!
প্রতিবেশী ভোজন রসিক শৃগালটি
সেদিন বিড়াল তপস্বী সেজে এসে
কী বলে গেলো,জানো?
উঠোনে বসে বলে গেলো,আমিষের
প্রতি তার আসক্তি আর নেই এক
রত্তি।নিরামিষ খাবার খেয়ে তারই
প্রতি জেগেছে আসক্তি।আজকাল
ভক্তিভরে খাচ্ছে এই খাবার।
বলো,তার সেকথা শুনে কিভাবে
ঠেকাবো অট্টহাসি?পারিনি,সত্যি।
হো-হো করে হেসে উঠতেই সে
মাটিতে মাথাটি ঠুকে কী বললো,  
জানো?তার সমস্ত বদনাম নাকি
ঘুচিয়ে ফেলেছে।কু-অভ্যাস বদলে
কাজ নিচ্ছে সবার বাড়ি প্রহরার,
শুধুই দু’মুঠো নিরামিষ খাবারের
বিনিময়ে,গিন্নী-মায়েরা যে যা-ই
দেন সদয় হয়ে।  
রাত জেগে সব বাড়ির মুরগীদের
পাহারা দেবে বলে অঙ্গীকার বদ্ধ
হয়ে ‘দুর্গা’র শত নাম জপ করতে
করতে সে চলে গেল।বিশ্বস্ততার
প্রতীক হতে খেতেও শুরু করলো
নিরামিষ।
সে কথা সর্বত্র হলো জানাজানি।
চারিদিকে কানাকানি ও চললো।
আমি নিজেও দেখেছি তার সেই
কাণ্ডকারখানা।
বলি,পরে সে কী কাণ্ডটা ঘটালো!
বাড়ালো সকলেরই জীবন যন্ত্রণা।
‘কথা দিয়েও কথা রাখেনি’।এখন
এই কথাটি বাতাসে কান পাতলে
শুনি।
রাতের অন্ধকারে সে খেয়েছে সব
মুরগীগুলোকে।এই ঘটনাটি জানার
পরে তাকে দেখলে এখন শরীরটা
ঘিনঘিন করে রাগে।
এই কাণ্ড ঘটানোর পরে চারদিকে
এখন খুবই ঘোলাটে পরিবেশ।তার
সাথে আবারও যুক্ত হলো আরেক
কাণ্ড।
যখন শৃগালের উৎপাত সহ্য করা
দায়,সেই সময় শুনছি তাকে নাকি
উত্তম মধ্যম দেওয়ার নেই কোনো
উপায়।
এ কী,আজব কাণ্ড,শুনি।পশুপ্রেমীরা
নাকি পশুকে নির্যাতনের খোঁজখবর
পেলে পুলিশকে ডেকে এনে বাড়ির
কর্তা ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে গিয়ে তুলে
দেয় আদালতে।হায়রে,এ কী ঘোর
দুঃসময়।ভাবতেও যেন কষ্ট হয়!
‘তাকে পাশে নিয়ে বেঁচে থাকা যে
দায়’,সে কথাটি তাদের কী করে
বোঝাই?জেনে রাখো,তাকে বয়কট
করা ছাড়া কোনও গত্যন্তর নাই।
ইতিহাস বই পড়তে গিয়ে ‘বয়কট
আন্দোলন’এ বিদেশী দ্রব্য সামগ্রী
বর্জনের কথাটি জেনেছি বটে,কিন্তু,
এই শৃগালের মতো কোনো পশুকে
বয়কটের কথাটি শুনিনি আগে।
বলি,বইয়ে যে কথাই লেখা থাকুক,
জনগণ কোনও কথাই শুনবে না।
এই শৃগালটিকে সকলেই বয়কট
করবে রেগে।
সে কারণে প্রয়োজনে আগামী দিনে
হয়তো ইতিহাস বইয়ে সংযোজন
হবে আরও একটি নতুন অধ্যায়,
যেখানে লেখা থাকবে,‘মানুষেরা
কপট এবং হিংস্র পশুদের বয়কট
করেছিল বাঁচার তাগিদে’।