মনে কি পড়ে সে একটা সময়
ছিল যখন সন্ধ্যারাতে নিকানো
ঘরের দাওয়াতে আলো-আঁধারে
প্রত্যহ জমজমাট গল্পের আসরও
বসতো?
ভেবে দেখো,সবাই জানতো নিত্য
এই আসর জমানোর জন্য বক্তার
পারদর্শিতার খুবই দরকার আর
সকলে সংশয়াতীত ছিল একাজে
তার জুড়ি মেলা ভার। তাই তার
কাছে অনেকে প্রত্যহ গল্প বলার
আবদারও করতো।
ভাবো,তাদের কথা রক্ষার ব্যাপারে
মগজ থেকে গল্পগুলো বের করে
আনতে কতটা চুল ছিঁড়তে হয়?
তবুও বলি,‘মমতা’ যার অন্তরে
জাগ্রত,সে কি সেসব আবদারকে
ফেরাতে পারে?কাজ দুরূহ হলেও
সে এ কাজটি করতো নিয়ত।
সকলে বলতো,সে তার মগজকে
খাটালে ‘গাণিতিক সূত্র’গুলি ধরে
নাকি অদ্ভুত অদ্ভুত নানান গল্পও
বেরিয়ে আসতো।
বলি,চমকে উঠছো কেন এখনি
‘গাণিতিক সূত্র’ কথাটিকে শুনে?
কোনও সংশয় রেখো না মনে।
সূত্র আছে বৈকি,‘আরোহণ এবং
অবরোহণ পদ্ধতি’তে প্রতিষ্ঠিত।
আর তাকে আরোহণ পদ্ধতির
খ্যাতনামা একজন গণিতজ্ঞও
বলা যায়।
ভেবে দেখো,তুমি তো দেখেছো,
বটগাছের ঝুড়িগুলো ধরে সেও
তার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলো
কতবার।
অবশ্য সেসব করার সময় পড়ে
গিয়ে কয়েকবার চোট আঘাতেও
হয়েছে জেরবার।
যাক গে সেকথা।রোজই সে তার
ঝুলি থেকে একে একে গল্প বের
করে তাদের যেসব আষাঢ়ে গল্প
শোনাতো,তাতে কল্পকথার সাথে
মিথ্যার বহরও কতখানি থাকতো
সেসব জরিপ করার ব্যবস্থা ছিল
না তখন।
তবে দেখেছি শ্রোতারা সময়ের
স্রোতে গা ভাসিয়ে দিতো।আর
গল্পও গড়াতো যেন অষ্টপ্রহর।
অবশেষে বাহবা কুড়িয়ে নিয়ে
সেও ঘরে ফিরে যেতো আসর
থেকে।
একদিন বললো সে,সাপ-লুডু
খেলায় তার পারদর্শিতার কথা।
খেলার শুরু থেকে তরতর করে
সিঁড়ি বেয়ে উঠতো বারবার।এই
খেলায় তার হতো জয়জয়কার।
লখিন্দরের মতো ভয়ঙ্কর দশাও
হয়নি কখনও।
তবে বুঝেছে সে,সাপও নাকি
রয়েছে তাকে ছোবল মারবার
প্রতীক্ষায়।