শান্ত-স্নিগ্ধ বাড়ি ছেড়ে    
কর্মব্যস্ত অফিসের ঘরে
ল্যাপটপের সামনে বসে    
নানাবিধ তথ্য-তালাশে
ব্যস্ততার ফাঁকে অবসরে
চিত্রলেখা বসে এক ঘরে  
জেনেছে দৈনিক সংবাদে    
পাড়া-পড়শিরা বিবাদে
জড়িয়ে সারাটা দিনভর
কাঁপালো পাড়া,বাড়িঘর।


চিত্রলেখা বিচলিত হয়ে
কাজ শেষে ভয়ে ভয়ে
অতিশয় ব্যস্ততার সাথে    
বেড়িয়ে পড়লো ফুটপাথে।
সে,মোর স্কুলের-বান্ধবী    
চিরকাল বিনয়-স্বভাবী।
যখন পড়তো কলেজে    
তখন ভালবাসায় মজে
বিয়ে করলো সে মাঘে
এক সহপাঠীর দাদাকে।


তাদের সুখের সংসারে    
ডেকে বন্ধুদের সবারে
গানের আসর বসাতো    
রবিবার রাতে নিয়মিত।
চাইনিজ ও মোগলাই      
চলে আসতো সবটাই
রেস্টুরেন্ট থেকে ঘরে    
চিত্রলেখার আবদারে।


অর্থ-কড়ি বেশ ছিল      
কাটতো তাদের ভাল
ছিল নাকো বেড়াজাল    
জীবন মসৃণ,নির্ভেজাল।
কন্যা জন্মালো তাদের    
সংসারে বড় আদরের  
বড়ো হলো স্নেহ-কারে    
বেড়েছে গায়ে-গতরে।    


একদিন দম্পতি তাকে    
প্রতিবেশীর কাছে রেখে
সহমতে এক অনুষ্ঠানে    
গেল সেদিন অপরাহ্ণে।
রাত্রিতে নিমন্ত্রণ সেরে    
দম্পতি ফিরছিল ঘরে
এক বাস চকিতে এসে    
গৃহস্বামীকে দিল পিষে।


সেই বিপত্তির সূত্রপাত    
জীবনে ঘাত-প্রতিঘাত
সর্বস্ব হারিয়ে চিত্রলেখা    
পড়লো ললাটের লেখা।
বেরলো সে রোজগারে    
নানান অফিস দরবারে
ঘুরে ফিরে এক অফিসে    
করণিক পদে গেল সে।


কর্মব্যস্ত সেই অফিসের    
ঘরে চিত্রলেখা দিবসের
নির্ধারিত কাজের শেষে    
তার লব্ধ আত্মবিশ্বাসে  
ফিরতো আপনার ঘরে    
অশেষ তড়িঘড়ি করে।
দু’হাতে বাজারের থলি    
ললাটে জাগরিত বলি,
রোজ ঘাম ঝরা শ্রমে    
এক বর্ষে গেছে দমে।


স্কুলে প্রথম তাকে দেখা    
ছবি আঁকত চিত্রলেখা    
তার আঁকা এক ছবি    
রূপবতী মাতা ভৈরবী
এক শিশু-পুত্রকে চুমি    
কোলে নিয়েছে জননী।
তার আঁকা সেই ছবি    
দেখে প্রলুব্ধ হয় কবি।