ওরে, চল চপলা!
তোর এ কী সাধ?- পাই না ভেবে কেন যে
ফুলে ফুলে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াস
ডানা মেলে?
ফুলেরা করে কী দেখিস কি? চেয়ে দেখ ওরা
ঢলে একটু বাতাসের ছোঁয়া পেলে।
ওরা গন্ধ বিলতেও ব্যস্ত। সে ওদের সহজাত
প্রবণতা। কে জানে, তোকে মোহিত করতে কি
ওদের আছে কোনও বাধ্যবাধকতা?
চল চপলা! একথা সত্য, অগণিত ফুলের ভিড়ে
হারিয়ে যেতে পারিস অবলীলায়। কোনও ফুলে
মোহিত হয়ে ছুটে যেতে ও পারিস সে ফুলের
আঙিনায়, প্রেম ভালবাসায়।
স্বপ্ন-রাশি ভাসে কি দু’নয়নে? স্বপ্ন তরী নিয়ে
ভাসতে ও পারিস অজানা সাগরে। সবসময়                        
তোর চোখেমুখে ও ফুটে উঠতে পারে ফুলের
হাসি।
ভেবে দেখ ক’জন চিরকাল এ হাসি কে ধরে
রাখতে পারে? দুঃসময় জীবনে চোরাগোপ্তা                      
হানা দিলে, কত কী ঘটে! আকাশে জমে নাকি
বেদনাসিক্ত মেঘ?
হায় রে, মেঘেদের এ কী দায়! সেসময়ও যেন
নেই ছাড়। দু’নয়নে অফুরান জলরাশি ধরে
রাখতে হয়।
কালস্রোতে সারাদিন মেঘমুক্ত আকাশ দেখার
সৌভাগ্য ক’জনার হয়?
ওরে চল চপলা, নির্দয় আমফান এলে নড়ে ওঠে
পলকা ঘরদোর। পর্দার আড়াল থেকে নখ দন্ত
বের করে হার না-মানা রাতের অন্ধকার।
ব্রাক্ষ্মণ বেশী শুকতারা যখন ঢাকা পড়ে কালো
মেঘে, চারদিক আঁধারে ছেয়ে যায়, ভেবে দেখ
আকাশের কী আসে যায়?
মন! ভেবে দেখ আকাশ মেঘে ঢাকতে কি খুব
বেশি সময় লাগে? তাই তুই ভেবেচিন্তে সামনে
পা বাড়াস।
আশ মেটাতে ইচ্ছা হয়? ভাবিস ভ্রান্তির বশে
কত কী ঘটতে পারে?
ভেসে বেড়াবি মেঘের ভেলায়? ক্ষতি কী, তবে
সবসময় রাশ আলগা করলে সর্বনাশ।
মন, ভেবে দেখ বিরহী মেঘ বইতে পারে কত
অশ্রু ভার? নিরুপায় হলেও সম্পর্কের খাতিরে
তখনও সে সাধ্য মতো ভার ধরে রাখতে চায়।
বাঁধভাঙা নদীর মতো তার দশা হলে ভেবে দেখ
শিয়রে সংকট কী দাঁড়াতে পারে?
আকাশ হুড়মুড়িয়ে মাথার উপর ভেঙ্গে পড়লে
দু’নয়ন দিয়ে অবিরাম অশ্রুও ঝরতে পারে।