শৈশবে গ্রাম ছেড়ে আসার পরে এই প্রথম
সেদিন বেশ রাত অবধি কথা হলো তার
এই বন্ধুবরের সাথে।আগে একসময় তার
সাথে কাটতো সারাক্ষণ।প্রতিদিন তাদের
একত্রে চলাফেরা করতে দেখে অনেকেই
বলতো,‘দেখো,দুই হরিহর আত্মার হয়েছে
আগমন’।
তারপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভিটেমাটি ছেড়ে
চলে এসেছে হরিশ্চন্দ্র, সেও পেরিয়ে গেল
বহু বছর।দীর্ঘদিন পরে দীর্ঘক্ষণ তার সাথে
একান্তে আলাপচারিতায় সেদিন সে বন্ধুকে
বলেছে,একটি তেলের ঘানির মালিক হয়ে
এখানে বেশ আছি।এই কাজের জন্য বহু
কলুর বলদ পুষেছি।
মা-মাসী এবং অন্যান্য পাড়া প্রতিবেশীদের
এই খবরটা দিয়ে দিও।আরও বলো,গেঁয়ো
মানুষ হলেও শৈশব থেকেই গৌরী সেনের
মতোই দানশীল হওয়ার আমার যে ইচ্ছাটা
ছিল সেও এখন পূর্ণ হলো।
ধূপ ধুনো জ্বালিয়ে সেই সাধকে পূর্ণ করতে
দানসত্র খুলেছি ঘটা করে। আয়-উপার্জন
বাড়ানোর সামর্থ্য না-থাকায় প্রথমে খুবই
সমস্যা ছিল।তবে ভেবে চিন্তে খুঁজে পেয়েছি
সমাধানের বিকল্প রাস্তা।শুনবে কি সেসব
কথা?ব্যয় সংকোচন করবার জন্য করেছি
কিছু চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত।
সেসব খুব গুপ্ত রহস্য।দেখি,এ যুগে শার্লক
হোমসের মতো ঝানু গোয়েন্দা কে বা কারা
আছে,যারা সেটি ভেদ করতে পারে?তাছাড়া
কর্মী সংকোচনের উদ্যোগ নিয়েছি।খুব বেশী
প্রয়োজন ছাড়া কর্মী নিয়োগ বন্ধ।আর ঘানি
টানা কলুর বলদদের চোখ তো বাধা আছে,
তাদের খিধে পেলে না-খেয়ে থাকলেও তারা
করবে না টু-শব্দ।দানসত্র টি চালাতে আর
সমস্যা হবে না মোটে।