বলবো কী আর যেটুকু দেখেছি সে যেন
ছারপোকার উৎপাতের মতো ব্যাপার।
জানো,ভেবে পাই না দরকার ছিল কিনা
কুটকুট করে মোটাসোটা ও বলিয়ান এক
দেহধারীকে বারংবার কামড়ে ধরার তার
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায়।
কাকাতুয়া বলে গেল,বহুবার এর প্রতিবাদ
জানিয়ে সুরাহা হলো না তার।শান্তি রক্ষিত
হলো না আর।
চেয়ে দেখো, আকাশে মেঘের ঘনঘটা,ধেয়ে
আসছে বিদ্যুতের ঝলকানি।এমনি দশা হলে
দুর্যোগ দেখা না-দিয়ে কি থাকতে পারে?
হায় রে,এ কী দশা এ বিশ্বসংসারে!দুয়ারে
অশনি কড়া নাড়ে। সংকট শিয়রে।
ইতিমধ্যে হয়তো পেয়েছ সে খবর এ যুগে
এসেও বাঁধলো আবারও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ।
পাণ্ডবরা ও কৌরবরা যেন দুই প্রতিপক্ষ।
লড়াই করছে সেয়ানে সেয়ানে,সেই ভূখণ্ড
ইউক্রেনে।
জানো,যুদ্ধাঙ্গনে মরছে সে দেশের অগণিত
নিরপরাধ মানুষ ও দুই প্রতিপক্ষের অজস্র
সেনানী। রক্তগঙ্গা বইছে অবিরাম। হায়রে,
তবুও ফিরছে না তাদের কারো হুশ। বরং
কথাতেও বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে নিয়ত।
ভাবি বসে, কেন যে ছারপোকার কুটকুট
করে কামড়ে ধরার অভ্যাস বিলুপ্ত হলো
না এখনো? বলবো কী আর এখনো দেখি,
সে কাজ করে যাচ্ছে এই পতঙ্গটি বহাল
তবিয়তে। জানি না,সেটি একবারও ভাবে
কিনা এর ফলে ঘটতে পারে হিতে বিপরীত?
ত্বরিতগতিতে এ যুদ্ধ হয়তো ছড়িয়ে পড়তে
পারে দেশে দেশে।
পারমানবিক যুদ্ধের আশক্ষা? দেখি,সে ভয়ে
থরথর করে কাঁপছে ভূধর।জেনেছি,অসংখ্য
মানুষের মনের অলিন্দেও নাকি পৌঁছেছে
সে খবর।
যুদ্ধবাজরা ভেবেছে কি এ যুদ্ধের পরিণতি?
কখন কোন দিকে হেলে পড়তে পারে?দেখো,
উভয় প্রতিপক্ষ জড়ো করেছে কী বিশাল
অস্ত্রের সম্ভার। এ যুদ্ধক্ষেত্রের কী ভয়ানক
দশা। মুহুর্মুহু রকেট হানা থেকেও নেই সে
দেশের আপামর নিরীহ শিশু ও নারীদের
নিস্তার।
ভাবি, ক্ষমতার দম্ভে যুদ্ধবাজরা বাস্তবের
মাটিতে দাঁড়িয়ে নেই আর। তাদের যার যা
ক্ষমতা থাকুক না কেন,হয়তো তার চেয়েও
বেশি দরকার ছিল কে, কত বেশি স্বাবলম্বী
সেটি হিসাব কষার।
এ যুদ্ধ বিশ্বযুদ্ধের চেহারা নিতে এখনও
বাকি। তাতে কী?এখনি বহু দেশে ঘনিয়ে
আসছে ভয়ানক দুর্দশা।
জানো, কাকাতুয়া বলে গেল এখনি বহু
দেশে ডলারের অভাবে বিশ্ববাজার থেকে
পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হতে বসেছে।
বহু দেশ এখনি দিশেহারা।
ভাবছো, তার চেয়েও ভয় পারমানবিক
যুদ্ধের ভাবনা? মনে হয় এ ব্যাপারে সেই
যুদ্ধবাজরা ভেবে দেখেছে এ অস্ত্র একবার
ব্যবহার করলে নিজেরাও বাঁচবে না।যদি
এটি ভেবে থাকে তাদের কেউ সে পথে
যাবে না।
বরং দেশে দেশে অর্থ ও নিত্যপ্রয়োজনীয়
সামগ্রীর সরবরাহে তারা নিষেধের গণ্ডী
বাড়াতে বাড়াতে এখন পরিস্থিতি এমনি
দাঁড় করালো দেশগুলো নিজেরাই সুড়সুড়
করে পৌঁছে যাচ্ছে বন্দীশালায়।
‘স্বাবলম্বীতার প্রশ্ন’, যে কথা বলেছি আগে।
হয়তো তারা ভাবেনি,এ বিষয়ে কোন কোন
দেশ কোথায় দাঁড়িয়ে?বলবো কী আর,এখনি
বহু দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-পণ্য,ওষুধ
সহ চিকিৎসার সরঞ্জামের শুরু হলো বেশ
টানাটানি।
এবার আলো-বাতাসের অভাবের মতো সব
দেশে দাঁড়াবে সংকট,বাঁচার রসদে। অজস্র
নিরীহ মানুষও মরবে সে সবের অভাবে।
কোনও দেশ-ই পাবে না নিস্তার।
বাঁচার সংকট যখনি মাথার উপর কালো
মেঘ-কুণ্ডলীর মতো ঘনীভূত হয়ে দাঁড়াবে
সেসময় নিজেদের বাঁচার তাগিদেই বাধ্য
হবে যুদ্ধকে করতে পরিহার।
বলবো কী আর,সেও আরেক যুদ্ধ,একেবারে
ভিন্ন চেহারার। এখনি যে, যে ভাবে পারছে
সৃষ্টি করছে দেশে দেশে ডলারের সরবরাহ
সহ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জৈব-জ্বালানী,
এমন কি খাদ্যশস্যের চালানেও অবরোধ।
অচিরে হয়তো বন্ধ হবে মুক্ত বিশ্ববাণিজ্য।
বিশ্বের সব দেশে জনগণের বাঁচার রসদে
শুরু হলে টানাটানি, ভাবো একবার শুরু
হবে নাকি গৃহযুদ্ধ?
বলি, সে পথে যেতে এই তো সবে শুরু।
শোনো,মেঘ ডাকে গুরুগুরু। ভয়ে,আতঙ্কে
তখন যুদ্ধবাজদেরও বুক করবে দুরুদুরু।
এখন সাধারণ জনগণ নিরুপায়। সেসব
সহ্য করা ছাড়া গত্যন্তর নাই। সে অবধি
বেঁচে থাকলে দেখতে পাবে বৈকি,কতদূর
গড়ায় জল,একটু সবুর করো।