সে এক মধু ক্ষণ,আমার জীবনে
আবেগের কুঁড়িটি প্রথম ফুটলো
যখন,আমি তোমার কোলে শুয়ে
‘মা’ বলে ডাক দিয়ে আকাশে
বাতাসে তুলেছি আলোড়ন।
মাগো!শোনো,সেই ‘মা’ ধ্বনির
কী অসীম ক্ষমতা!সে তোমারি
মুক্তবেণীর মতন এ বিশ্ব-ভুবনে
ছড়িয়ে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে তুলেছে
অনুরণন।
ভোরের আলোয় তোমার ভাষা
তোমার সব সন্তানদের করেছে
অকুতোভয়।এ ভাষা-সুধা পাণে
তোমার সন্তানেরা আত্মপ্রত্যয়ে
ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়।
এ ভাষায় যখন এসেছে আঘাত
তোমার বীর বরেণ্য সন্তানেরা
ভাষা-আগ্রাসী দের রুখে দিতে
আত্ম প্রত্যয়ে ভাষা-আন্দোলনের
দিয়েছে ডাক।সে লড়াই সংগ্রামে
তাদের আত্মবিশ্বাসেও ছিল না
কোনও ফাঁক।
মাগো,শোনো,শহীদের মৃত্যু নাই।
মানুষের অন্তরে তাদের চিরকাল
ঠাঁই।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর সেই
আন্দোলনে তোমার বহু মৃত্যুঞ্জয়ী
সন্তান শহীদ হলেও তারা বুকের
রক্ত ঢেলে দিয়ে ছিনিয়ে আনলো
মাতৃভাষার জয় নিশান।
শহিদদের গরবিনী মা,বলি,তুমি
তোমার জঠরে তাদের দিয়েছো
ঠাই।শোনো,এ বিশ্বে মাতৃভাষার
জন্য তোমার এই বীর বরেণ্য
সন্তানদের আত্মত্যাগের কোনও
তুলনা নাই।
আমার যাপিত জীবনে তোমার
এই ভাষায় পাই হৃদয়-জুড়ানো
ভাই ও মায়ের স্নেহ-ভালোবাসা।
এ-ভাষা এতোই খাসা,এ ভাষায়
শুনেছি ফোয়ারার মতো হৃদয়ের
গভীর থেকে উঠে আসা প্রেয়সীর
প্রেমের আবেদন,‘তোমাকে আমি
ভালোবাসি’।
মা,যখন যেখানে থাকি মনোহরা
তোমার এই ভাষার অমৃত রাজি
যোগায় নিয়ত প্রাণ ভর প্রশ্বাস।
‘বর্ণমালা’র এমন বিপুল শক্তি
আর কোথাও নেই বলে অন্তরে
জাগে স্থির বিশ্বাস।
মাগো,সেসব মৃত্যুঞ্জয়ীদের স্মরি’
উচ্চস্বরে বলি,সমগ্র বিশ্ব-ভুবনে
চিরকাল অম্লান রবে এই মহান
একুশে ফেব্রুয়ারী।