দূরদূরান্ত থেকে ঘুরে এসে কাকাতুয়া আতা
গাছের ডালে বসে রসে বসে শোনালো সেদিন
তুলে আনা হাল হকিকত এক ঘটনা।
সেটি সমাজের একেবারে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়,
বরং ‘সহস্রধারা ঝর্ণা’ এর একটি নমুনা ।
বললো পাখি, ‘যে যাই বলুক-না কেন,বাস্তবে
শ্রমজীবীদের অনেকে ভাবে, সে-ই একমাত্র চতুর,
মগজ বুদ্ধিতে ভরপুর’ ।                        
দূর থেকে নয়,তাদের ধারে কাছে গিয়ে দেখেছে
জীবিকার ক্ষেত্রে তারা সকলেই বঞ্চনার শিকার।
জনরোষ ফল্গু ধারার মতো বইছে সুদীর্ঘকাল।
রাতে ঘুমলে তারা সকলে স্বপ্ন দেখতো  
বঞ্চনার বিরুদ্ধে তারা তুলছে প্রতিবাদের ঝড়,
মিছিলের শেষ থেকে তাকিয়ে দেখতো,
সামনে বহু দূরে তাদের রোষে চারদিক উত্তাল,
ভালে এবার জুটতে পারে সোনার চামচ-বাটি ।
প্রতিবাদ আন্দোলন দেখে শোষক কি বসে থাকে?
সেটিকে জব্দ করতে পাঠালো লেঠেল বাহিনী।
তারপর? এ যেন শনির আবির্ভাব !
সেই শুরু,কর্মস্থলের ভিতরে ও বাইরে মুখোমুখি
রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম।
পরিণাম ? -ভয়ঙ্কর।
লেঠেলদের অত্যাচারে সামনের সারির
বহু প্রতিবাদী রক্ত স্নাত, মরছে কেহ কেহ।
‘বাঁচাও, বাঁচাও’- বলে তারা করছে চিৎকার !
কেহ পাশে নেই, এগিয়ে গিয়ে সহযোদ্ধাদের
পাশে দাঁড়াতে মনে জাগছে ভয়, এই সময়।
কেননা, জীবনের প্রতি অগাধ ভালোবাসা !
কে বোঝাবে তাদের, এই ভালোবাসা চিরন্তন,
সকলের ক্ষেত্রে সত্য?
তারা দূর থেকে ভাবে,রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে
সাফল্য এলে পিছন সারি থেকে ছুটে আসবে
মিষ্টি মধুর মাঠা কুঁড়তে !
হায়রে,সবার অন্তরে এই বোধ জন্মালে
স্বপ্ন থেকে সরে বাস্তবে ফিরলে কী দাঁড়ায় ?
ওই দেখো,আকাশ মেঘে আচ্ছন্ন।শুনতে পাচ্ছো
কি মেঘের গর্জন ?
যথাসময়ে প্রথম সারিতে কে আর দাঁড়ায় ?
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ?
ব্যক্তি স্বার্থে অনেকে ফুলুরির মতো তেলে ভেসে
থাকায় গড়া সম্ভব হয় না প্রতিবাদ মুখর
বার্লিনের মতো দুর্ভেদ্য প্রাচীর।
এবার, মাঠা খাওয়া দুরস্ত, শোষকের অত্যাচারে
তাদের শরীর থেকে রক্ত ঝরে ।
শুনেছি তাদের ঘুম ভাঙ্গেনি আজও ।