নাবালক অশ্রু ঝরা চোখে বৃক্ষশাখে বসা
বিজ্ঞ কাকাতুয়াকে বললো অতিশয় দুঃখে
জন্মের আগে জানতে পারিনি কত খানি
নিরাপদ আমার এই বাসভূমি।জন্মের পরে
পত্রের মোড়কে ডাকটিকিট সেঁটে দেওয়ার
মতো ধর্মের এক ছাপ জুড়ে দিলো গায়ে।
বুঝিনি তখন,এই ছাপ নিয়ে সারাজীবন
অতিবাহিত করা হবে প্রাণান্তকর।সে সময়
অজ্ঞতার খোলসের ভিতরে বন্দী দশায়
জানতে পারিনি,কতটা সইতে হবে রোদ,
বৃষ্টি,ঝড়।বুঝিনি,বাড়ির দেওয়ালের গায়ে
জমা শ্যাওলার মতো সেই ছাপটি মুছতে    
কতটা চড়া দাম দিতে হয়।
জিজ্ঞেস করলো সে অভিজ্ঞ কাকাতুয়াকে        
বারবার,যখন তুমি নিশ্চিন্তে উড়ে বেড়াও
কত দূর অবধি বিস্তৃত তোমার উড়বার
এই অধিকার।
বললো সে,অধিকার সমূহ সবিস্তারে উল্লেখ
রয়েছে দেশের সংবিধানে।হয়তো সেথায়
আছে নানান ত্রুটি বিচ্যুতি।পদ্ধতি মেনে
তার সংশোধন চলে সব রাষ্ট্রের জন্ম লগ্ন
থেকে।নাবালক প্রশ্ন বাণ ছুঁড়লো একেএকে।
অজ্ঞতায় জিজ্ঞেস করলো তাকে দেশদ্রোহী    
কাকে বলে?কোন নাগরিক কি ‘স্ব দেশের
আইন মানি না’ এই কথা বলতে পারে?
অজ্ঞ তায় বলতে পারেনি স্বাধীন দেশের
কোনও নাগরিক কোন কারণে প্রতিবাদে
পথে নেমে ‘আইন মানি না’ এই কথাটি
কখন বলেছিল কিনা?তার প্রশ্ন বাণে বিদ্ধ
হয়ে সে তখন বসে ইতিহাস ঘাঁটে।
সংবিধান বিষয়ে অনভিজ্ঞ কাকাতুয়া তার
চশমার ঝাপসা কাচের ভিতর দিয়ে সেসব
প্রশ্নের উত্তরের জন্য বিজ্ঞ শিয়াল পণ্ডিতের
পরামর্শের নিদান দিয়েছে তাকে।
উত্তর না-পেয়ে কাটা ঘুড়ির মতো দশাপ্রায়  
নাবালক এদিক সেদিকে ঘুরলো গন্তব্যস্থলের
খোঁজে।শেষে পণ্ডিত মহাশয়ের টোলে পৌঁছে
জেনেছে রাত জেগে পণ্ডিত মহাশয় ঘুমাচ্ছে।