‘সুযোগ দৈবাৎ এলে তাকে পুরো দমে
কাজে লাগাতে বড় বাবুর কোনও জুড়ি
নাই।
পুব পাড়ায় ঘটনা।খবর পৌঁছলো তার
কানে,‘সেখানে সব পাড়াপড়শির মধ্যে
প্রতিদিন বিবাদ ও রেষারেষির কারণে
সকলে তুষের আগুনের মতোই জ্বলছে
ধিকিধিকি’।বাবু ভাবলেন,‘এ সুযোগকে
কি হাতছাড়া করা চলে?’
নৈব নৈব চ।বাবু তখন সেই সুযোগকে
ধরলেন কষি।
সুবর্ণ সুযোগ।মৎসশিকারের অভিজ্ঞতা
খুব।‘পাড়াপড়শিদের মধ্যে রেষারেষি
বেশী হলে জুতসই টোপ দিলেই কেউ
না কেউ সেটিকে গিলবে অবশ্যই’।বাবু
এই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে এ কাজে
নামলে সুফল পেতে তার সময় লাগেনি
মোটেই।
শুনবে নাকি সে ঘটনা?বলছি শোনো।
শুরুতে তার জরুরী ছিল পা-রাখার
একটু জমিন।এক গৃহস্থের সাথে বন্ধুত্ব
করে সেটুকু জমিন জুটিয়ে নিতে তার
অসুবিধা হয়নি মোটে।  
তারপর,আর দেরী কিসে!বাবু সেখানে
পা-রাখলেন সেই মালিকের সম্মতিতে!
পাড়া পরিক্রমার সাধ!ঠিক এ ভাবেই
ধাপে ধাপে এগোতে লাগলেন।
‘বাবু কোথায় কিবা কতদূর যাবেন,আর
কেনই যাচ্ছেন’-সে সব কাউকে বুঝতে
দেননি কোনমতে।সেটুকু কেউ জানলো
না সেই তল্লাটে।
বাবু জানতেন-‘বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে
কোথাও পা বাড়ালে পথে ‘পদচিহ্ন’ রেখে
গেলে ইতিহাসে সাক্ষ্য থেকে যেতে পারে’,
তাই সেই স্থানগুলো একে একে জ্বালিয়ে
পুড়িয়ে করতে হয় ছাই। শক ও হূনেরা
এ কাজ করতো সে যুগে,বাবুও ঝাঁপালেন
সেই কাজে।
সেসব চলছিল বেশ ঠিকঠাক,কিন্তু তিনি
কি জানতেন,সামনে প্রতিবন্ধকতা আছে
কোথাও?কিছু দূর যেতেই তিনি হলেন
প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি।বুঝলেন তখন
বিড়ম্বনার এখন দরকার নাই।নিলেন
ফেরার উদ্যোগ।তবে মাঝপথ থেকেই
ফিরে যেতে হবে?সে কারণে তার দুঃখ
থেকে গেল।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো।আকাশে সিঁদুরে মেঘ।
বাবু ভাবলেন,প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের
বেশ জুতসই শিক্ষা দেওয়া দরকার।রেখে
যাবেন পাড়া পড়শির নিজেদের মধ্যে
বিবাদ বাঁধানোর যাবতীয় সরঞ্জাম।
এবার পাড়া পড়শিরা হয়তো আর এক
জটিল সমস্যার মুখোমুখি।সেসব নিয়ে
করবে কি?নিজেদের মধ্যে মারামারি
হতে পারে,আর কী!
দুর্ভাগ্য একেই বলে?শুনেছি,সকল পাড়া
পড়শিরা বাবুর রেখে যাওয়া সিঁড়ি ভাঙ্গা
অঙ্কের মতো জটিল সমস্যা নিয়ে এখনো
ভাবছে না মোটেই।কিন্তু পাড়া পড়শিরা
তাকে না-এড়িয়ে আর সেই সাথে তাদের
সব বিবাদ মিটিয়ে একত্রে চললে হয়তো
ভালো হতো!