তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা যেখানে ছিল তার
পাশের তেঁতুল গাছের ডালে বসে কাকাতুয়া
বললো সেদিন,বিশ্ব ভুবন ঘুরে দেখেছে দেশে
দেশে চলছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা’।
এ খেলায় যেন কলিঙ্গ যুদ্ধের চেয়েও বেশি
বইছে রক্ত-গঙ্গা।ব্যথিত কাকাতুয়াও অন্তর
থেকে চেয়েছে বন্ধ হোক এই খেলা।তবুও
নদীজল এখনও হচ্ছে রক্তে রাঙা।  
বৃদ্ধ বয়সে বুঝেছে খেলাটি বন্ধ হওয়ার নয়
কারণ দেশে দেশে বিজ্ঞের বংশ বৃদ্ধি চলছে
মৌমাছিদের মতো।দেশ-বিদেশে বিজ্ঞরা কেহ
শুনতে চায় না অন্যের উপদেশ।বরং সর্বদা
তারা বিবাদে রত।
এ খেলায় চলছে অস্ত্রের বেচাকেনা।সে জন্য
গড়ে উঠছে বিশাল বাজার।সেখানেও চলছে
জুয়ারিদের কারবার।তারা ফুলঝুরির মতো
টাকা উড়ায়।
জুয়ারিদের সাথে বেপারীদেরও বাঁধা আছে
গাঁটছড়া।এই কারবারে উভয়ের হয় বিশাল
অঙ্কের অর্থ রোজগার।খরিদ্দার জোটে বেশ।
স্বদেশে অস্ত্রের মজুত ভাণ্ডার গড়তে সেখানে
এসে ভিড় জমায়।
কাকাতুয়া তথ্য দিয়ে দেখিয়ে দিলো যুদ্ধের
খাতে সারা বিশ্বে যে বিশাল অর্থ ব্যয় হয়
সেই অর্থে গাণিতিক নিয়মেই বিশ্বের সকল
দেশকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া যায়।
কাকাতুয়া আক্ষেপের সুরে বললো,বুদ্ধদেবের
অহিংস বাণী শুনলো না কেহই।এই বিশ্বের
সকল দেশে হিংসাও যেভাবে বাড়ছে তাতে
প্রতি দেশে সীমান্ত রক্ষায় অনুৎপাদিত ব্যয়
বহর যে বাড়ছে সেই বিষয়ে তার সন্দেহ
নাই মোটে।
বললো সে,এই যুদ্ধে মানব সভ্যতার উন্নয়ন
কতটা হয়,সেও ঢোকে না তার বুদ্ধির ঘটে।
এটুকুই শুধু বলার,এই কাজে বিপুল অর্থব্যয়
হলেও অজস্র মানুষের হচ্ছে কর্ম সংস্থান।দীর্ঘ
নিঃশ্বাস ফেলে বললো দুঃখের সাথে এই যুদ্ধে
দিন মানে মরছে কেবল দরিদ্র জনগণ।
কাকাতুয়া চশমা চোখে দেখেছে,ইদানীং বিশ্বে          
বাড়ছে সাইবার সন্ত্রাস।বাড়তে পারে সাইবার
যুদ্ধের সম্ভাবনা।যদি তাই হয়,প্রত্যক্ষ রক্তক্ষয়ী
যুদ্ধ হয়তো আর হবে না।মুখ থুবড়ে পড়বে
সব দেশের মজুত অস্ত্র ভাণ্ডার।
বিশ্ব জুড়ে এখন করোনায় মৃত্যু-মিছিলের পরে
আবার এই যুদ্ধের সম্ভাবনার কথাটি ভাবলে
শিয়রে উঠতেই হয়।মনে জাগছে ভয়।ভাবছি
বিশ্বের মানুষগুলো এখন কত অসহায়।
কাকাতুয়া বললো,‘এখন সাইবার যুদ্ধে বাঁচার
তাগিদেই দরিদ্র রাষ্ট্রগুলিকে উন্নত রাষ্ট্রগুলির
উপর নেট দুনিয়ার যাবতীয় নির্ভরতা কমিয়ে
নিজেদের স্বাবলম্বী হতে হবে।এবিষয়ে নিশ্চয়
রাষ্ট্রনেতারা ভাববে।