বলছি,মনে কি পড়ে বহুকাল
আগে থেকে বিশ্বজুড়ে আর্থিক
এবং শাসন ক্ষমতা সহস্রধারা
নদীটির মতোই বিভক্ত হয়ে
রাজ রাজাদের সাম্রাজ্যগুলিকে
ধুয়ে মুছে করেছিল অবলুপ্ত?
দেখেছি,মুখোশ বদলেছে মাত্র,
বদলায়নি শাসকের চরিত্র।
তারপর থেকে তাদেরি মতো
প্রভূত সম্পত্তি এবং প্রতিপত্তি
নিয়ে মুষ্টিমেয় মানুষ আজও
বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
একটু ফিরে তাকালে দেখবো,
সমগ্র বিশ্বের সম্পদ লুটতেই
যেন ফোয়ারার মতো বর্ধিষ্ণু
নেশায় এই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীটি
আজও মেতে আছে।
কালের স্রোত যতই গড়াচ্ছে,
লুটের সেই সম্পদের সমান্তরাল
ভাবে বহমান তীব্র অনাহারের
আঁচ লাগছে বাদ বাকি সমস্ত
দরিদ্র মানুষগুলোর উপর।
বিশ্বে অর্থনীতিকে ভিত্তি করে
যে শ্রেণি-বৈষম্য গড়ে উঠেছিল,
তাদের মধ্যেও ক্রমেই বাড়ছে
যেন দড়ি টানাটানি।এক পক্ষে
লুটেরা আর বিপরীতে বিশ্বের
বাদবাকি সব দরিদ্র জনগোষ্ঠী,
লুটেদের অশুভ প্রতিপক্ষ।
দেখো,বাঁচার তাগিদেই ক্ষুধার
রাজ্যের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সব
লোকেরা দিশেহারা।তারা যেন
পায় না খুঁজে কোনও বিকল্প
পথ,শ্রেণিসংগ্রাম ছাড়া।
কর্মসংস্থানের অভাবে তাদের
অনাহারে কাটছে বছরের বহু
রাত।এ যেন সহজাত ব্যাপার,
খিদে মানে না কোনও শাসন
শোষণ।তাইতো খিদের জ্বালায়
মাঝে মাঝেই দরিদ্র জনগোষ্ঠী
তুলছে লুটেদের বিরুদ্ধে তাদের
বজ্র-মুষ্টিবদ্ধ হাত।
একবার ফিরে দেখো,চারদিক
থেকে তাদের ক্ষোভ বিক্ষোভের
বড় বড় ঢেউগুলি পর্যায়ক্রমে
ধেয়ে এসে আছড়ে পড়ছে সেই
লুটেদের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর উপর।
বাঁচার তাগিদেই তারাও নেমে
পড়ছে সাময়িকভাবে দরিদ্রদের
বিক্ষোভ প্রশমনে।
বলি,তুমি কি দেখতে পাচ্ছো এই
অশুভ সন্ধিক্ষণে তারা হত-দরিদ্র
মানুষের ক্ষুধার রাজ্যে হরিলুটের
মতো অর্থ ছড়িয়ে ভাঙ্গতে চায়
ক্ষোভ বিক্ষোভের ঢেউ?
চেয়ে দেখো,তাদেরি কেউ কেউ
চিরুনি তল্লাসি করে খুঁজছে সেই
দরিদ্র জনগোষ্ঠীদের মধ্যে লুকিয়ে
থাকা সমস্ত অর্থলোভী ছদ্মবেশী
দরিদ্রদের প্রতিভূ।
দেখো,লুটেদের কতিপয় অর্থের
জোড়ে সেসব লোকদের কিনে
পুত্তলিকার মতো মুঠোতে পুড়ে
বদলে দিতে চাইছে দরিদ্রদের
বিক্ষোভের গতি-মুখ।
পুত্তলিকাগুলিরও হচ্ছে চরিত্রের
বদল।তারা তাদের সকল সুপ্ত
ইচ্ছাগুলোকে কারণ-বারিতেই
এতো সিক্ত করছে যে কোনও
কিছুই আর ঢোকে না তাদের
মগজে।
দেখি,তখন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর
জীবনে নেমে আসে কালবৈশাখী
ঝড়।
ক্ষণিকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে
তাদের সব স্থাবর অস্থাবর।
আর তার ফলে ফোয়ারার
মতো বাড়ছে তাদের দুঃখের
পরিসর।
মীরজাফরের মতো লোকেরা
হয়ত জানে না,তারাও চলে
যাচ্ছে ঠিকানা-বিহীন নিরুদ্দেশে,
অজানা মরীচিকার খোঁজে।
সেখানে পৌঁছে ফণীমনসা গাছকে
জড়িয়ে ধরে কাঁটায় বিদ্ধ হয়ে
সারা শরীর থেকে রক্ত ঝরাতে।