শ্রদ্ধাবনত হয়ে জিজ্ঞেস করেছি তাকে,
‘কে তুমি?’
ধীরে ধীরে অবগুণ্ঠন সরিয়ে অশ্রুসজল
চোখে বললো রমণী, ‘যাকে অবহেলায়
রেখেছো দূরে ঠেলে, যথার্থ মূল্য দিতে
ভুলেছ বারবার,আমি সেই শিক্ষা ব্যবস্থা’।
ঠক ঠক করে কাঁপছে সে।
শুনেছি তার বেহাল দশা।রোগ ব্যাধিতে
আক্রান্ত। বলবো কী আর, কাকাতুয়া
হন্তদন্ত হয়ে উড়ে এসে বলে গেল,এটি
একদিনে ঘটেনি। উই এর ঢিবির মতো
তারও এতোখানি বৃদ্ধি  হতে লেগেছে
সময়,সুদীর্ঘকাল ।
কানে খটকা লাগলো কি একথা শুনে?
কে না জানে,যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ সহ
সংস্কারের অভাবেই এ দশা হলো তার
এক্ষণে।
তার রোগব্যাধির শুরু যখন এ দেশটি
পরাধীন। পরে যদিও দেশ স্বাধীন হলো,
জনগণের শিক্ষার দায়ভার যখন যাদের
উপর বর্তালো তাদের সকলে গয়ংগচ্ছ
করতে করতে এখন বলা ভালো, তার
বহু রোগব্যাধির প্রতিকার করার সময়
নেই আর।
শহর ও শহরতলীতে অনেকে দেখেছে
বৈকি,একই বিল্ডিং-কে কাজে লাগিয়ে
বহু জায়গায় চলছে স্কুল ও কলেজের
প্রাতঃ-বিভাগ, মধ্যাহ্নকালীন বিভাগ
আবার সেই সাথে কোথাও কোথাও
সান্ধ্য বিভাগ।
বহুরূপীর মতো কখনো সেটি বালিকা
বিদ্যালয় আবার তার ছুটির পর সেটি
বালকদের জন্য ভিন্ন বিদ্যালয়। নাম
ভিন্ন হলেও বিল্ডিং অভিন্ন। কলেজের
ক্ষেত্রেও একই হাল।এদের পরিচালনায়
সমস্যা নগণ্য ছিল না কখনও।  
বহু আগেই দরকার ছিল এ সমস্যার
সুরাহার।গঙ্গা-ভাগীরথী দিয়ে বহু জল
বয়ে গেল, আজও হয়নি এর কোনও
স্থায়ী প্রতিকার।
বলা ভালো, বহুক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যা
ছিল। তার চেয়েও বড় সমস্যাটি হলো
বাবুদের অদূরদর্শিতা কিবা উদ্যোগের
অভাব।
নগরায়ন ও তার শ্রী বৃদ্ধির কারনে
এখন সে স্থানে জমির খুবই অনটন।
এ দশা ঘটার আগে তারা সচেষ্ট হলে
হয়তো অনেকাংশে এ সমস্যার সুরাহা
হতো। এ রমণীকে পড়তে হতো না
এমন চরম দুর্দশায়।
বাবুরা ভাবলো না এ বিভাগগুলোর
কিংবা শিক্ষাঙ্গনগুলোর জন্য পৃথক
পরিকাঠামো গড়া দরকার।
গ্রীষ্মের দুপুর। দাবদাহে দাউ দাউ
করে জ্বলছে যখন সুবিশাল ভূখণ্ড,
একটু বেলা বাড়লেই শুধু শিশুদের
কেন বড়দেরও ঘরের বাইরে বের
হওয়া প্রাণান্তকর।এ সময় বাবুদের
উপলব্ধি গ্রীষ্মের দাবদাহে শিক্ষাঙ্গনে
মধ্যাহ্নকালীন বিভাগ যায় না আর
চালানো। বদলানো দরকার ওদের
কার্যকাল।
প্রশংসনীয় উদ্যোগ,বৈকি। কালের
দাবী মেনে সরকারী নির্দেশনামায়  
উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হলেও
পরিস্থিতি ভয়ানক জটিল হলো নাকি?