বদলেছে সাবেকী কলিকাতা
       দেখিনা তার আদত চেহারা
গড়ে উঠেছে বহু অট্টালিকা
       নগরীও এখন স্মৃতি-হারা।


অতীতে নগরীর সড়ক পথে
       চলতো বহু ঘোড়ার গাড়ি
সাহেব ও বিত্তশালীরা
       সেই গাড়িতে দিতেন পাড়ি।


সেকালে কলিকাতা নগরীতে
        দিনান্তে যখনি হতো রাতি
সড়ক গুলো আলোকিত করতে
        জ্বলে উঠতো গ্যাস বাতি।


শতাব্দী-প্রাচীন বাড়ি গুলো
      এখন ক্ষত বিক্ষত প্রবীণ
বাড়ি গুলোর ঠাকুরদালান
      আস্তরণ হারিয়ে ক্ষীণ-হীন।


এখন দালানের পিলারগুলো
      সবই গরিমা হারা নিঃসঙ্গ
ভেতরের স্থাপত্য নিদর্শন
      নির্বাক আভরণ হীন উলঙ্গ।


অতীতে গেটের আশপাশে
      সদা জোড়া সিপাই থাকতো
তাদের বর্শা বরষায় ভিজে
      এখন যেন কলঙ্কিত অশক্ত।


অতীতে ফলকে লেখা থাকতো
      বাবুদের প্রাসাদের নাম
কত কাল হলো মুছে গেছে
      স্মৃতি বিজড়িত নামধাম।  


কবুতররা এখন আনন্দে          
     বাড়িগুলোর কড়ি কাঠে থাকে
খানাপিনা সেরে চেনা ছন্দে
     রোয়াকে বকম-বকম ডাকে।


সেসময় শহরে জল সরবরাহে
      ব্যস্ত থাকতো ভিস্তিওয়ালারা
শহরবাসীদের দুগ্ধ যোগাতো
      তখন বাঁক বাহী গোয়ালারা।


সেকালে দিনদুপুরে হাঁক দিতো
     ঝাঁকা-মাথায় বহু ফেরিওয়ালা
সোহাগ মেশানো সেই ডাক
     নেবে গো বাসঅন থালাআআ।


খড়খড়িতে চোখ রেখে গৃহিণীরা
     সেসময় অবকাশে দেখতো
চেনা ছন্দের রোজকার ডাকে
     কখন কে যেতো আসতো।


কলিকাতা হারিয়ে ফেলেছে
      সেকালের সব চেনা ছন্দ
ফেরিওয়ালাদের ক্লান্ত শরীরে
       হাঁক দেওয়া হয়েছে বন্ধ।


মানুষের দীনতা ও অবহেলা
        আর সঙ্গতে আগ্রাসী লালসা
স্থাপত্য গুলোকে পাঠাতে চায়
      সেই সুদূরে কৈলাসে সহসা।


কলিকাতা এখন নব গরিমায়
        কল্লোলিনী নগর কোলকাতা
আগেকার রোয়াকের আড্ডা
        আজকের দিনে যেন গল্প-কথা।