কবি,বলতেও লজ্জা হয়,চেয়ে
দেখো,এই মানুষগুলোর দিকে
যারা আজও দু’মুঠো অন্নের
জন্য প্রত্যহ দিনভর কর্মব্যস্ত,
তাদের এখনও কাটেনি ঘোর
দুঃসময়।দিনের শেষে তাদের
আধপেটা খেয়ে আজও নিয়ত
দিন কাটাতে হয়।
ভেবে দেখো,সমাজ কি আজ  
এ লজ্জার দায় করতে পারে
অস্বীকার?
মাথা নত করে আছো কেন?
বলতে কষ্ট হয়?হয় তো তাই
এ লজ্জা ঘোচাতে তুমি অতন্দ্র
প্রহরীর মতো সমাজের বিবেক
হয়ে জাগছো সব সময়।প্রান্তিক
মানুষদের হাল হকিকত জানতে
তোমাকে দেখি অকুতোভয়।
দুঃস্থদের সমস্যা তন্নতন্ন করে
খুঁজতেই,কবি,নিয়ত তোমাকে
ছুটে যেতেও দেখি কানাগলি
থেকে রাজপথে।সময়ে অসময়ে
কড়া নাড়াতেও দেখি তাদের
মনের অলিন্দে।
দেখেছি আগুনের উপর দিয়ে
প্রতিনিয়ত ছুটে চলার মতো
তুমি ভয়কে জয় করে রোজ
রাত জেগে তাদের জীবনের
বর্ণমালা সাজিয়ে তুলে ধরছো
কবিতায়।তাদের সমস্যাগুলোর
সমাধানের পথনির্দেশও থাকছে
সেথায়।
সমাজে দারিদ্র,অশিক্ষা,অজ্ঞতা
এবং জীবন সংগ্রামে ব্যস্ততায়
দুঃস্থদের অকুলান সময় নিয়ত
গড়ে তুলছে যেন কাঁটাতারের
বেড়া।তাই,কবি,তোমার সকল
জীবনমুখী কবিতা পাঠ করা
থেকেও বঞ্চিত থাকছে তারা।
একটু খোঁজখবর নিয়েই দেখো
তাদের জন্য কে,কী জীবনমুখী
কবিতা লিখে যাচ্ছে সে খবর
নেওয়ারও তাদের নেই একটু
অবসর।
কবি,দেখো তাদের প্রত্যেকের
জীবন এক একটা জীবনমুখী
বিরহের কবিতা।অশেষ দুঃখ
ও যন্ত্রণা সহে এমন মর্মস্পর্শী
কবিতা হয়েছে তারা।বলছি,
তাদের কী প্রয়োজন তোমার
কবিতা পড়ার?
তা ছাড়া,কবি,একবার ভেবে
দেখে বলো,তাদের কি রয়েছে
তোমার লেখা কবিতা পড়ার
সুযোগ ও সময়?
বলি এবার খোঁজ নিয়ে দেখো,
উচ্চ এবং মধ্যবিত্তদের সকলে
না হোক,অনেকে ভাবে,‘তাদের
এমন কী দায় পড়েছে এ সব
খবর নেওয়ার?’তারা সংযত,
তাই এ দুঃস্থ মানুষদের খবর
দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যায়
নিয়ত অত্যন্ত ব্যস্ত পথচারীর
মতো।
কবিতা,বলাই বাহুল্য,জীবনমুখী
এবং সে সকল দুঃস্থ মানুষদের
হলে তাকে বর্জ্য সামগ্রীর মতো
তাদের ঘরে অব্যবহিত সামগ্রীর
সাথে মাথা কুটেই পড়ে থাকতে
হয় অনাদরে।
হায় রে,এই একবিংশ শতাব্দীতে
দেখছি,অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে
থাকছে সমাজ।কবি,এখন কেন
তোমার কপালেও পড়ছে চিন্তার
ভাঁজ?রাতে ঠুক ঠুক করে তুমি
কপাল ঠুকে ভাবো,কিভাবে এই
সমাজ রক্ষা পাবে ঘোরতর এই
লজ্জার হাত থেকে।