সেদিন জমজমাট আসরে জোরালো বিতর্ক
হলো,সময়ের সাথে সাথে সমাজের নিরিখে
সমগ্র বিশ্বে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশের
লেখচিত্র নিয়ে।অনেকে ভাবলো,‘উদ্যোক্তারা
ঘটা করে করছে বিতর্ক সভার আয়োজন।
এখন কেঁচো খুঁজতে গেলেই হয়তো বিষধর
সাপ বেড়িয়ে আসবে যখন তখন’।
আলোচ্য বিষয় ভাবনাটা অনেকের মগজে
গিয়ে বিঁধলো তীরের ফলার মতো।শুনেছি
কারো কারো মস্তিষ্কের থেকে নাকি হয়েছে
রক্তক্ষরণ।আলোচনা চলাকালীন বহু বক্তা
তুলে ধরলেন,এ যাবত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে
ঘটে যাওয়া স্বাধীনতার আন্দোলনে মানুষের
মনুষ্যত্বের অবনতির প্রসঙ্গ।
তর্ক বিতর্ক জমলো বেশ।ঠিক যেন ক্রিকেট
খেলার মাঠের মতো ব্যাপক উত্তেজনা।সর্ট
পিচ,স্পিন বল, ফাস্ট-বল বেরোতে লাগলো
বোলারদের হাত ঘুরে।পাশাপাশি প্রতিপক্ষের
ব্যাটসম্যানদের জোরালো সট।বল পৌঁছলো
বাউন্ডারি,ওভার বাউন্ডারিতে।চার কিংবা ছক্কা
বলে চিৎকার করে উঠলো সমর্থক দর্শকরা।
উইকেটের পতনও হতে দেখেছি যখন তখন।
বোলারদের সমর্থকেরা তখনি আউট আউট
বলে চিৎকার করলো মাঠ-জুড়ে।
গোদের উপর বিষফোড়ার দশা।বিতর্কসভায়
অনেকেই তুলে ধরলেন ধর্ম এবং জাতিগত
বিদ্বেষ কিভাবে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে এখন।স্বস্তির
কথাও শোনালেন, ‘কপাল ভালো!এখন সে
যুদ্ধ না থামলেও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে’।
তর্ক-বাগীশ রা কালের কন্দরের অন্দর থেকে
নির্যাস টেনে এনে পৌরাণিক কাল থেকে এ
যাবত পর্যন্ত যুগে যুগে সেই সময়ের নিরিখে
মনুষ্যত্বের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখালেন,
লেখ-এর নতি বারবার বদলে গেছে।
সত্য,দ্বাপর,ত্রেতা ও কলি যুগে মনুষ্যত্ব কখন
কতখানি বলীয়ান্‌ ছিল সে নিয়ে সভায় হলো
আলোচনা।
বিতর্ক সভায় ফুলঝুরির আলোর মতো একে
একে বের হলো নানাবিধ তথ্য।শেষে চড়াই
উতরাই করে মনুষ্যত্ব এখন যেখানে পৌঁছেছে
তাকে নিয়ে হলো জোরালো আলোচনা।বক্তারা
বললেন সকলে,‘সুখের কোরক টি মাথা চাড়া
দিয়ে ওঠার সাথে সাথে মানুষের মনুষ্যত্বেরও
নাকি দ্রুত ঘটেছে অবনতি’।
ক্ষমতার সুদৃশ্য মোড়ক খোলার সাথে সাথে
দ্রুত বদলে গেলো মানুষের মতিগতি।ঘটতে
শুরু হলো বিস্ফোরণ।দুটো বিশ্বযুদ্ধের পরেও
হয়নি মনুষ্যত্বের বিশেষ কোন উত্তরণ।এখন
আমাদের সামনে নাকি প্রলয়ের সন্ধিক্ষণ।
সংখ্যাগরিষ্ঠ তার্কিকেরা জানালো তারা নাকি
লক্ষ্য করছে এখন অভিমুখ অবনতির দিকে।
আরও একটা নবজাগরণের আগে দেখছে না
মনুষ্যত্বের উন্নতির কোন সম্ভাবনা।আলোচনা
শেষে সে কথাগুলি কুঁড়ে কুঁড়ে খেলো সবার
বক্ষ জুড়ে।