বলি শোনো,যে কথা গুলি বলবো তোমায়
জেনে রাখো সবই হয়তো সত্যের অপলাপ।      
শুনেছি ঝঞ্ঝা-পীড়িত দুঃস্থ মানুষেরা নাকি
নবীন কবি এবং মধু কবির মতোই আশা  
নিরাশার দোলাচলে ভাসে।একদিকে তাদের
বাস্তুহারা হওয়ার আশঙ্কা।বিপরীতে বাঁচার    
আশা।ত্রাণের কোন উৎস-ধারা হতে বরাত
জোড়ে যদি অনুদানের কিছুটা জোটে সেই
আশায় তারা উৎকর্ণ হয়ে থাকে।কে জানে
কখন ছলনাময়ী কী বার্তা নিয়ে আসে!
শুনেছি তাদের আশা সব সময় হয় নাকো
অমূলক।বরাত ভালো হলে কল্পতরুর মতো
নেতা-নেত্রীদের আবির্ভাব ঘটলে দুঃস্থদের  
ত্রাণ সামগ্রী জোটে।কিন্তু মাঝ পথে সেসব
ছিনিয়ে নিতে বক ধার্মিকের আজও অভাব
হয়নি মোটে।
এই তো সেইদিন রুদ্র মূর্তি ধরে আমফান
ঝড় বয়ে যেতেই শুরু হলো যেন করোনার
আগ্রাসন।দুর্বিষহ হলো জীবন ধারণ।দেখেছ
তখন কি ভাবে কাটালো অজস্র দুর্দশাগ্রস্ত
দুঃস্থ গৃহহারা মানুষেরা।
স্বভাবে উৎকর্ণ কতিপয় মানুষ কান পেতে
শুনলো বিভিন্ন উৎস থেকে ঝড়ের গতিতে
সো-সো শব্দে ধেয়ে আসছে যেন অগুনতি
সাহায্যের প্রতিশ্রুতি।বৈশাখী ঝড়ে যেভাবে
বৃন্তচ্যুত আম কুড়তে নর নারীরা ব্যস্ত হয়ে
পড়ে সেদিনও সেভাবেই শুরু হলো তাদের
ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহের ব্যস্ততা।
নেতা নেত্রীরা দাতা কর্ণের মতো ত্রাণের
প্রতিশ্রুতি দিলে সেসব সামগ্রীর বণ্টনের
অছিলায় সিংহ ভাগ লুটে দুর্জন ব্যক্তি বর্গ
যেন পৌঁছে গেল কৈলাসে।ভেবেছে তারা
নিকট প্রতিবেশীরা বঞ্চিত হলে তাদের কী
যায় আসে!
কালের ঘূর্ণিপাকে তারপরেই শুরু হলো
অবিরাম বর্ষণ।তুমি তো দেখেছো তখন
বহু মানুষকে হতে হলো বানভাসি।তাদের
সাহায্যার্থে বিভিন্ন উৎস হতে সেই সময়
ঝর্ণা ধারার মতো এলো অজস্র প্রতিশ্রুতি।
সেই প্রস্রবণে উদ্ভূত তরঙ্গের শব্দে তুমিও
শুনেছ নেতা নেত্রীদের প্রাত্যহিক জীবনে
সত্য ও মিথ্যা নাকি অনর্গল বলতে হয়    
তাদের পেশাগত কারণে।
সেই ট্র্যাডিশন বহাল এখন।দেখো কোনও
মমতাময়ী যখনি নারায়ণীর মতোই হাত
বাড়িয়ে দুঃস্থদের দেয় বাঁচানোর প্রতিশ্রুতি,  
বুদ্ধি-বৈকল্যে ক্ষুধিত পাষাণের মতো সেই
দুঃস্থরা বাঁচার তীব্র ইচ্ছায় সালসার মতো
গিলে ফেলে তার সেই ধারাভাষ্য।
না-বুঝে সেইসব গলাধঃকরণ যে সুখকর  
নয় পরে বোঝে তারা।বোঝে অধিকাংশ
অপাচ্য।দুঃসহ যন্ত্রণায় সে সব উদ্‌গিরণ
করতে তখন ব্যস্ত তারা।
সমগ্র বিশ্বে নেতা-নেত্রীদের প্রতিপক্ষদের
মস্ত দোষ,সকলেই খোঁজে নানান ফিকির।
একে অপরের খুঁত ধরে।মমতাময়ী দেরও
করে কলঙ্কিত।আবার কেউ শিবের মতো
হলে তো তার নিস্তার নেই। সকলে মিলে
তার গায়ে মাথায় মাখায় ছাইভস্ম।
তারা নিরীহ জনগণ কে নিমেষে খেপিয়ে
তোলে।অ-প্রতিরোধ্য গতিতে সকলে ছুটে
গিয়ে নেতা ও নেত্রীদের সব কীর্তি ধুয়ে
মুছে সাফ করে।
তারপর শুরু ঐতিহাসিক দের কার্যকলাপ।
পিঁপড়ের মতো ছুটে এসে সারিতে দাঁড়িয়ে
চিকিৎসকের মতো নেতা নেত্রীদের কলঙ্কের
কঙ্কালসার শরীর ডি-সেকশনের উদ্দেশ্যেই
টেবিলে তুলে শুরু করেন ময়না তদন্ত।বাদ
যায় না কেহ ই।এটাই যেন তাদের ভবিতব্য।