শ্যামলী,এবার বলি,চোখ দু’টি
বন্ধ করে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা
করে দেখো তাঁর উদ্দেশ্য কি
জানতে পারো?
বলো,তোমার মনে কি জাগছে  
কি কোনও বিশেষ অনুভূতি?
যদি মনে জাগে তবে বলবো
তোমাকে,শ্যামলী,তুমি হয়তো
দেখছো ‘অর্ধনারীশ্বর’।
মনে হয়,স্রষ্টা তাকেই সৃষ্টির
স্বপ্নে বিভোর ও সে উদ্দেশ্যে
কাজ করছেন রাতদিন।
শ্যামলী,গঠনমূলক দৃষ্টি ভঙ্গিতে
বলো,নরনারীদের সহযোগিতায়
স্রষ্টার সে ইচ্ছা পূরণ হবে কি?
ভাবি,এ কাজে সকলের একান্ত
সহযোগিতাও জুটবে কি?
শ্যামলী,তাঁর ইচ্ছা পূরণের পথে
অন্তরায় গুলো ভাবা দরকার।
ভাবতেও হবে নরনারীদের কী
করতে হবে এবার।
দেখছো,আমরাও পৌঁছে গেছি
স্রষ্টার ইচ্ছা-পূরণের সীমানার
কাছাকাছি।বলি,এই স্বপ্ন-পূরণ
দেখতে হয়তো বেঁচে আছি।
শ্যামলী,এ কাজে সাফল্য পেতে
নরনারীর ক্ষমতার কাড়াকাড়ি
ছেড়ে দুই পক্ষকে বাড়াতে হবে
তাদের সহযোগিতার হাত।
এ ব্যাপারে শ্যামলী,বলবার যে
কোনও অপেক্ষাও রাখে না,এক
পক্ষ কিছুটা ক্ষমতা পাবে,যখন
অন্যপক্ষ স্বেচ্ছায় সেই ক্ষমতা
অপর পক্ষের হাতে হাসি মুখে
তুলে দেবে।শ্যামলী,এই কাজটি
নরনারীদের সকলে সঠিকভাবে
করলে এই সমাজে ‘অর্ধনারীশ্বর’
এর প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।শ্যামলী,
সে জন্য কিছু পদক্ষেপের কথাও
ভাবতে হবে।
বলছি,যেহেতু এখন এ সমাজে
পুরুষেরাই সিংহভাগ ক্ষমতার
অধিকারী,সে জন্য এই সুমহান
গঠনমূলক কাজে পুরুষদিগকে
অবশ্যই ছাড়তে হবে তাদের
গা-জোয়ারী।
পুরুষদের স্মরণে রাখতে হবে
বর্তমান সমাজের অর্ধেক হলো
নারী।তাদের দুঃখ কষ্ট ঘোচাতে
এবার বন্ধ করাও দরকার হবে
নারীদের উপর পুরুষদের সব
অমূলক বাড়াবাড়ি।
বলছি শ্যামলী,আত্মমর্যাদা এবং
সম্ভ্রম রক্ষার্থে নরনারীদের খুবই
সচেতন থাকতে হবে রিপুদের
ব্যাপারে।আগুনে ঘৃত নিক্ষেপ
করা যাবে না কোনও প্রকারে।
বন্ধ করতেই হবে নীল ছবির
সংক্রমণ।পাশাপাশি প্রলোভন
উপেক্ষা করে নরনারীদেরকে
করতেই হবে আত্মনিয়ন্ত্রণ।
সমাজ সুরক্ষার প্রশ্নে রিপুদের
অবদমনের জন্য নিতে হবেই
মনস্তাত্ত্বিকদের অভিমত।
দাবদাহের মতো বেড়ে ওঠা
সামাজিক অপরাধের প্রবণতা
কমিয়ে আনতে শৈশব থেকে
নীতি-বোধ জাগরণের শিক্ষার
পাশাপাশি যোগাসন প্রশিক্ষণ
রিপুদের সংযত রাখতে খুবই
সহায়ক বলে প্রচলিত শিক্ষা
ব্যবস্থায় প্রাচ্যের মুনিঋষিদের  
এই জ্ঞানকে গুরুত্ব সহকারে
সমাজ কল্যাণে কাজে লাগিয়ে
সমাজে অপরাধ কমাতে হবে।
শ্যামলী,সমাজের অখণ্ডতাকে
রক্ষা করা অতিশয় আবশ্যক
ভেবে নারী পুরুষে গৃহ যুদ্ধের
আশঙ্কা কমাতে দু’পক্ষকে সদা
দায়বদ্ধতার পরিচয় দিতে হবে।
শ্যামলী,তাই সময়ের অপচয় না
করে সকলকে সমাজ সংস্কারের
কাজে নামতে হবে।
শেষে বলি,সেই সুদিনের প্রত্যাশী,
সমাজের ঘরে ঘরে 'অর্ধনারীশ্বর'
প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অপেক্ষায় চাতক
পাখির মতো থাকবো প্রতীক্ষায়।


     সমাপ্ত