একটু অসাবধানতায় কত কী যে ঘটে!
এইতো সেদিন নিশুতি রাতে ঘরের বাইরে
তখন ঘন অন্ধকার আর ভেতরে জ্বলছিল
অপ্রত্যাশিত মৃদু আলো।
মনে হলো যেন সেসময় ঘরে ঢুকে পড়লো
বিকারগ্রস্ত অন্ধকার আর তার প্রভাবে সেই
ঘরের ভেতরে গা ছমছমে পরিবেশ।টেবিলের
উপরে সদ্যোজাত শিশুর মতো শায়িত ছিল
একটি নতুন আগ্নেয়াস্ত্র ।
অপ্রত্যাশিত হলেও সেসময় সেই কর্মশালার
ভেজানো দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকলো কুমারী
তড়িঘড়ি। আলো আঁধারে কর্মশালা,পিতাপুত্রী
মুখোমুখি। দু’জনেই এ সময় একে অপরকে
দেখে হতবাক!
কৌতূহলে জিজ্ঞাসা করলো কুমারী, ‘বাবা!
অবাক হচ্ছো কি এসময় এখানে আমাকে
দেখে?
নিশুতি রাত।এসময় মেশিনের অপ্রত্যাশিত
ঘড় ঘড় শব্দে শয়ন কক্ষে টিকে থাকা দায়।
ঘটলো ঘুমের ব্যাঘাত।‘কী করছো এখানে?’
কৌতুহলের বশে দেখতে এসেছি এসময়
কর্মশালায় !
হতচকিত পিতা। আর যায় কোথায়! তার
সম্বিত ফিরে আসার আগেই চপলা কুমারী
টেবিলের উপরের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তুলে
নিয়ে শুরু করলো দেখাদেখি,গন্ধ শোঁকা
আরও কত কি! অনুভব করলো অস্ত্রের
গায়ে পিতার হাতের গন্ধ মাখামাখি!
টিভির দৌলতে বুঝতে রইলো না বাকি
কী কাজ চলছিল কর্মশালায় এই নিশুতি
রাতে !
হঠাৎ-ই জোরালো হাওয়ায় জানালা খুলে
যেতেই কালপুরুষ তাদের সামনে এসে
পরবর্তী ঘটনাবলীর সাক্ষী হতে দাঁড়ালো।
অস্ত্র হাতে কুমারী কি বললো, শুনবে?
বললো, ‘বাবা, কালপুরুষকে সাক্ষী রেখে
আমার সামনে এসে দাঁড়াও দেখি! আজ
তোমাকে হতে হবে পরীক্ষার মুখোমুখি।
বানিয়েছ এই অস্ত্র বুঝেছি তার গায়ের
গন্ধ শুঁকে’।
দীপ্ত কণ্ঠে বললো কুমারী, ‘বেঁচে থাকতে
আর সংসার নির্বাহের অর্থ রোজগারের
জন্য কি তৈরি ও বিক্রয় করতেই হবে
মানুষ নিধনের অস্ত্র? মানুষ মেরে বেঁচে
থাকার কী অদম্য প্রয়াস স্রষ্টার বর্ণশ্রেষ্ঠ
জীব এই বিশ্বের মানুষের!দেখি, তুমিও
নেমেছো সেই উদ্দেশ্যে,তাই না?’
কুমারী বললো আরও, ‘মানুষ নিধনের
অস্ত্র তৈরি ও বিক্রয় করে বিশাল প্রাসাদ
তুল্য বাড়িটি গড়ে তুলতে বাঁধেনি কি
বিবেকে?’
কেঁপে উঠলো তার কণ্ঠস্বর। কম্পিত স্বরে
বললো, ‘এই অস্ত্র প্রয়োগে প্রথমে কেহ না
কেহ বুকের রক্ত ঝরিয়ে মরবে। খুব কাছ
থেকে দেখেছো কি কখনো মৃত্যুর করুণ
দৃশ্য ? সুযোগ এসেছে এবার মন প্রাণ ভরে
এই দৃশ্য দেখার !
অস্ত্রটি তোমার হাতে তুলে দিচ্ছি।এখনি এটি
প্রয়োগ করে আমার বুককে এফোঁড় ওফোঁড়
করো। ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরুক, লাল রক্ত
আরো,আরও !
দেখো,খুব কাছ থেকে কিভাবে দেহটা ছট পট
করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তারপর, দেখবে
অস্ত্র তৈরির মনোবল নিশ্চিত বাড়বে !