আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখে
দুর্যোগের আশঙ্কায় আত্মরক্ষার
চেষ্টায় অপরিসর টানেলে কেঁচোর
মতো ঢুকে পড়ে দেখেছি তার
ভেতর গাঢ় অন্ধকার।
কত কী যে ঘটে ঘোর দুর্যোগ
ঘনিয়ে এলে!ভাবিনি কখনোই
আগে জীবতকালে ঢুকতে হবে
এই দম বন্ধ করা কারাগারে।
হায়রে,কে কবে দেখেছে আগে
এমন অসহ্য পরিবেশ,অন্ধকার
আর মুক্ত বাতাসের এতোটা
অভাব।নিশ্বাস নেওয়াও বেশ
কষ্টকর।
ভাবছো নাকি,দুর্যোগের আশঙ্কা
অমূলক ছিল?তবে বলি শোনো,
অচিরে শুরু হলো ঘোর দুর্যোগ।
ঝড় জল বহুদূর গড়ালো।
টানেলের ভেতরেও অবাধে ঢুকে
পড়লো সেই ঝড়ের গুরুগম্ভীর
আওয়াজ।কপালে পড়লো ভাঁজ।
নিঝুম অন্ধকারে বসে কান্নায়
ভেঙ্গে পড়লো অসংখ্য বেকার
যুবক ও যুবতী।দম বন্ধ করা
পরিবেশে ওরা মুক্ত বাতাস নিয়ে
বাঁচার জন্য ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে
করলো চিৎকার।
কেটেছে বহুক্ষণ,তবু এখনো ঝড়
থামার লক্ষণ দেখি না মোটে।
অন্ধকূপে বসে দিনভর ভেবেও
পাইনি উত্তর,‘এখানে এভাবেই
কাটাতে হবে কত বছর?’
দুঃখের কথা বলবো কত কী!
টানেলের গায়ে যত্রতত্র ফাটল।
সেসব পাথরের ফাঁক ফোঁকরে
স্থায়ী ভাবে বসতি তৈরি করেছে
ঝিঁঝি পোকা ও কাল প্যাঁচা।
বাঁচা-মরার সীমারেখায় দাঁড়িয়ে
শুনেছি,সেসব গহ্বর থেকে ভেসে
এলো কানে শত সহস্র ঝিঁঝি
পোকাদের ডাক আর প্যাঁচাদের
কর্কশ চিৎকার।
এ টানেলও মাথা বাঁচাবার জন্য
নিরাপদ দেখি না।ধেয়ে আসছে
অজানা আতঙ্ক।দেখছি,পাথরের
ফাঁকফোকর দিয়ে পলকে ঢুকে
পড়ছে বিদ্যুতের ঝলক।
বলি,তখন সেই আলোয় দেখেছি
গুহায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে
অজস্র হাড়-কঙ্কাল।
মনে হয় এখানে এসে বাঁচতে চেয়ে
ব্যর্থ হয়ে আত্মহননের পথটি বেছে
নিয়েছিল কোন স্বপ্নচর।
কালের স্রোতে অপরিসর টানেলের
একমুখী সুড়ঙ্গ পথে যান্ত্রিক ভাবে
চলতে গণ্ডমূর্খের মতোই নিয়তির
সওয়ার হয়েছি।
কী বলবো তোমাকে,পিছনে ফিরে
তাকানোও সাধ্যাতীত।জানিনা,এই
পথটি বাস্তব বর্জিত আত্মহননের
পথ কিনা।সে সম্ভাবনা না থাকলে
ভালো,তবে কালের ঘোড়া যেভাবে
চলছে,তাকে তুড়ি মেরেও উড়িয়ে
দেওয়া যায় না।
ভাবছি,দেখবো কি আর সূর্যোদয়!