প্রিয়তমা,
তুমি হয়তো এখন সংসারের কাজ সেরে ঠায়
বসে আছো আমার ম্যাসেজের অপেক্ষায়।আজ
কাজ থেকে ফিরেই একাকী ঘরে বসে জমিয়ে
টান দিয়েছি স্মৃতির হুঁকায়।বিগত দিনের অনেক
সুখ-দুঃখের কথা মনের গহীন স্থান থেকে যেন
ফোয়ারার মতো উঠলো থোকে থোকে।এখন
তোমাকে সে-কথাগুলিই বলবো আগে।
প্রিয়তমা,স্মৃতিগুলো জাগিয়ে তোলো সূত্র ধরে।
দেখবে মনে পড়ছে তাল-সারি দ্বীপে বেড়াতে
যাওয়ার ঘটনা,এখন থেকে আটাশ বছর আগে।
নিশ্চয় মনে পড়ছে,কী অভিজ্ঞতা অর্জন করে
দু’জনে ফিরেছি ঘরে।ভাবছি অভিজ্ঞ এবাদুল
মাঝি-ভাই ছিল তাই রক্ষা পেয়েছি নতুবা কী
যে হতো!
সেসময়,আধ ঘণ্টাও ছিল না সাগরে জোয়ার
শুরু হতে।খুব অল্প সময় হাতে,তালসারি দ্বীপ
ঘুরে ফিরে আসাও যাবে না জোয়ারের আগে,
সেসব জেনে বুঝেও মাঝিকে দ্বীপে নিয়ে যেতে
পীড়াপীড়ি করা যুক্তিসঙ্গত ছিল না কোনমতে।
সে যেন বনবাস কালে স্বর্ণ-হরিণ দেখে সীতার
বায়না ধরার মতোই অবস্থা।খুব পীড়াপীড়িতে
মাঝি দ্বীপে পৌঁছে বলেছিল অল্প সময়ে ফিরে
আসতে দ্রুততার সাথে।
তুমি রকমারি ঝিনুক দেখে সেথায় ব্যস্ত হলে
সেসব কুড়তে।নেহাত মাঝি-ভাই তখন অতি
তৎপরতার সাথে নৌকায় আমাদের ফিরিয়ে
আনলো সমুদ্র সৈকতে।
প্রিয়তমা,মনে পড়ে দ্বীপে যাবার সময় সাগর
ছিল নিদ্রিত সিংহ-প্রায় জোয়ারের আগে।তুমি
তার শরীরে হাত বোলালে বারংবার।তবুও সে
একবারও যায়নি রেগে।ফেরার সময় জাগ্রত,
সিংহটা ছিল কী ভয়ঙ্কর,গর্জন করছিল সে
ভয়ানক রাগে।
বছর দশ পরে,যখন আবারও গেছি তালসারি,
দেখেছি সেই দ্বীপ আর বহাল নেই,জুড়ে গেছে
মূল ভূখণ্ডের সাথে।
প্রিয়তমা!রাত গভীর হলো।রাতটুকু পোহালে
তোমাকে-আমাকে ঘুম থেকে উঠতে হবে খুব
সকালে।দু’জনকেই লাগতে হবে কাজে।তাই
আজ এটুকুই থাক।আলোটা নিভিয়ে এখনি
ঘুমিয়ে পড়।
                                    ইতি
                             তোমার প্রাণেশ্বর