শুনেছি সেদিন ঘরের জানালা দিয়ে
যে বৃদ্ধ ভিক্ষুক ভিক্ষা করে ফুটপাথে বসে
সে বললো বস্তিবাসী এক গৃহস্থকে,
‘ খাও, যেটুকু পাও
যেটুকু দিচ্ছে দু’হাত বাড়িয়ে নাও!
ফিরিয়ে দিও না মোটে,
ভেবে নাও, এটুকুই ছিল বরাতে।
বলি, লাভ কী
দিচ্ছে যে দু’খণ্ড রুটি সেটুকু না-নিয়ে,
না-খেয়ে একেবারে অভুক্ত থেকে?
প্রশ্ন করো না বাবুকে একবারও
যে রুটি বিলিয়ে দিচ্ছে দাতা কর্ণ সেজে
সেই রুটি সে পেলো কোত্থেকে?'
জানো কী, বাবুর দর্জির দোকান আছে,
সে সমাজসেবীও বটে?
তার দোকান থেকে তৈরি যে প্যান্ট পড়ে
নিয়মিত ঘুরে বেড়াও এদিকে সেদিকে
সেটি বানাতে গিয়ে দর্জি করলো কী?
তাকে একান্তে জিজ্ঞেস করে জানতে পারো
বাবুর নির্দেশে প্যান্টটি বানাতে গিয়ে
সে করলো কী?
ভেবে দেখো, শুরু থেকেই প্যান্টটির
পকেটে ফুটো ছিল না কি?
বলি, তেমন হলে দর্জির আর দোষ কী?
শুনেছি, সেভাবেই প্যান্ট তৈরি করার জন্য
তার কাছে বাবুর নির্দেশ ছিল।
দর্জি, সে তো বাবুর কর্মচারী,
মালিকের নির্দেশ অমান্য করবে কি?
যাকগে, প্যান্টটি সরবরাহের সময়
ভালোভাবে দেখে দোকানির কাছ থেকে
সেটি বুঝে নিতে না-পারলে যা হয়,
ভেবে দেখো, সেটাই হলো না কি?
যে টাকাকড়ি রাখলে পকেটে
রক্তজল করে উপার্জিত অর্থ
সে আর পকেটে থাকলো কি?
সবই তো ফুটো দিয়ে বেরিয়ে গেল।
এখন আর দোষ দেবে কাকে?
ভাগ্যিস, যে পথে হাঁটাচলা করলে
সে পথ বেশ গড়ানো ছিল
ফুটো পকেট দিয়ে যে কড়িগুলো বেরিয়ে গেল
সবই গড়িয়ে গিয়ে জমা পড়লো
সমাজসেবী এ বাবুর অর্থভাণ্ডারে।
শুনেছি, তোমার নাকি আগে থেকেই
গ্যাস ও অম্বলের সমস্যা ছিল
ক্ষুধাযন্ত্রণাকে বহুদিন শরীরে আগলে রেখেছিলে
দীর্ঘদিন ভুগছিলেও রোগভোগে!
বলি, সেটি বাড়বে বৈ কমবে না
এটুকুও না-নিয়ে ফিরিয়ে দিলে।
ভাবো, এবার করবে কী?