পড়ন্ত রোদ্দুরে,আমার রাজ্যের সীমানায় এক
শিমূলের মগ ডালে বসে ব্যাঙ্গমা বলছে তার
প্রিয় সখীকে-এদেশে রাজার মিত্রের সংখ্যা  
কমছে নিয়ত,উই পোকার মতো দ্রুত লয়ে
বাড়ছে প্রতিপক্ষ।
ব্যাঙ্গমী বলছে হেসে,দেখেছি রাজার এই স্বর্গ
রাজ্যে ব্যাধ ঢুকেছে শত শত।নির্ভীক ওরা।
তীর ও ধনুক নিয়ে পশু শিকারে সদা ব্যস্ত।    
দৈববাণী নাকি শুনেছে ব্যাঙ্গমী,‘ওরা আমাকে
হত্যা করে বানাবে মমি’।অথচ আমি নিয়ত
রাত জেগে কত কী করেছি তাদের লাগি’।
সেকথা জানেন শুধু অন্তর্যামী।
গোধূলি ঘনিয়ে আসে।দেখি,ওই দূরের গাঁয়ের
রাঙা মাটির পথের ধূলি ওড়ে উল্লাসে।হয়তো
ব্যাধরা সে পথে আমার উড়ান রঙিন ঘুড়িকে  
নিশানা করে দলে দলে আসছে তেড়ে।
বুঝি না,আমার এ’রাজপাট দেখে ওদের হিংসা
হয় কেন!তবে কী ওদের স্মৃতিতে নেই এখন
ওরা প্রচণ্ড খিদের জ্বালায় সদলে ভুগলো যখন,
মেরে ঝলসে খেতে কত পশুকে ওদের রোজ
যোগান দিয়েছি গভীর রাতে।
ভাবি,ক’বছর আগেও আমি ছিলাম সুদক্ষ ঘোড়
সওয়ারী।রেসে আমাকে হারানোর সামর্থ্য ছিল না
কারো।একে একে রাজ্য জয় করেছি নেশার ঘোরে।
আমার রাজপাট জুড়ে ছিল সুবিশাল বাগ বাগিচা,
পাখিরালয় সারি সারি।সেথায় রঙ বেরঙের পাখি
ছিল অগণিত।হরিণ ছিল শত শত।ওরা সারাদিন
বাগিচায় মুখ বুজে ঘাস খেত।
আজকাল শরীরে ব্যাধি গ্রাস করেছে ভীষণ।ঘোড়
দৌড়ের সামর্থ্য নেই এখন।সেই সুযোগে রাজ্য জুড়ে
উন্মত্ত ব্যাধদের ব্যাপক স্বেচ্ছাচারে পাখি সব উড়ে
চলে গেছে ফুড়ুৎ ফড়ুৎ করে।আজ রঙ বেরঙের
পাখির দেখা মেলে না পাখিরালয়ে।মায়াবী হরিণের
সংখ্যা কমেছে দ্রুত লয়ে।
দেখেছি,চারিদিকে উঁকি ঝুঁকি মেরে গাছের কোটর
থেকে বেরিয়ে এসেছে একটি কাঠবিড়ালী।ভেবেছি
তাকে পেয়ারা দেবো খেতে,এক থালি।হায়রে,আজ
আমাকে দেখে সেও মুখ ফিরিয়ে ঢুকে পড়েছে তার
শান্তির কোটরে।