এই তো সেদিন দেশ বিদেশে
ঘুরে এসে আবারও কাকাতুয়া
যোগালো সন্দেশ।
শুনবে নাকি,সবিশেষ?তবে
শোনো।
‘কোনও এক অচিন দেশের
রাজা নাকি দেশের উন্নয়নের
রথ দুরন্ত গতিতে ছোটাতে
নামলেন।
কাজের প্রস্তুতি পর্বের শুরু।
রাজা ভাবলেন,জমা-খরচের
পাতায় সব শুল্ক আদায় কে
গুরুত্ব দেবেন যথাযথ,ঠিক
নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মতো।
পাখিটি শুনে এসেছে সেজন্য
তিনি অর্থনীতিবিদদের সাথে
করলেন নিয়মিত আলোচনা
ও শলাপরামর্শ।
তাদের পরামর্শ শুনবে নাকি?
বললো বিজ্ঞরা,‘সামগ্রী গুলোর
উৎপাদন ব্যয় যথাসম্ভব কম
করতে কাঁচামালে,পেট্রোপণ্যে
এবং জ্বালানীতে ন্যূনতম কর
চাপাতে।সেই সাথে উৎপাদিত
দ্রব্যদের প্রতি উপভোক্তাদের
চাহিদা বাড়াতে বিক্রয় করও
চাপাতে বেশ বুঝেশুঝে,যাতে
দ্রব্য গুলি হয় তাদের ক্রয়ের
সামর্থ্যের ভেতর’।
দোলাচলে রাজামশাই।বললেন,
তাহলে রাজকোষাগারের শুল্ক
আসবে কোথা থেকে?দেশের
উন্নয়ন হবে কী করে?
বললো তারা,‘উৎপন্ন দ্রব্যের
চাহিদা এবং বিক্রয় বাড়লেই
বিক্রয়কর যৎসামান্য হলেও
রাজকোষাগারে আসবে বিপুল
অর্থ,ঝর্ণা ধারার মতো।
দ্রব্যের জোগান ঠিক রাখতে
তখন বাড়াতে হবে উৎপাদন,
বাড়বে বেকারদের কর্মসংস্থান।
সামনের দিকে ঘুরবে রথের
চাকা’।
সে সব একেবারে না-পছন্দ
তার।তাই পরামর্শের ঝাঁপিতে
জল ঢেলে নিজের বুদ্ধিমত্তায়
নেমে পড়লেন কাজে।দেখাতে
শুরু করলেন কিছু নতুনত্ব।
উন্নয়নের জন্য কর সংগ্রহে
ব্যাপক অঙ্কের কর চাপালেন
কাঁচামাল,পেট্রোপণ্যে,জ্বালানীতে,
ঠিক যেন ক্রিকেট বিশ্বকাপের
খেলার মাঠে একজন বিখ্যাত
ব্যাটসম্যান পরপর বাউন্ডারি
ও ওভার-বাউন্ডারি হাঁকিয়ে
সেঞ্চুরি করে নিতে চান খুব
তাড়াতাড়ি’।
বাড়ালেন লিটার প্রতি পেট্রোল,
ও ডিজেলের দাম।সেই রান্নার
জ্বালানী গ্যাসেরও চড়া দাম।
উপভোক্তাদের অবস্থা সামাল
সামাল।
তার ভাবনা জুতসই বটে।কর
আদায় বাড়বে যত,উন্নয়ন রথ
ছুটবে তত দ্রুত।
একি দেখছি তোমাকে?বলবে,
কী ভাবছো বসে?নিজ জ্ঞানের
বাতির শিখা ঠিকঠাক জ্বলছে
কিনা সেকথা ভাবছো নাকি?
ভাবছো বুঝি,‘পণ্য উৎপাদনের
আগেই উৎস-মূলে কাঁচামালে,
পেট্রোপণ্যে এবং জ্বালানী তে
করের ব্যাপক বোঝা চাপালে
বাড়বে তখন উৎপাদন ব্যয়।
তাতে আবার বিক্রয়কর যদি
চাপে সামগ্রীদের বিক্রয়মূল্য
চলে যাবে বহু উপভোক্তার
ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।তখন
সেসব সামগ্রী কিনবে কে?
ক্রেতার অভাবে সেসব পড়ে
থাকবে গুদামে।
তারপর?
বন্ধ হবে যাবে কলকারখানা।
বাড়বে বেকারত্ব।ঘুরবে উল্টো
রথের চাকা।তাইতো?
তোমার এ ভাবনা সঙ্গত কিনা
যাচাই করতে জিজ্ঞেস করেছি
পাখিকে,‘বলো,এখন সে দেশের
উন্নয়নের হাল হকিকত কী?
বললো সে ফিসফিস করেই,
'উন্নয়ন স্তিমিত,উল্টো রথের
সম্ভাবনা'।
এ কথা শুনেই বলেছি তাকে,
রাজাকে বলো,উন্নয়নের স্বার্থে
অর্থনীতিবিদদের পরামর্শগুলি
মেনে দ্রুত তাদের নির্দেশিত
পথে ফিরে যেতে।