যদিও এ কথাটি বলা সমীচীন
নয় তবু এ-প্রসঙ্গে না-বললেই
নয়,‘চুলকানি’-কখনো কখনো
একেবারে বিলাসী রোগ আর
গোঁফের সাথে নাড়ির টানের
মতো তাদেরও নাকি ব্যাপক
সংযোগ।
জানো নিশ্চয়, ‘মুখ কে বিকৃত
করে গোঁফ চুলকাতে বড় সুখ’।
তাইতো সুদীর্ঘকাল যাবত এই
বিলাসী রোগে আক্রান্ত অসংখ্য
মানুষ গিরগিটির মতো বর্ণচোরা
সেজে সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে
সুখ স্বাচ্ছন্দে।
ওরা কর্মব্যস্ত বটে।জানো কি
এদের কর্মকাণ্ড?ধর্ম ও বর্ণের
সুড়সুড়ি দিয়ে মানুষে মানুষে
রেষারেষি সহ ভিন্ন ভাষাভাষী
মানুষ ও জাতিতে ওরা দাঙ্গা
বাঁধিয়ে দিয়ে একেবারে সুউচ্চ
পর্বতশৃঙ্গে গিয়ে বসে তাদের
গোঁফ চুলকায় সরসে।
গালে হাত দিয়ে কী ভাবছো
বসে?জানতে কি ইচ্ছা করছে  
বিলাসী রোগে আক্রান্তদের এই
কাজে লাভ এবং লোকসানের
খতিয়ান আর এই নিয়ে আগে
কে,কবে ভেবেছে?তাহলে বলি
শোনো,আগে কোনও লোকজন
কখনো ভুলেও যায়নি এসবের
ধারে কাছে।
ইদানীং ক’জন নড়েচড়ে বসায়
সাম্প্রতিক খতিয়ানে দেখা গেছে
তাদের লাভ কিংবা লোকসান
কোনও কিছু উল্লেখ না-থাকলেও
তাদের এই কর্মকাণ্ডে সমাজের
কখন কতখানি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
সেসব ইতিহাসের পাতায় ঠিকই
লেখা আছে।
জীবন-সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে,তবুও
জানতে ইচ্ছা করে এক অজানা
রহস্য,‘কে,কবে জন্মের সময় ধর্ম,
বর্ণ,ভাষা ও জাতিকে বগলদাবা
করে নিয়ে এসেছে কিংবা তার
দেহত্যাগের সময় সেসব সাথে
করে নিয়ে গেছে’।
জেনেছি,এ বিশ্বসংসারে সকলের
জীবৎকালে পরিচয়টুকু আবশ্যক
বলে পিতৃদত্ত ধর্ম,বর্ণ,ভাষা এবং
জাতি এসব বিষয় পরিচয় পত্রে
বিলীয়মান রঙ তুলিতেই লিখে
সমাজ নাকি সদ্যোজাত শিশুদের
শরীরে আজীবনের জন্য দিচ্ছে
সেঁটে।
সেই শুরু,জীবনে নানান দুর্গতি
বয়ে বেড়ানোর।তারপর থেকেই
জলাতঙ্কর মতো দশা।কে বলতে
পারে কখন ঘনিয়ে আসবে কার
দুর্দশা?তবু এভাবে কেটে যাচ্ছে
বছরের পর বছর,কিন্তু কখনো
হাজির হচ্ছে না দুর্গতিনাশিনী।
তাই গিরগিটিদের কাজ কারবার
চলছে বেশ রমরমিয়ে।
বলো,এসব বিষয় গ্রহণ বা বর্জন
কিংবা সারাজীবন বয়ে বেরানো
নিয়ে ভাববার বুদ্ধিমত্তা শিশুদের
থাকে কি সেসময়?
অঙ্কুরিত চারা গাছের বৃদ্ধির মতো
সেই শিশুদের বয়স ও বুদ্ধিমত্তার
বিকাশের পরেও সিন্ধু সেঁচে মুক্তা
তুলে আনার মতো সেসব কতটা
একান্ত আবশ্যক,ভাবে ক’জন?
শোনো,বিবর্তন হচ্ছে দ্রুত।মানুষ
এখন সিঁড়িভাঙ্গা অঙ্কের মতোই
ধাপে ধাপে বহু জটিল সমস্যার
সমাধান করতে পেরেছে নয়তো
পৌঁছে গেছে সমাধান সূত্রের খুব
কাছাকাছি।  
জীবন-তরীর কাছি ধরে টানাটানি
করে বুঝেছি পরিচয়ের সুবিধার্থে
জীবনে কেউ তার ধর্ম,বর্ণ,ভাষা
এবং জাতি বয়ে বেরালে কোনও
ক্ষতি নেই বটে,তবে ‘মানবতাবাদী'
মানুষের একমাত্র পরিচয় ভাবলে
মানুষে মানুষে এসব নিয়ে সংঘাত
এড়িয়ে চলতে একেবারে অনাবশ্যক
বিষয়গুলোকে খতিয়ান থেকে মুছে
দেওয়ার হয়তো সময় হয়েছে।