বিশু পাগলের সম্পদ ছিল না
মোটে।লোটাকম্বল যেসব ছিল
সাথে বান এলে সে সব নিয়ে
সে ও ভাসতে লাগলো নদীর
প্রবল স্রোতে।
কী আর বলি,শোনো,বানভাসি
বিশু তবুও ‘আত্মনির্ভর হবো ই’
বলে করতে লাগলো চিৎকার।
তার মুখে এ কথাটি শুনে বেশ
খটকা লাগলো মনে।
তক্ষুণি আনমনে সে কতখানি
আত্মনির্ভর হতে পারে,এ নিয়ে
জলে,স্থলে ও অন্তরীক্ষে সমীক্ষা
চালাতে দূরবীন ও প্রয়োজনীয়
সামগ্রী নিয়ে পরদিন অন্বেষণে
বেরিয়ে পড়বো ভেবেছি।
গোধূলি বেলা,সূর্যটা ও ডুবুডুবু।
তখনি কাকাতুয়া এসে বললো,
'বিশুকে দেখেছি বানের স্রোতে
হাবুডুবু খেয়ে ভেসে যেতে'।
দুর্ভাগ্যই বটে,কী ঘটলো শোনো।
তখনও গলা উচিয়ে বললো সে,
‘কাকাতুয়া!আত্মনির্ভর হবো ই,
এ কথা সত্য বলছি কিনা,পরে
মিলিয়ে নিও’।
তুমি কী ভাবছো চেয়ারে বসে?
শোনো,তার এই আত্মপ্রত্যয় দেখে
বুকভরা প্রশ্বাস টুকু নিয়ে ভেবেছি,
‘বিশু,সুপুরুষ বটে’!
সে রাতে মনে ঘোর সংশয় নিয়ে
ক্লান্ত শরীরে বিছানায় শুয়ে সেসব
ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে
পড়েছি,কে আর হিসাব রাখে?
নিশুতি রাত।তুমি তো জানো,সেটি
স্বপ্ন-চারিণীর বিচরণের যথার্থ সময়।
তোমাকে বলবো কী সে সময় স্বপনে
দেখেছি,সে এসে আমার শিয়রে বসে
বলছে,‘এই ব্যাপারে বিব্রত হয়ো না
মোটে।সংশয় ঘোচাতে যেতে হবে না
দূরে অন্য কোথাও।নিজের ঘরে বসে
আরাধ্য দেবতার হও শরণাপন্ন’।সেই
দেবতা তুষ্ট হলে তাঁর কাছ থেকেই
সবিস্তারে জেনে নিয়ো বিশুর আবার
আত্মনির্ভর হওয়ার সম্ভাবনা আছে
কতখানি’?