দিনের শেষ ট্রেন চলে গেছে
বহু আগেই।বলি তোমাকে,
তাকে ধরতে অপারগ যারা,
তারা গভীর রাতে প্লাটফর্মে
ঠায় বসে গুনছে অপেক্ষার
প্রহর।
তাদের অনেকে রোজগারের
অভাবে দিনভর অনাহারে
কিংবা অর্ধাহারে কাটিয়েছে।
তারপর স্টেশনে ঘুরে ফিরে
দেখছে বেঁচে থাকার জন্য
বিশুদ্ধ প্রাণবায়ু ও জলের
অভাব।
আলোর ব্যবস্থা?সে আর
বলতে!বৈদ্যুতিক সিরিজ
লাইন হওয়ার দশা প্রায়।
নির্দায় জিরো পাওয়ারের
মতো কিছু আলো জ্বলছে
মাথার উপর।
ভেবে দেখো,বেকার যুবক
যুবতীদের এ বেহাল দশা।
প্রতিদিন বন্ধ হচ্ছে অজস্র
কলকারখানা।নেই নতুন
কোনো কলকারখানা গড়ে
ওঠার সম্ভাবনা।পাশাপাশি
অফিস আদালতে শূন্যপদে
নিয়োগ বন্ধ।
অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের কল্যাণে
বেকারদের কর্মসংস্থানের
সুযোগ হচ্ছে হাতছাড়া।
ভাবো,এ ভাবে দীর্ঘদিন
শিরদাঁড়া কে শক্ত রাখা
কতটা কঠিন!তাই জীবন
সংগ্রামে ব্যর্থতার দায়কে
কাঁধে নিয়ে অনেকে হয়ে
পড়ছে নিয়তি নির্ভর।মনে
রেখো,ধ্রুবতারা সব লক্ষ্য
রাখছে অষ্টপ্রহর।
তবে এ কথাটি সত্যি,যখনি
দেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসে
সেসময় নিয়ন বাতির মতো
চারিদিক  প্রজ্বলিত করতে    
যেন মহাশূন্য থেকে ভেসে
আসে নেতানেত্রীদের বহু
প্রতিশ্রুতি।
পরিবর্তনশীল সমাজের এই
পর্যায়ে অধিকাংশ মানুষকে
জীবনে চলার পথে এ সময়
পা ফেলতে হচ্ছে যেন মূল
স্টেশনে।সেই স্টেশনের মূল
প্রবেশ পথে স্টেশনের নাম
‘বেকার’লেখা আছে।এটাই
বেকার দের যেন সাময়িক
ঠিকানা।
দেখো,বছর বছর মানুষ
গড়ার অসংখ্য খ্যাতনামা
স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে বেরিয়ে আসছে যেন
কামার শালার থেকে উৎপন্ন
খাঁটি ইস্পাতের পাত কিবা
যন্ত্রাংশের মতো অগণিত
যুবক যুবতী,যাদের দিয়ে
সমাজ গড়ার যন্ত্র গুলোকে
তৈরি করা নেওয়া যেতো
অনায়াসে।
বলি,শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে
বসে কর্তা ব্যক্তিরা ভুলছে
তাদের সেই দায়বদ্ধতা।
বিড়ম্বনা কাকে বলে!তারি
সীমানা খুঁজতে গিয়ে দেখি,
জীবনে চলার পথে তরুণ
তরুণীরা এসময় সীমানার
কাঁটাতারের বেড়ার সামনে
এসে দাঁড়িয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে  
বেকারত্বের তকমা ঝেড়ে
ফেলে পলাশ ফুলের মতন
রক্ত লাল ভোরের সূর্যকে
করতে আলিঙ্গন।
বলতে পারো,ভরা জোয়ারের
মতো তারুণ্যের এই শক্তিকে
ঠেকিয়ে রাখবে এমন সাধ্য
কার?আর জোড়াতালি দিয়ে
তাকে ঠেকিয়েও রাখা যায়
ক’দিন?ওই দেখো,মনে হয়
দিনপঞ্জির পাতা উল্টানোর
সময় হলো।